অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


নবজাতক শিশুকে নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে ফাবিহা


চরফ্যাসন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১লা জুলাই ২০২৫ রাত ০৮:১৬

remove_red_eye

১৭১

চরফ্যাশন প্রতিনিধি: নবজাতক কন্যাশিশুকে কোলে নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে এসেছে ফাবিহা। আজ মঙ্গলবার (১জুলাই) শিশুটিকে কোলে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসেন তিনি। এসময় ওই পরিক্ষার্থীর মা  খাদিজা বেগম পরীক্ষাকক্ষে মেয়ের পরীক্ষা চলাকালে নাতনিকে কোলে নিয়ে একটি অপেক্ষা করেন। চরফ্যাশন উপজেলার ফাতেমা মতিন মহাবিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে একটি কক্ষে এক নারীকে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশু সন্তান কোলে নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। জানতে চাইলে তিনি জানান, তার মেয়ে ফাবিহা খানমের সদ্য ভূমিষ্ঠ কন্যা সন্তানকে কিছুক্ষণ পর পর ফিডিং করানোর প্রয়োজনেই দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। আর আরেকটি পরীক্ষা কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছে নবজাতকের মা।
জানা গেছে, ফাবিহা খানম নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী উপজেলার আবুবকরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো.মাকসুদ খানের মেয়ে। দুই বছর আগে একই উপজেলার জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। পরীক্ষা শুরুর ২ দিন আগে অর্থাৎ গত মঙ্গলবার কন্যা সন্তানের মা হয় ফাবিহা। এরপর ২ দিনের মাথায় গত বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন ফাবিহা। তিনি চরফ্যাশন সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী।
 
পরীক্ষার্থীর মা ও সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুটির নানি খাজিদা বেগম বলেন, দুই বছর আগে আমার মেয়ের বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী এলাকার জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে। সন্তানসম্ভবা থাকা অবস্থায় এইচএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করেছে।আমার মেয়ে গর্ভকালেও পড়াশোনা চালিয়ে গেছে। পরীক্ষা শুরুর ঠিক ২ দিন আগে, গত মঙ্গলবার,  কন্যা সন্তান জন্ম হয়। নবজাতককে নিয়েই  এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন ফাবিহা। ওর ইচ্ছা ছিল,পরীক্ষাটা দিতেই হবে। আমরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় থাকলেও ওর সাহস আর ইচ্ছার কাছে হার মেনেছি। তাই আজ নাতনিকে নিয়ে এখানে এসেছি।
 
পরীক্ষা কেন্দ্র কর্মকর্তা প্রফেসর মোহাম্মদ উল্লাহ স্বপন জানান, সারা দেশে একযোগে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রথম দিন পরীক্ষা চলাকালে হলের সামনে বাহিরে এক নারীকে শিশু নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জানতে পারি, নবজাতক শিশুটি একজন পরীক্ষার্থীর। পরে পরিক্ষা কর্তৃপক্ষ একটি ফিডিং রুমের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। অল্প বয়সে সন্তানের মা হলেও পড়ালেখার প্রতি তার আগ্রহে আমাদের অনেক ভালো লেগেছে। ফাবিহার পড়াশোনার প্রতি এমন অটল আগ্রহ আগামী প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণা।