অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৪ই পৌষ ১৪৩২


ভোলায় ঘরে গ্যাস সংযোগ ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপনসহ ৫ দফা দাবীতে মানববন্ধন বিক্ষোভ সড়ক অবরোধ


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২শে এপ্রিল ২০২৫ রাত ০৮:৫৪

remove_red_eye

৩৩১

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক : উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলার মানুষের প্রাণের দাবী ভোলায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণ, ভোলায় গ্যসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থপন, ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দেয়া, এলপিজি গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং কোম্পানীর সাথে চুক্তি বাতিল,  ভোলা- বরিশাল সেতু নির্মাণের পাঁচদফা দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে শহীদের পরিবার ও আহত যোদ্ধা, ভোলা জেলা এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এই আন্দোলনে ছাত্র জনতা ও স্থানীয় সাধারন মানুষ  অংশ গ্রহণ করেন।
আজ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে বিক্ষুব্ধ ছাত্র- জনতা ভোলা খেয়াঘাট রোডের সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানীর অফিসের সামনে অবস্থান নেন ও মানবন্ধন করেছে। এ সময় বক্তব্য বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক বশির আহমদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভোলা জেলা উত্তর শাখার সাধারণ সম্পাদক মো তরিকুল ইসলাম,  মুসলিম ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ভোলার আলতাজের রহমান ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো ওবায়েদুর রহমান,  প্রবীণ হিতৈষী সংঘের নেতা মুসলিম হাই স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো আবু তাহের, সহকারী অধ্যাপক মো আনোয়ার হোসেন, ভোলা জেলা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সাধারণ সম্পাদক মো মহিউদ্দিন,  ডিমান্ডনোটের টাকা জমা দিয়েও টাকা পাননি এমন গ্রাহক মো শাহে আলম, মো শাহনেওয়াজ মনির,  আগামীর ভোলার মূখ্য সংগঠক মীর মোশাররফ,  ব-দ্বীপ ছাত্র কল্যাণ সংসদের আহবায়ক রাহিম ইসলাম প্রমুখ।  


এ সময় বক্তারা বলেন, ভোলার ঘরে ঘরে গ্যাস প্রদান, ‘ইন্ট্রাকোর সঙ্গে ফ্যাসিস্ট সরকারের  অবৈধ চুক্তি বাতিল এবং ভোলার গ্যাস দিয়ে ভোলায় কলকারখানা গড়ার সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে ভোলা থেকে কোনো গ্যাস যাবে না। দাবি না মানা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
ভোলা বাংলাদেশ থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন একটি জেলা। ভোলায় প্রায় ২২লাখ লোকের বাস। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো ভোলায় কোনো মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেই। যার কারণে মানসম্পন্ন চিকিৎসা দূরে থাক, চিকিৎসা থেকেই  তাঁরা বঞ্চিত। ছোটখাটো কোনো দুর্ঘটনা হলেও ভোলায় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। অনেকেই ঢাকায় যাওয়ার পথে মারা যান। আমরা অবিলম্বে ভোলায় একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চাই। নইলে আমাদের গ্যাস নিতে দেব না। ভোলার ঘরে ঘরে গ্যাস প্রদান, ‘ইন্ট্রাকোর সঙ্গে ফ্যাসিস্ট সরকারের  অবৈধ চুক্তি বাতিল এবং ভোলার গ্যাস দিয়ে ভোলায় কলকারখানা গড়ার সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে ভোলা থেকে কোনো গ্যাস যাবে না। দাবি না মানা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। তারা আরো বলেন, ভোলার মতো গুরুত্বপূর্ণ জেলা বাংলাদেশে আর আছে কিনা, জানা নেই। এখানে ফসল, মাছ-মাংস ও জ্বালানী সবই উদ্বৃত্ত।  জীববৈচিত্র্য ও  প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা একটি জেলা। কিন্তু ভোলাবাসি লেখাপড়া ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত। ভোলার সঙ্গে বাংলাদেশের মুল ভূ-খন্ডের কোনো সড়ক যোগাযোগ নেই। আমাদের যাতায়াতের একমাত্র বাহন হলো লঞ্চ। চরফ্যাশন বেতুয়া থেকে সর্বশেষ লঞ্চটি ছাড়ে বিকেল ৫টায়। আর সদর উপজেলার ইলিশা থেকে ছাড়ে রাত ১০টায়। এরপর জরুরী হলেও ভোলা থেকে কেউ বের হতে পারে না। এমনকি ভোলায় কোনো নিকটআত্মীয় মারা গেলে, সময়মতো আসতে না পারলে শেষ দেখাও হয়না। তাই ভোলা-বরিশাল সেতু চাই।


এসব দাবির পক্ষে মানববন্ধন শেষে ভোলা খেয়াঘাট সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করলে ভোলা খেয়াঘাট সড়কে যান চলাচল বন্ধ হযে যায়। পরে দাবির বিষয়ে জ্বালানি উপদেস্টার সাথে আগামী ২৮ এপ্রিল বৈঠকের আশ্বাসে দুপুরে কর্মসূচি সাময়িক বন্ধ রাখেন আন্দোলনকারীরা। ‘আগামীর ভোলা’ সংগঠনের মূখ্য সংগঠক মীর মোশারেফ অমি জানান, অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে ঢাকা থেকে খবর আসে আগামী ২৮ এপ্রিল জ¦ালানী উপদেষ্টা বিষয়টি নিয়ে আমাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। তার এই আশ্বাসে আপাদত আমরা কোনো কর্মসূচি দিচ্ছি না। বৈঠক শেষে এ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।


উল্লেখ্য, গত শুক্রবার থেকে ভোলার ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগসহ এ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও স্থানীয় ছাত্র-জনতা। তারা ভোলা থেকে গাড়ীতে করে গ্যাস নেওয়ার সময় ইন্ট্রাকো কম্পানির ৮টি গ্যাসভর্তি গাড়ী আটকে দেয়। পরে এ দাবিতে রবিবার বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।