অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বুধবার, ৮ই জানুয়ারী ২০২৫ | ২৪শে পৌষ ১৪৩১


লালমোহনে ২১৫ কোটি টাকার ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা


লালমোহন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৫ই জানুয়ারী ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:১১

remove_red_eye

২১

আকবর জুয়েল, লালমোহন : ভোলার লালমোহন উপজেলায় এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে এই উপজেলার কৃষকেরা কিছুটা বিপাকে পড়লেও যথাসময়ে তা কাটিয়ে উঠে আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন তারা। বাজারেও উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য পেয়ে খুশি কৃষকেরা।

লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ বছর লালমোহন উপজেলায় ২৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। যেখান থেকে এ মৌসুমে হেক্টর প্রতি গড়ে সাড়ে ৩ টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। সবমিলিয়ে এ বছর এই উপজেলায় অন্তত ৮২ হাজার ৭৫ টন ধান উৎপাদন হবে বলে ধারণা করছে কৃষি অফিস।

বর্তমান বাজারে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারছেন কৃষকেরা। সে হিসেবে চলতি আমন মৌসুমে লালমোহন উপজেলায় সর্বমোট ২১৫ কোটি ৪৪ লাখ ৬৮ হাজার ৭৫০ টাকার ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এই উপজেলার সব ধান কর্তন সম্পন্ন হবে বলে মনে করছে উপজেলা কৃষি অফিস।

উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের আসুলি এলাকার আমন ধান চাষি মো. ফিরোজ জানান, বেশ কয়েক বছর ধরেই আমরা বিভিন্ন জাতের ধানের চাষ করছি। এ বছর ৪৮০ শতাংশ জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। তবে মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে ধানের চারা রোপণ করতে হয়েছে কয়েকবার। তবুও এবার জমিতে খুব ভালো ধান হয়েছে। বাজারে বর্তমানে ধানের দামও ভালো। তাই এবার ধান চাষ করে কাঙ্ক্ষিত ফলন পেয়েছি।

ওই এলাকার মো. সবুজ নামে আরেক আমন ধান চাষি বলেন, এ বছর ৩২০ শতাংশ জমিতে আমনের আবাদ করেছি। মৌসুমের শুরুতে অন্যান্য চাষিদের মতো আমাদেরও ধানের চারা রোপণ করতে হয়েছে কয়েকবার। কারণ, মৌসুমের শুরুর দিকে ব্যাপক বৃষ্টিতে ধানক্ষেত পানিতে ডুবে গিয়েছিল। তবে সব বিপত্তি কাটিয়ে এরই মধ্যে ক্ষেতের সব ধান কাটা শেষ করেছি। মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি হলেও ধান সংগ্রহ করা পর্যন্ত আবহাওয়া অনেক ভালো ছিল। যার জন্য আল্লাহর রহমতে ধানের ফলনও ভালো পেয়েছি।

লালমোহন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আহসান উল্লাহ জানান, আমন আবাদের শুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে চাষিদের সত্যিই অনেক বেগ পেতে হয়েছে। তবে কৃষি অফিসের পরামর্শে চাষিরা তা কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন। এরপর চাষিদের নিরলস পরিশ্রমের ফলে এ বছর তারা আমন ধানের ভালো ফলন পেতে সক্ষম হয়েছেন। বাজারেও বর্তমানে এসব ধানের ভালো দাম রয়েছে। তাই আমরা আশা করছি আগামীতে এই উপজেলায় আমন আবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে।

এই কর্মকর্তা আরো জানান, আমাদের কৃষি অফিসের প্রত্যেক কর্মকর্তা কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নিয়মিত কৃষকদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তাদের সমস্যা জেনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন। আমাদের একটাই লক্ষ্য, কৃষকেরা কোনো ফসল উৎপাদন করে যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হন। আমরা চাই প্রত্যেক কৃষকই যেন বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষ করে লাভবান হতে পারেন। কারণ, কৃষকেরা ভালো ফলন এবং ন্যায্যমূল্য পেলেই দেশের কৃষিখাত স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকবে।