৪ জনকে কারাদণ্ড ১৯ জনের জরিমানা
বাংলার কন্ঠ ডেস্ক: ভোলার লালমোহন, তজুমদ্দিন ও মনপুরা উপজেলায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ ধরায় ২৩ জেলেকে আটক করা হয়েছে। এসময় বিপুল পরিমাণ জাল,মা ইলিশ ও মাছধরা ট্রলার জব্দ করা হয়েছে। আটককৃত জেলেদের বিভিন্ন অংকের টাকা জরিমানা ও বিভিন্ন মেয়াদে বিনা শ্রমে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মনপুরা প্রতিনিধি জানান,মনপুরায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনায় মা ইলিশ শিকারের সময় ৪ জেলেকে আটক করে উপজেলা মৎস্য বিভাগ।
পরে শুক্রবার সকালে আটককৃত জেলেদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাঠান মোঃ সাইদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার রাত ২ টার সময় উপজেলা জংলারখাল সংলগ্ন মেঘনায় অভিযান পরিচালনা করে জেলেদের আটক করা হয়।
এই সময় একটি ট্রলারসহ ৫ হাজার মিটার জাল, আনুমানিক ৩ কেজি মা ইলিশ জব্দ করা হয়।
আটকৃত জেলেরা হলেন, উপজেলার ২নং হাজীর হাট ইউনিয়নের গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইসমাইল মাঝি (৩৭), মোঃ হাসান (২৮), জসিম মাঝি (৩০) ও মো: রাসেল (২৫)।
পরে শুক্রবার সকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাঠান মোঃ সাইদুজ্জামান আটককৃত ৪ জেলের মধ্যে রাসেল ২ মাস, মোঃ ইসমাইল মাঝিকে ১ মাস, হাসান ও জসীমকে ১৭ দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয় ।
পরে উদ্ধারকৃত ৩ কেজি ইলিশ মাছ এতিমখানা এবং হতদরিদ্রের মাঝে বিতরণ করা হয়।জব্দকৃত ৫ হাজার মিটার জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
এই ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৃজন সরকার , জংলারখাল সংলগ্ন মেঘনায় অভিযান চালিয়ে জাল, মা ইলিশসহ ৪ জেলেকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আটককৃত জেলেদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
তজুমদ্দিন থেকে ফখরে আজম পলাশ জানান ॥ ভোলার তজুমদ্দিনের মেঘনায় মা ইলিশ প্রজনন রক্ষার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারের দায়ে ১২ জেলেসহ নৌকা, জাল ও মাছ আটক করেন কোষ্টগার্ডের সহায়তায় মৎস্য অফিসের অভিযান পরিচালনাকারী দল। পরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ১০জনকে আর্থিক জরিমানা ও অপ্রাপ্ত বয়সের দুইজনকে মুচলেখা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। জাল আগুনে পুড়ে ধ্বংস করা হয়।
মৎস্য অফিস সুত্রে জানা যায়, ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার নির্দেশনা অনুযায়ী বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাত ৯ টা থেকে বৃহস্পতিবার (১৭অক্টোবর) ভোর ৫টা পর্যন্ত মেঘনার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আল আমিনের নেতৃত্বে মৎস্য অফিসের একটি টিম। অভিযান পরিচালনাকারী টিমটি কোষ্টগার্ডের সহযোগীতায় গুরিন্দা মাছ ঘাট ও বাগানের খাল সংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে ২টি নৌকা, ৩৫ হাজার মিটার কারেন্টজাল ও ৩০ কেজি মাছসহ ১২ জেলেকে আটক করেন। আটক জেলেরা হলেন, রিয়াজ (২৩), মোঃ জাহিদ (২৭), মোঃ রিয়াজ (২৩), আব্বাস (৩০), মোঃ সুমন (২৩), মোঃ আরিফ (৩০), মোঃ কবির (৩৫), করিম (৩৬) , লোকমান (৩৪) ও মনির (২৯)। আটকদের মধ্যে ১০জনকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানার রায় প্রদান করেন তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমান আদালতের বিজ্ঞ নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট শুভ দেবনাথ। অন্যদিকে মোঃ শরিফ (১৬) ও রিয়াজ (১৬) অপ্রাপ্ত বয়সের হওয়ায় মুচলেকা নিয়ে তাদের অভিভাবকের নিকট ছেড়ে দেন।
আটক নৌকা ২টি মৎস্য অফিসের হেফাজতে রয়েছে। জাল উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা শুভ দেবনাথের উপস্থিততে শশীগঞ্জ সুইজঘাট এলাকায় আগুনে পুড়ে ধ্বংস করা হয় এবং মাছ দুস্থ ও এতিমখানায় বিতরণ করেন।
তজুমদ্দিনের মেঘনায় গত ১৩ অক্টোবর থেকে আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২দিন মা ইলিশের প্রজনন রক্ষার অভিযান চলমান রয়েছে। নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ আহরণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। লালমোহন প্রতিনিধি জানান ॥ ভোলার লালমোহন উপজেলায় মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। বুধবার রাতে উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে মা ইলিশ রক্ষায় চলমান নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকারের দায়ে ৯ জেলেকে আটক করা হয়। পরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মোট ৪১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম।
এছাড়াও অভিযানে জব্দ করা হয় ৯ হাজার পাঁচশত মিটার জাল, বিভিন্ন প্রজাতির ২০ কেজি মাছ এবং দুইটি মাছ ধরা ট্রলার। পরে জব্দকৃত জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এতিমখানায় বিতরণ করা হয় জব্দকৃত মাছ। ট্রলার দুইটি পরবর্তীতে নিলামের জন্য উপজেলা মৎস্য অফিসের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
অভিযানে লালমোহন উপজেলা মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান, উপজেলা ডেভেলপমেন্ট ফ্যাসিলিটেটর (ইউডিএফ) মো. কায়সারুল হক, এসআই মোস্তফা মনিরুলসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্য এবং মৎস্য অফিসের স্টাফরা উপস্থিত ছিলেন।