অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


মোবাইলে অ্যাপের মাধ্যমে পরিচয় আবারও প্রেমের টানে চীন যুবক ভোলায়


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭ই নভেম্বর ২০২৫ রাত ০৮:৩৫

remove_red_eye

১৩৭

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক : মোবাইল অ্যাপ এর মাধ্যমে পরিচিয়ের সূত্র ধরে দ্বীপজেলা ভোলায় আবারও প্রেমের টানে সুদূর চীন থেকে ছুটে এসেছেন লু চাঁওং (৩৫) নামের এক চীনা যুবক। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালে ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নে ৩নম্বর ওয়ার্ডের স্লুইজগেট এলাকায় মো. আমানউল্লাহর মেয়ে ফেরদৌস বেগমের (১৯) এর খোঁজে তাদের বাড়িতে আসেন। এখবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক কৌতুলহ দেখা দেয়। 

ফেরদৌস বেগম জানায়, এক বছর আগে কৌতুহল বসত ওয়ার্ল্ডটক অ্যাপ ডাউনলোড করেন তিনি। পরে সেখান থেকে বাজে মেসেজের কারনে সেটি ডিলেট করার সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক ওই দিনই চীনা যুবক লু চাঁওং তাকে মেসেজ দেন। প্রথম লু চাঁওং এর মেসেজ তিনি গুরুত্ব না দিয়ে এড়িয়ে যান। এরপরও চীনা যুবক তাকে একের পর এক মেসেজ দিয়ে যাচ্ছে। এর পর মেসেজের রিপ্লাই দিলে তাদের মধ্যে দুই তিন দিন ধরে মেসেজ আদান প্রদানের পর দেখেন তার মনমানসিকতা ভালো। এক পর্যায়ে লু চাঁওং তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে সে প্রথমে বিয়েতে রাজি হননি। তাকে জানিয়ে দিয়েছেন পরিবার এতো দূরে বিয়েতে রাজি হবে না। পরে চীনা যুবক তাকে অভয় দিয়ে বলেন, ‘তুমি ভয় পেয়ো না, আমি তোমাকে নিরাপত্তা দিবো। চায়না খুব ভালো, এখানে মেয়েদের গুরুত্ব ও অধিকার বেশী। এর পর তাদের দুই জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘ এক বছর প্রেমের সম্পর্কে গভীরতা বাড়লে লু চাঁওং সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশে আসার। অবশেষে গত ১৫ নবেম্বর তারিখ তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে, ফেরদৌস নিজে ও তার মা মরিয়ম উপস্থিত থেকে তাকে রিসিভ করে ভোলায় নিয়ে আসেন।

স্থানীয়রা জানান, দুজনের ভাষা ভিন্ন হওয়ায় মাঝে মাঝে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। চীনা ভাষা জানেন না ফেরদৌস বেগম আর বাংলা বোঝেন না লু চাঁওং এ কারণে তাদের দুই জনের মধ্যে যোগাযোগে কিছুটা অসুবিধা দেখা দেয়। তবে বিষয়টি তারা মোবাইলের গুগল ট্রান্সলেট ব্যবহার করে সামলে নিচ্ছেন। 

ফেরদৌস বেগমের মা মরিয়ম বেগম জানান, প্রথমে মেয়ের কাছ থেকে জেনে আমরা ছেলে ও তার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বলেছি আমার মেয়ের বিদেশে কেউ নেই। কোন অসুবিদা হলে সেখানে কে দেখবে। তখন তারা বলেছেন আপনারা টেনশন নেই। আপনাদের মেয়েকে আমার কিছু করবো না। তাই পরে আমি রাজি হয়েছি। এখন ছেলে আমাদের বাড়িতে আসছে। 
চীনা যুবক মুসলিম না হওয়ায় ফেরদৌসের পরিবার বিয়েতে রাজি হলেও আইনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে তারা স্থানীয় আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করছেন, এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন করবেন বলে জানান ফেরদৌস বেগমের মা মরিয়ম। 

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাহাদাৎ মো. হাচানাইন পারভেজ সাংবাদিকদের জানান, একজন চীনা যুবক ভোলায় এসেছে এটি আমাদের নলজে আছে। সে বৈধভাবে বাংলাদেশে আসছে। তারপরও আমারা তাকে নজরদারিতে রেখেছি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত মে মাসে ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রপ্রসাদ গ্রামের ইলিয়াস হাওলাদারের মেয়ে নাবিয়া আক্তারের বাড়িতে আসেন চীনা যুবক ইরিছা চং। পরে  ১০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে সম্পন্ন করে নাবিয়াকে চীনে নিয়ে যায় ওই চীনা যুবক।  


ভোলা সদর মোঃ ইয়ামিন