অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


আম্পানের তান্ডবে চরফ্যাশনের উপকূল লন্ড ভন্ড, তিন শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত


চরফ্যাসন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২শে মে ২০২০ রাত ১২:৫৮

remove_red_eye

৮০০

চরফ্যাশন প্রতিনিধি:: আম্পানের তা-বে ভোলার চরফ্যাশন উপকূল ল-ভ- হয়েছে। গাছের ছাপা পড়ে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। ডুবে গেছে একটি মাছ ধরার ট্রলার। ভেঙেছে প্রায় তিন শতাধিক  কাঁচা ঘরবাড়ি এবং অসংখ্য গাছপালা। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ ও  খেতের ফসল।  ভেঙেছে রাস্তা ঘাট।


 জানাযায়,  আম্পানের তা-বে চরফ্যাশন- দক্ষিণ আইচা সড়কে হলুদ বিল্ডিং এলাকায় বুধবার দুপুরে গাছের নিচে চাপা পড়ে ছিদ্দিক ফকির (৭০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। নিহত সিদ্দিক ফকির উপজেলার  চর কচ্ছপিয়া গ্রামের মৃত আরব আলী ফকিরের ছেলে। এদিন পুকুরে থালা-বাটি ধুতে গিয়ে গাছের নিচে চাপা পড়ে এওয়াজপুর গ্রামের শাহাবুদ্দিনের স্ত্রীর ইয়ানুর (৩৫) আহত হয়। বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়েছে।


উপকূলের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচর, পাতিলা, কুকরি মুকরি, বেড়িবাঁধের বাহিরের চরআইচা, দক্ষিণ আইচা, চরকচ্ছপিয়া, জাহানপুর, হাজারীগঞ্জ, চরফকিরা, চরহাসিনা, চরফারুকী, চরলক্ষী, শিকদারেরচরসহ প্রায় ২০ টি চর এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫/৬ ফুট উচ্চতার জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। জোয়ারের পানির স্্েরাতে এসব এলাকার রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যায়।  ভেঙ্গে যায় উপকূলের প্রায় তিন শতাধিক কাচা ঘরবাড়ি। ভেসে যায় পুকুরের মাছ, ক্ষেতের ফসল।
বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত চরফ্যাশনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। এতে  বিদ্যুৎ বিহীন অন্ধকারে থাকতে হয়েছে চরফ্যাশন বাসিকে ।


 উপকূলের প্রায় এক লাখ ২৬ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কন্দ্রে এনেছেন  উপজেলা প্রশাসন। দুদিন যাবত নির্ঘুমে রাত কাটিয়ে বৃহস্পতিবার তারা বাড়ি ফিরেছেন।

চর মাদ্রাজ  ইউপি চেয়ারম্যান  মোজাম্মেল জমাদার  জানান, বেতুয়া সংলগ্ন মেঘনায় ২১ মাঝি-মাল্লাসহ বাবুল মাঝির একটি মাছধরার ট্রলার ডুবে যায়, ট্রলারের মাঝি-মাল্লাদের উদ্ধার করা  গেলেও  ট্রলার ও জাল উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি। উপজেলা মৎস্য অফিসার মারুফ হোসেন মিনার এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।


উপজেলা সিপিবি কর্মকর্তা মোকাম্মেল হোসেন জানান, আম্পানের তা-বে উপজেলার প্রায় তিন শতাধিক কাচা ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক পাঁচ শতাধিক ঘর বাড়ির ক্ষতি হয়েছে।


উপজেলা কৃষি অফিসার আবুল হাসনাইন জানান, আম্পানের আঘাতে চরফ্যাশন উপজেলায় প্রায় ৪০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।


চরফ্যাশন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানান, ৯ টি পয়েন্টে ৫.১৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।


উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন জানান, এলজিইডির প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, এক লাখ ২৬ হাজার মানুষকে নিরাপদ  আশ্রয় কন্দ্রে এনেছেন  উপজেলা প্রশাসন। তাদের মাঝে প্রায় ২ লাখ টাকার শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার  মো. রুহুল আমিন জানান, উপজেলার ক্ষয়ক্ষতির তালিকা এখনো সম্পন্ন করা হয় নি। তালিকার কাজ চলছে।