বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত: ৯ই নভেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৪:১১
৬৬
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) তিনটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিবন্ধনের আবেদন তালিকায় আরও বেশ কিছু দল ছিল। তবে সব শর্ত পূরণ করতে না পারায় সেসব দলকে আপাতত বিবেচনায় নেয়নি ইসি। বাদ পড়া দলগুলোর মধ্যে রয়েছে আম জনতার দলও। তাদের দাবি, সব শর্ত পূরণের পরও ইসি নিবন্ধন দেয়নি। এজন্য ইসির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির সদস্য সচিব তারেক রহমান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন সময় আলোচনায় আসা এবং জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখায় তারেক রহমানের এই অনশন দৃষ্টি কেড়েছে গণমাধ্যমের। তার পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপিসহ কিছু দল। বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও অনেকে তার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। প্রায় পাঁচ দিনে তিনি ইসির সামনে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে তার এই কর্মসূচি।
এই অবস্থায় নির্বাচন কমিশন আম জনতার দলকে নিবন্ধন ইস্যুতে কী ভাবছে সেই খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছে ঢাকা মেইল। তবে সূত্রে জানা গেছে, এই অনশনে মন গলেনি ইসির। সাংবিধানিক সংস্থাটি বলছে, আমরা আমাদের আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়ে দলগুলোকে জানিয়ে দিয়েছি, কী কারণে তাদের নিবন্ধন আবেদন বাতিল করা হয়েছে। এখন কেউ নিবন্ধন পেতে চাইলে আদালত থেকে রায় নিয়ে আসতে হবে। আদালতের আদেশ পেলে কমিশনের কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না, আমরা আদালতের নির্দেশ মানতে বাধ্য থাকব।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা কারণ উল্লেখ করে আম জনতার দলের নিবন্ধন আবেদন বাতিল করেছি। আমাদের কর্মকর্তারা দুইবার করে তাদের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম তদন্ত করেছেন, কিন্তু তারা নিবন্ধনের শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি কমিশন বৈঠকে শর্ত কিছুটা শিথিল করা হলেও তারা উত্তীর্ণ হতে পারেনি। এজন্যই আম জনতার দলের নিবন্ধন আবেদন বাতিল করা হয়েছে।’
ওই কমিশনার আরও বলেন, ‘মিডিয়াতে দেখছি—অনেকে বলছেন, আম জনতার দল নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য ছিল, কিন্তু আমরা দিইনি। তাহলে আমি বলতে চাই, আমরা যে কারণ উল্লেখ করে নিবন্ধন আবেদন বাতিলের চিঠি দিয়েছি, তা নিয়ে আদালতে যাক, আমাদের ভুল প্রমাণ করুক। আমরা আদালতের রায় মাথা পেতে নেব। ভবনের সামনে অনশন করে কী লাভ হচ্ছে ওনার?’
এর আগে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘আগে নিবন্ধন না দেওয়ার কারণ লিখিতভাবে জানানো হতো না। এতে অনেক দল আদালতের মাধ্যমে সহজেই নিবন্ধন আদায় করত। এখন থেকে কারণ উল্লেখ করে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। ফলে আদালতও যাচাই না করে নিবন্ধন দেওয়ার সুযোগ পাবে না।’
ইসির আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক-তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হয়। এছাড়া কোনো দলের কেউ আগে সংসদ সদস্য থাকলে বা আগের নির্বাচনে পাঁচ শতাংশ ভোট পেলেও সেটি নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হয়। এই প্রধান শর্তগুলো ছাড়াও আরও কয়েকটি নিয়মকানুন মেনে আবেদন করতে হয়।
তারেক রহমানের আম জনতার দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার কারণ জানিয়ে গত বুধবার (৫ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন একটি চিঠি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ৯০খ (১)(ক)(ই)-এর শর্ত যথাযথভাবে মানা হয়নি। দুই-তৃতীয়াংশ জেলায় কার্যকর জেলা দফতরের ভাড়ার রসিদ, চুক্তিপত্র বা মালিকানা দলিল এবং দলের ব্যাংক হিসাবের তথ্য জমা না দেওয়াসহ কয়েকটি ত্রুটি উল্লেখ করা হয়েছে।
৯০খ (১)(ক) অনুযায়ী, নিবন্ধনের জন্য দলকে অন্তত একটি আসনে বিজয় বা মোট ভোটের পাঁচ শতাংশ পাওয়া অথবা কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ এক-তৃতীয়াংশ জেলায় ও ১০০ উপজেলা/থানায় সক্রিয় অফিস এবং প্রতিটিতে অন্তত ২০০ ভোটারের সদস্যপদ নিশ্চিত করতে হয়।
এছাড়া আম জনতার দলের নিবন্ধন আবেদন পর্যালোচনায় ইসি বেশ কিছু ঘাটতি চিহ্নিত করেছে। মাঠ পর্যায়ের যাচাইয়ে দেখা গেছে, দলটি দুই-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর জেলা দফতরের প্রমাণপত্র দিতে পারেনি। ২২ জেলার মধ্যে মাত্র ২০টিতে কার্যকর অফিসের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া ১০০টি উপজেলা বা থানার মধ্যে মাত্র ৩৩টিতে অফিস ও অন্তত ২০০ ভোটার সদস্যের তালিকা দাখিল করা হয়েছে। দলের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাব ও তহবিলের উৎস সম্পর্কেও কোনো তথ্য জমা দেওয়া হয়নি।
গঠনতন্ত্র ও আনুষ্ঠানিক নথিতেও বেশ কিছু অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। গঠনতন্ত্রে কোনো পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্যপদ সংরক্ষণের বিধান রাখা হয়নি এবং শিক্ষক, ছাত্র বা শ্রমিক শ্রেণির অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠনের বিধানও অনুপস্থিত। এছাড়া নিবন্ধনের আবেদসংক্রান্ত ক্ষমতাপত্র এবং দলের প্রধানের প্রত্যয়নপত্র—যাতে সংবিধানবিরোধী কার্যক্রম বা দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির সম্পৃক্ততা নেই—সেটিও দাখিল করা হয়নি।
অনশনরত তারেক রহমানের পাশে দাঁড়াচ্ছেন অনেকেই। এর মধ্যে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সশরীরে উপস্থিত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেছেন।
রিজভী বলেন, ‘আম জনতার দল ইতোমধ্যে আবেদন করেছিল, সে আবেদনটি গ্রাহ্য করা হয়নি। আমি দেখেছি, আরও গুরুত্বহীন কিছু সংগঠনও নিবন্ধন পেয়েছে। কিন্তু তারেকের দল পেল না কেন, তা আমি বুঝতে পারলাম না। আম জনতার দলের সদস্য সচিব তারেক দেশের স্বার্থে, আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে কথা বলেছেন। সে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছে তার বৈধতার জন্য। আম জনতার দলের অবশ্যই নিবন্ধন প্রাপ্য।’
গত বুধবার (৫ নভেম্বর) গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁনও সশরীরে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানের আন্দোলন সম্পূর্ণ যৌক্তিক এবং তার দলকে অবশ্যই নিবন্ধন দিতে হবে।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন—যে দলগুলো রাজপথে নেই, অফিস নেই, ভুয়া কমিটি দেখিয়ে নিবন্ধন পাচ্ছে, সেই দলগুলোর চেয়ে রাজপথে সক্রিয় আম জনতার দল কেন বঞ্চিত হবে?
ওইদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ. এম. এম. নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেন রাশেদ খাঁন। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি জানান, কমিশন পরবর্তী বৈঠকে আম জনতার দলের নিবন্ধন বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনিস আলমগীর বলেন, ‘যারা জনগণের সঙ্গে আছে তাদের নিবন্ধন না দেওয়া হতাশাজনক। রফিকুল আমীনের মতো বিতর্কিত ব্যক্তিও যদি দল নিবন্ধন পান, তাহলে তারেকের নিবেদিত প্রাণ দলের জন্য কেন নয়।’
গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন তিনটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। সেদিন ইসি সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা তিনটি দলের সঠিকতা পেয়েছি এবং তারা হলো—বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই তিন দলের বিষয়ে কমিশন মনে করেছে, তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য। তাদের বিষয়ে আগামীকাল পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে অভিমতের জন্য এবং ১২ তারিখের মধ্যে অভিমত জমা নেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবি পার্টি, নুরুল হক নূরের গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), মাহমুদুর রহমানের নাগরিক ঐক্য ও গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পর আদালতের আদেশে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বিএমজেপি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি) নিবন্ধন পেয়েছে। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে এ বছর নিবন্ধন পুনর্বহাল হয় জামায়াতের, আর স্থগিত হয় আওয়ামী লীগের। সবশেষ আদালতের আদেশে নিবন্ধন পুনর্বহাল হয়েছে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির—জাগপা।
বর্তমানে ৫৩টি দলের নিবন্ধন রয়েছে। আর স্থগিত আছে আওয়ামী লীগের। বাতিল রয়েছে ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ও পিডিপির নিবন্ধন।
মানবিকতার আলোকবর্তিকা : ভোলার প্রিয় জেলা প্রশাসক আজাদ জাহানের বিদায়বেলা
ভোলার মানবিক ডিসি মো. আজাদ জাহান অন্যত্র যোগদান, রেখে গেলেন সেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত
মনপুরায় যুবদল-ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশ
জুলাই সনদ ও গণভোটের আগে নির্বাচন নয় : মনপুরায় প্রফেসর কামাল উদ্দিন
মনপুরায় ধানক্ষেত থেকে হরিণ শাবক উদ্ধার
বরিশালে রেইজ প্রকল্পের দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন নানা পন্য নিয়ে উদ্যোক্তাদের মেলা
ফেব্রুয়ারিতে উৎসবমুখর ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতির উদ্দেশে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের
জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে : প্রধান উপদেষ্টা
ভোলায় বিষের বোতল নিয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকা
ভোলায় পাঁচ সন্তানের জননীকে গলা কেটে হত্যা
ভোলার ৪৩ এলাকা রেড জোন চিহ্নিত: আসছে লকডাউনের ঘোষনা
উৎসবের ঋতু হেমন্ত কাল
ভোলায় বাবা-মেয়ে করোনায় আক্রান্ত, ৪৫ বাড়ি লকডাউন
ভোলায় এবার কলেজ ছাত্র হত্যা, মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার
ভোলায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন করোনা রোগী: এলাকায় আতংক
ঢাকা-ভোলা নৌ-রুটের দিবা সার্ভিসে যুক্ত হলো এমভি দোয়েল পাখি-১র
ভোলায় কুপিয়ে হত্যা করে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই, আটক এক
ভোলার চরফ্যাশনে করোনা উপর্সগ নিয়ে এক নারীর মৃত্যু