অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


হাবিবুর রহমানের চলে যাওয়া সাংবাদিকতার এক অধ্যায়ের সমাপ্তি


মো: মোতাছিম বিল্লাহ

প্রকাশিত: ২৫শে নভেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৪:৫৬

remove_red_eye

৭৪

মো: মোতাছিম বিল্লাহ : ভোলাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সাংবাদিকতার জগতে তিনি “হাবিব রিপোর্টার” নামে পরিচিত ছিলেন। টানা ষাট বছরের সাংবাদিকতা জীবনের সমাপ্তি টেনে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। রেখে গেছেন হাজারো ভক্ত অনুরক্ত। হাবিব রিপোর্টার সংবাদ, সংবাদপত্র ও সাংবাদিক এই তিন জগতের ছিলেন বিশাল এক বাতিঘর। তার পাদপ্রদীপের তলে অসংখ্য সংবাদকর্মী আলোকিত হয়েছেন। তার অনুগামীরা এখন আলোকিত করে চলেছেন দক্ষিণ বাংলার মিডিয়া জগত। তার এই চলে যাওয়া আমাদেরকে করেছে অভিভাবকহীন। আমরা তার চলে যাওয়ায় শোকাবিভূত।
গেল শতাব্দীর যাটের দশকের শেষ দিকে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় যোগদানের মধ্য দিয়ে হাবিবুর রহমানের সংবাদপত্র জগতে অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। পূর্বদেশ পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের মধ্য দিয়ে সত্তরের ভয়াল ১২ নভেম্বরের জলোচ্ছ্বাসের সংবাদ পেয়েছিল বিশ্ববাসী। জানতে পেরেছিল ভয়াল গোর্কির ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র। পূর্বদেশ পত্রিকা ছেপেছিল “ কাঁদো বাঙালি কাঁদো, ভোলার গাছে গাছে ঝুলছে লাশ”। যা আজো বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের সংগ্রহ সম্ভারে সংরক্ষিত আছে।

সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রায়সই এম. হাবিবুর রহমান বলতেন, ১২ নভেম্বর রাতভর ঝড়জলোচ্ছ্বাসের পরদিন সকালে তিনি গিয়েছেন ভোলার সদর উপজেলার শিবপুর এলাকায়। যেতে যেতে দেখেন পথের দুই পাশে লাশ আর লাশ। পুকুরে, খালে বিলে ভাসছে লাশ। নারী শিশুর সংখ্যাই বেশি। গাছে গাছে ঝুলছে লাশ। তিনি দেখেন গাছে ঝুলছে একটি লাশ । আর নিচ থেকে একটি কুকুর লাফিয়ে লাশটি খাওয়ার চেষ্টা করছে।

হাবিবুর রহমান স্মৃতিচারণ করে বলেছিলেন, বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছিল উপকূলীয় দ্বীপ ভোলা। দিনভর তিনি সেসব ছবি তুলে সংবাদ লিখে তার এক আত্মীয়র মারফত জেলেদের মাছের নৌকায় ঢাকায় পাঠিয়েছিলেন। চারদিন পর ছবিসহ সেই সংবাদ দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় ছাপা হলে দেশব্যাপী সাড়া পড়ে। সারা বিশ্ব জানতে পারে উপকূলীয় জেলাগুলোর উপর দিয়ে কী হয়েছিল সেদিন। 
প্রবীন এই সাংবাদিকের হাত ধরে ভোলার এমনকি দেশের অনেক প্রথিতজশা সাংবাদিকের জন্ম হয়েছে। তার সংস্পর্শে এসে অনেক তরুন যুবক জীবনের পথ খুঁজে পেয়েছেন। সাংবাদিকতা জগতে এই বটবৃক্ষের চলে যাওয়ার শূন্যতা জেলার সকল মতের পথের বিশ্বাসের সাংবাদিকদের কাঁদিয়েছে। সাংবাদিকতা জগতকের এই অগ্রজ পথিকৃতের রেখে যাওয়া আদর্শ দীর্ঘদিন ভোলার সাংবাদিকদের মাঝে বিরাজ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। 


ভোলা সদর ভোলা জেলা মো: মোতাছিম বিল্লাহ