অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


বিদায়ী শিক্ষককে মাইক্রোবাসে বাড়ি পৌঁছে দিলেন শিক্ষার্থী ও সহকর্মীরা


বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ বিকাল ০৫:১৫

remove_red_eye

৩৫২

বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি : মাদ্রাসা অফিস থেকে মাঠ-সড়কের দু'ধারে দাঁড়িয়ে আছে সারিবদ্ধ শিক্ষার্থী। সবার হাতে হাতে ফুল।  শেষ প্রান্তে শিক্ষার্থীদের মাঝে অপেক্ষা করছে সাজানো একটি নীল রঙের মাইক্রোবাস। আর এ মাইক্রোবাসে করে বিদায়ী শিক্ষককে বাড়ি পৌঁছে দিলেন শিক্ষার্থী ও সহকর্মীরা।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ২ টার দিকে চাকরি জীবনের শেষ দিনে এক শিক্ষকের বিদায় অনুষ্ঠানে এমন ব্যতিক্রমী দৃশ্যের দেখা মিলল ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বোরহানউদ্দিন কামিল মাদ্রাসায়।

বিদায়ী শিক্ষক স্বার্থক চন্দ্র মজুমদারের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই এ আয়োজন করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও সহকর্মীরা।
কর্মজীবনের শেষ দিনে এ ধরনের আয়োজন দেখে আবেগ আপ্লূত হয়ে পড়েন তিনি। অন্যদিকে ব্যতিক্রমধমী ওই আয়োজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর প্রশংসায় ভাসছেন মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।



গাড়িতে ওঠার আগে অফিস কক্ষ থেকে বের হলে সারিবদ্ধ শিক্ষার্থীরা তাঁকে ফুল ছিটিয়ে শ্রদ্ধা জানান। দুই সারির মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন বিদায়ী শিক্ষক। দু'চোখে জল ছলছল করছে। হাত নেড়ে অভিবাদনের জবাব দিচ্ছেন ঠিকই।

মাইক্রোবাসে উঠে শিক্ষক স্বার্থক চন্দ্র মজুমদার বলেন, কর্মজীবনের শেষ দিনে তাদের এ আয়োজনে মুগ্ধ করেছে আমাকে। এমন আড়ম্বরপূর্ণ বিদায় হবে আমার, এটা কখনো কল্পনা করিনি। সে কারণে সবার প্রতি কৃতজ্ঞ আমি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটানা ২৭ বছর সময় দিয়েছি এই মাদ্রাসায়। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কখনো ছুটি নেইনি। শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ বিভিন্ন কাজে আগ্রহী করে তুলতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

এর আগে সকাল থেকে ওই মাদ্রাসার হলরুমে চলে আলোচনা ও শুভেচ্ছো উপহার প্রদান।। সেখানে বিদায়ী শিক্ষকের কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন তার সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা।

প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ এবি আহমদ উল্যাহ আনছারী এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ এ.এইচ.এম অলিউল্যাহ,মুহাদ্দিস মো. হাবিবুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান,প্রভাষক শোয়াইবুর রহমান,সিনিয়র শিক্ষক মোবাশ্বির হাসান। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন, মো. মহিউদ্দিন, মো. এুরাদ হোসেন, মো. তানজিল প্রমুখ।
অধ্যক্ষ এবি আহমদ উল্যাহ আনছারী বলেন, একজন আদর্শ শিক্ষকের যে সকল ভালো গুণ থাকা দরকার স্বার্থক চন্দ্র মজুমদারের  মধ্যে তার সবগুলোই ছিলো। শ্রেণি কক্ষ ছাড়াও ক্রিয়াঙ্গনে তিনি ছিলেন বেশ প্রশংসিত।

১৯৯৭ সালের ৭ অক্টোবর ওই মাদ্রাসায় যোগদান করেন স্বার্থক চন্দ্র মজুমদার। ২৭ বছর সময় দেন তিনি। দাম্পত্য জীবনে স্ত্রী নেই। আছে এক ছেলে সন্তান; তাও দেশের বাইরে থাকেন।