অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


আমাদের ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে জড়িতদের বিন্দু পরিমাণ ছাড় নয়: আসিফ মাহমুদ


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৬শে ডিসেম্বর ২০২৪ বিকাল ০৫:৩২

remove_red_eye

১৩৪

পুড়ে ছাই হয়ে গেছে অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার অফিস কক্ষ। সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে তার দায়িত্বে থাকা দুই মন্ত্রণালয়ের ভস্মীভূত দৃশ্য দেখে বিমর্ষ দেখা গেছে তাকে।

সচিবালয়ে যখন আগুনে জ্বলছিল আসিফ মাহমুদ তখন ছিলেন উত্তরাঞ্চল সফরে। আগুনের খবর শুনে সফর বাদ দিয়ে ঢাকায় ফিরে আসেন তিনি। বেলা ১২টার পর সচিবালয়ে ঢুকে নিজ দপ্তর যেন চিনতে পারছিলেন না!

পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া অফিস দেখে বিমর্ষ আসিফ মাহমুদ শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনকে বলেন, আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে! এম সাখাওয়াত হোসেন তখন তরুণ এই উপদেষ্টাকে সান্ত্বনা দেন।

এ সময় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সব ফাইল পুড়ে যাওয়ার কথা জানান। মাঝখানের সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে গিয়ে দেখা গেছে, একেবারে নিচ থেকে পানি এবং ছাইয়ের মিশ্রণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। পাঁচতলা পর্যন্ত আগুনে কোনো ক্ষতি হয়নি।

বেলা সাড়ে ১২টায় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা সাখাওয়াৎ হোসনকে সঙ্গে নিয়ে পুড়ে যাওয়া ভবনে প্রবেশ করেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এ সময় তার চোখে-মুখে বিষণ্ণতার ছাপ দেখা যায়। ভবন পরিদর্শন শেষে বেলা ১২টা ৪৩ মিনিটে সচিবালয় ত্যাগ করেন তিনি।

এর আগে সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে আসিফ মাহমুদ বলেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের বিগত সময়ে হওয়া অর্থলোপাট, দুর্নীতি নিয়ে আমরা কাজ করছিলাম। কয়েক হাজার কোটি টাকা লুটপাটের প্রমাণও পাওয়া গিয়েছিল। আগুনে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এখনো জানা যায়নি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ব্যর্থ করার এই ষড়যন্ত্রে যে বা যারাই জড়িত থাকবে, তাদের বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।

সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে লাগা আগুনে পুড়ে গেছে মোট চারটি তলা। এর মধ্যে ষষ্ঠ থেকে নবম তলা রয়েছে। ষষ্ঠ তলায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। সপ্তম তলায় স্থানীয় সরকার বিভাগ ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ। অষ্টম তলায় রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের কিছু অংশ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের কিছু অংশ। এ ভবনের নয় তলায় রয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এ চারটি তলা পুরো পুড়ে গেছে। প্রতিটি কক্ষের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও দেয়ালের অংশ খসে পড়েছে। সিঁড়ি ধসে গেছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পোড়া ধ্বংসস্তূপ। আর সেখানেই অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার দুটি মন্ত্রণালয়।

ফায়ার সার্ভিস আগুন লাগার খবর পায় বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টা ৫২ মিনিটে। দুই মিনিটের ব্যবধানে রাত ১টা ৫৪ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছান ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট কাজ করে। পরে ইউনিটের সংখ্যা বাড়ানো হয়। সবশেষ ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

আগুন নেভার পর পুরো ভবনটি ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছাড়া কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। পুড়ে যাওয়া অংশ থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সচিবালয়ের ভেতরে টহল দিচ্ছেন সেনাসদস্যরা।