অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


পৌষের শীতে চরবাসীর ভরসা ফুটপাতের শীতবস্ত্র


চরফ্যাসন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২শে ডিসেম্বর ২০২৪ সন্ধ্যা ০৬:১০

remove_red_eye

২৯২

এআর সোহেব চৌধুরী, চরফ্যাশন প্রতিনিধি: পৌষের শীতের তীব্রতায় চরফ্যাশন উপজেলা সদরসহ ২১ টি ইউনিয়নের হাটবাজার ও ফুটপাতে চলছে শীতবস্ত্রের জমজমাট বেচাকেনা। শীতে মধ্য ও নিম্নবিত্ত আয়ের মানুষের কষ্ট বেড়ে যাওয়ায় শীতের সোয়েটার বা ভারি পোশাক কিনতে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। নিম্ন আয়ের বেশির ভাগ মানুষ ফুটপাতের দোকান থেকে শীতের কাপড় কেনাকাটা করতে দেখা গিয়েছে। মূলত বিকেল হতেই এসব ফুটপাতে ভিড় করেন ক্রেতারা। এ ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামের বাজার গুলোর ফুটপাতে অস্থায়ী দোকানগুলোতে সুলভ মূল্যে বাহারি শীতের পোশাক পাওয়া যায়। বর্তমানে গ্রাম এলাকায় শীতের তীব্রতা একটু বেশী অনুভব হচ্ছে। শীতের কারনে সর্দি কাশিসহ ঠান্ডাজনিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা শীতকালীন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই ঠান্ডা কাশি থেকে বাঁচতে ও শীত নিবারণে শীতবস্ত্র কিনছেন সবাই। এই এলাকার মানুষের চাহিদা মেটানোর একমাত্র ভরসা চরফ্যাশন সদরের ফুটপাতে বসা পুরাতন শীতের পোশাক বিক্রির দোকানগুলো। এসব দোকানে কম মূল্যে দেশি এবং পুরাতন বিদেশি শীতবস্ত্র পাওযা যায়, তাই এসব ব্যবসায়ীরা নিম্ন আয়ের মানুষের শীতবস্ত্রের চাহিদা পূরণ করছে। বিভিন্ন ধোনি মানুষ ছুটে যায় বড় গার্মেন্টসে আর খেটে খাওয়া, সুবিধাবঞ্চিত নিম্ন আয়ের মানুষের একমাত্র ভরসা হচ্ছে ফুটপাত। বিগত কয়েকদিনে উপকূলীয় অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ফুটপাতগুলোয় শীতবস্ত্র বেঁচাকেনার চাপও বেড়েছ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে,চরফ্যাশন সদর,শশীভূষণ,হাজারীগঞ্জ ও দুলারহাটের ফুটপাতে জমজমাট বিক্রি হচ্ছে পুরাতন শীতবস্ত্র। নারী-পুরুষ সবাই এই শীতবস্ত্র কিনতে ব্যস্ত। নিজের জন্য বা প্রিয় সন্তানের জন্য আবার কেউ তার নিকট আত্মীয় স্বজনদের দেয়ার জন্য শীতের পোশাক কিনছেন ফুটপাত থেকে। এসব দোকানগুলোতে সোয়েটার, টাইস,জ্যাকেট,বাচ্চাদের কানটুপি, মেয়েদের কার্ডিগান, মাফলার, মোজা, ট্রাউজার,কোট ও কোটিসহ আরও একাধিক শীতবস্ত্র বিক্রি হচ্ছে। জানা গেছে, বিদেশ থেকে আমদানি করা পুরাতন শীতবস্ত্র ব্যবসায়ীরা লট আকারে এনে বিক্রি করছে। মৎস্য পেশায় জড়িত লিটন মাতাব্বর (৫৫) বলেন, ফুটপাতে পুরাতন কাপড়ের দোকান থেকে ৩০০ টাকায় একটি কোট কিনেছি। চরে পর্যাপ্ত শীত পড়ছে তাই নিজে একটা কিনেছি এবং ছেলের জন্যও সোয়েটার কিনেছি। ফুটপাতে ডিম বিক্রেতা জামাল মুন্সি (৬০) বলেন, জিনিসপত্রের দাম বেশি, সারাবছর একটা লুঙ্গি পড়ে কাটিয়েছি। শীতের কাপড় কেনার সাধ্য নেই। তার পরেও না জীবন বাঁচানোর জন্য শীতের কাপড কেনা লাগবে। তাই একটা জাম্পার কিনলাম ২০০টাকায়। বাজার ঝাড়ুদার জমেলা খাতুন (৪০) বলেন, নতুন শীতের কাপড় কেনার সাধ্য না থাকায় এসব পুরোনো শীতের কাপড় দিযে কোনোমতে শীত পার করতে হবে। শিক্ষক আবুল হোসেন বলেন,বাচ্চার জন্য দুইটা সোয়েটার ও কানটুপি কিনেছি এখানে গার্মেন্টসের চেয়েও সস্তায় ভালো শীতের কাপড় পাওয়া যায়। সদর রোডের পুরাতন শীতের কাপড বিক্রেতা নুর উদ্দিন নুরু বলেন, নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের ভরসার জায়গা হচ্ছে এসব পুরাতন শীতবস্ত্রের দোকান বা টাল মার্কেট। এখানে প্রতি বছর পুরাতন শীতের পোশাক বিক্রি ভালো হয। দামে সস্তা পাওয়া যায় তাই মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ এখান থেকেই পুরাতন শীতবস্ত্র কিনে জীবন কাটান।