অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


ভোলার সাংবাদিক জগতের বটবৃক্ষের বিদায়


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৫শে নভেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৫:০০

remove_red_eye

৮৬

এম. ছিদ্দিকুল্লাহ : সাংবাদিকতা জীবনে ৬০ বছরের ইতি টেনে ৮৫ বছর বয়সে পরপারে পাড়ি জমান ভোলার সাংবাদিকতার বটবৃক্ষ নামে খ্যাত এম. হাবিবুর রহমান। উনিশ শতকের চার দশকে গাঙেয় জনপদ ভোলার মহকুমা শহরে প্রাণ কেন্দ্র চরনোয়াবাদ হোমিও কলেজ রোড এলাকার সিকদার বাড়ীর সেকান্দর আলী সিকদার ও সায়েরা খাতুনের ঔরসে জন্মগ্রহণ করেন গুণি এই সাংবাদিক।

১৯৬৭ সালে তৎকালীন স্বনামধণ্য “দৈনিক পূর্ব দেশ” পত্রিকায় নিয়োগ পাওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় সাংবাদিকতার জীবন। পরে ইংরেজী বর্ষের ১৯৭০ সালে উপকূলের আঘাত হানা ভয়াল ১২ নভেম্বরের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ভোলাবাসীর দুর্দশার করুন চিত্র তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশ করেন এই কলম যোদ্ধা। “কাঁদো বাঙালি কাঁদো, বাংলার গাছে গাছে ঝুলছে লাশ” - শিরনাম সংবাদে দেশ বিদেশে ঝড় তোলেন। এই সংবাদ পড়ে দুর্দশা গ্রস্থ উপকূলীয় এ জনপদের অধিবাসীদের উদ্ধার ও সাহায্যে এগিয়ে আসে দেশি-বিদেশি সংস্থা। সেই থেকে সুনাম-সুখ্যাতি ছড়িয়ে পরে এম. হাবিবুর রহমানের। তখন থেকে মহান এই কলম সৈনিক  “হাবিব রিপোর্টার” নামে পরিচিত পায়। পরে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভোলার ওয়াপদা কলোনিতে পাক বাহিনীর গণ হত্যার চিত্র তুলে ধরে “মরণপুরী ভোলা ওয়াপদা কলোনী” শিরোনামের সংবাদ প্রকাশ করে সংবাদিকতার ইতিহাসে আর এক উচ্চতায় পৌঁছেন এবং মহান মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সীকৃতি পান। পরে একের পর এক দেশের বরেণ্য সংবাদপত্র ও বাংলাদেশ বেতারে সংবাদিক হিসেবে সুনামের সাথে কাজ করে ইতিহাস গড়ে সুনাম কুড়ান। সাংবাদিকতা পেশায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি রাষ্ট্রপতি পদক ও বসুন্ধরা এ্যওয়ার্ডসহ বিভিন্ন পদক প্রাপ্ত হন। 
 ছোট বলা থেকে তিনি একজন স্বনামধন্য ফুটবলার ও মেধাবী শিক্ষাথী ছিলেন। শিক্ষা জীবনের পাশাপাশি খেলাধুলা ছিল তার অতি প্রিয় শখ। দেশের বিভিন্ন এলাকায় খেলাধুলা করেও অনেক পদক লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে সুনামের সাথে এম. এ. পাশ করেন। পরে অনউন্নত এ জনপদের মানুষের পাশে দাঁড়াতে  সাংবাদিকতায় ও সামাজিক কাজে আত্মনিয়োগ করেন। পরে ১৯৭২ সালে তিনি ভোলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে সাংবাদিকদের নেতৃত্ব দেয়া শুরু করেন। তিনি  ১৯৭২ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ভোলা প্রেসক্লাবের ৮ বার সম্পাদক ৯ বার সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়ে সুনামের সাথে ক্লাব পরিচালনা করেন। এরমধ্যে ১৯৯৪  সালে ভোলার মানুষের চিত্র তুলে ধরতে নিজের সম্পাদনায় “ দৈনিক বাংলার কন্ঠ পত্রিকা প্রকাশ করেন। তখন থেকে সাংবাদিকতার বাতিঘর হিসেবে পরিচিতি লাভ করে ” দৈনিক বাংলার কন্ঠ” হাউজ। তার হাত ধরে দ্বীপ জেলা ভোলায় অনেক গুণি সাংবাদিকের জন্ম হয়েছে। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সাংবাদিকদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, সামাজিক সংস্থা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ গভীর শোক প্রকাশ করেন।


ভোলা সদর ভোলা জেলা