আমাদের পথ চলা কেবল শুরু হয়নি সম্মুখ চলার প্রত্যয়ে আমরা
অমিতাভ অপু : আমাদের পথ চলা কেবল শুরু হয় নি, সম্মুখ চলার প্রত্যয়ে আমারা এগিয়ে যাচ্ছি। সেই অঙ্গীকার নিয়ে ৩০ বছরে দৈনিক বাংলার কন্ঠ সৃষ্টি করেছে গৌরবময় এক ইতিহাস। যা গড়ে উঠেছে সত্যের উপর নির্ভর করে। সেই ইতিহাসের পরিক্রমা ছিল নানা ঘটনা সমৃদ্ধ। ১৯৯৪ সাল, আমি তখন সাপ্তাহিক দ্বীপবাণী পত্রিকায় কাজ করতাম। সিনিয়র সাংবাদিক আমাদের অভিভাবক এম. হাবিবুর রহমান দ্বীপবাণী অফিসে জানান, তিনি দৈনিক পত্রিকা বের করছেন। আমাকে বললেন, চল, পত্রিকায় কাজ করবে। না বলতে পারি নি। তার সঙ্গে চলে গেলাম মহাজনপট্টি অফিসে। ডেক্সে কাজ করতাম । ওই সময় শুরুতে জাতীয় মানের মতো পত্রিকায় বাংলার কণ্ঠকে সাজাতে শুরু করলেন বার্তা সম্পাদক প্রয়াত সাংবাদিক ফরিদ হোসেন বাবুল ভাই। আজ বাবুল ভাইকে অনেক বেশি মনে পড়ে। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানাই। বলা যায়, তার মতো একজন গুণী ও প্রগাঢ় জ্ঞানে সমৃদ্ধ ব্যক্তির হাত ধরে আমাদের আধুনিক সাংবাদিকতার হাতে খড়ি । শব্দ চয়ন , বানান রীতি , বাবুল ভাই হাত ধরে আমাকে শেখান। সম্পাদক হাবিবুর রহমান আমাদের গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে সাহস যোগাতেন, নির্দেশনা দিতেন। শুরু থেকে নিউজ বিভাগে ছিলেন ফরিদ হোসেন বাবুল ভাই, মোকাম্মেল হক মিলন, মান্নান জাহাঙ্গীর (বর্তমানে বাংলা ভিশন টেলিভিশনের বার্তা বিভাগে সাংবাদিকতায় কর্মরত), রফিকুল ইসলাম, ফিরোজ কবির খোকন, আবদুল কাদের সোহেল ও আমি। নিউজ দিয়ে সহযোগিতা করতেন আফসার উদ্দিন বাবুল , কোর্ট রিপোর্টার ছিলেন প্রয়াত এডভোকেট সৈয়দ আশরাফ হোসেন লাভু। এছাড়াও সংবাদ দিতেন হারুন উর রশীদ। বরিশাল থেকে কাজ করতেন বর্তমান দৈনিক যুগান্তরের বরিশাল ব্যুরো প্রধান আক্তার হোসেন শাহীন । পরে যুক্ত হন রফিকুল ইসলাম রফিক ভাই, শফিকুল ইসলাম শফি, জুন্নু রায়হান , হাসিব রহমান, নেয়ামত উল্যাহ, নাসির লিটন, মেজবাহ উদ্দিন শিপু , কামরুল ইসলাম, মোঃ হেলাল উদ্দিন, অচিন্ত্য মজুমদার, এম ছিদ্দিক উল্ল্যাহ, হাসনাইন আহমেদ মুন্না, মলয় দে, মোঃ ইসমাইল, আমির হোসেন, আক্তারুল ইসলাম আকাশ, শফিক খান, মহিউদ্দিন সহ আরো অনেকে । কাজ করছেন এইচ আর সুমন, মোঃ আবদুর রহমান হেলাল , মোঃ ইসতিয়াক, মো: ইয়ামিন,ফটো সাংবাদিক লক্ষন চন্দ্র দাস। উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন শ.ম ফারুক (দৌলতখান), মোঃ ফারুক (বোরহানউদ্দিন), তজুমদ্দিনে কাজ করতেন আশীষ ভক্ত ,নুর নবী, লিটন সান, রফিক সাদী, নয়ন ও ফখরে আজম পলাশ (বর্তমানে কর্মরত ), চরফ্যাশনে কাজ করতেন শিপু ফরাজি , নজরুল ইসলাম কিশান, মোঃ হারুন, আবু ছিদ্দিক, সাবেক অধ্যক্ষ কায়সার আহমেদ দুলাল , বর্তমানে চরফ্যাশনে কাজ করছে সোহেব চৌধুরী ও ইসরাফিল নাইম, দৌলতখানে কাজী জামাল,খালেদ, বোরহানউদ্দিনে মোবাশ্বির হাসান শিপন, নীল রতন, মহিউদ্দিন আজিম,লালমোহনে কাজ করতেন প্রয়াত মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ আমজাদ, মোঃ সোহেব, জসিম জনি, আকবর জুয়েল, মনপুরায় আব্দুল্লাহ জুয়েল বর্তমানে কর্মরত। বলা যায় এক ঝাঁক মেধাবী ও তরুন সাংবাদিকদের কাজের ফসল দৈনিক বাংলার কন্ঠ ও তার দীর্ঘ পথচলা। আমাদের মাঝ থেকে চলে গেছেন বাংলার কণ্ঠ এর উপদেষ্টা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মরহুম জাহাঙ্গীর আলম, ফরিদ হোসেন বাবুল, আফসার উদ্দিন বাবুল , এ্যাডভোকেট সৈয়দ আশরাফ হোসেন লাবু, লালমোহনের জাকির হোসেন। বাংলার কণ্ঠ পরিবার তাদের অবদান কৃতজ্ঞতা চিত্তে স্মরণ করে। বাংলার কন্ঠ পত্রিকা অফিস শুধু সাংবাদিকতায় সীমাবদ্ধ নেই। প্রথম থেকে মুক্ত চিন্তার বিকাশের কেন্দ্রও ছিল। ওই অফিসেই ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি আন্দোলন কমিটির একাধিক সভা অনুষ্ঠিত হয়ে ছিল। ভোলার গ্যাস ভোলায় রাখাসহ সামাজিক একাধিক আন্দোলনের জন্য ভোলা স্বার্থরক্ষা কমিটির সভা হতো নিয়মিত। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, কবি সাহিত্যিকদের আড্ডাও হয়ে থাকে এই অফিসে। আড্ডায় যোগ দিতেন ভোলার বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, ব্যক্তিবর্গ, রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বগন। এমনকি সাবেক জেলা প্রশাসক সৈয়দ মনির উদ্দিন, সাবেক জেলা প্রশাসক সেকান্দার আলী মণ্ডল, পুলিশ সুপারসহ অনেকে। পত্রিকাটি যখন লেটার প্রেসে বের হতো তখন এর প্রেসে যুক্ত ছিলেন, তাজুল ইসলাম, মানিক, মোঃ হেলাল, মোঃ শহিদুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান হাবিব সহ আরো অনেকেই। যাদের অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বাংলার কন্ঠ পরিবার।
বছর শেষে নতুন বছরে পা রাখার ক্ষণে সকলের ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। আগামীর পথচলায় এবং অনুপ্রেরণায় সকলের সহযোগিতা বাংলার কণ্ঠ পরিবারকে উৎসাহিত করবে বলে বিশ্বাস করি। দৈনিক বাংলার কন্ঠ অতীতেও যেমন সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ ছিলো, ভবিষ্যতেও তেমনই দায়বদ্ধ থাকতে অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলার কন্ঠের এই দীর্ঘ পথ চলায় পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের জানাই কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা। পাশে থাকুন, পাশে রাখুন।