অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বৃহঃস্পতিবার, ৩রা অক্টোবর ২০২৪ | ১৮ই আশ্বিন ১৪৩১


চরফ্যাশনে জরিমানার টাকা দিতে ব্যার্থ হয়ে গৃহবধুর আত্মহত্যা


চরফ্যাসন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ সন্ধ্যা ০৬:৫১

remove_red_eye

৬৩

 
ইসরাফিল নাঈম, শশীভূষণ :  ভোলার চরফ্যাশনে ছেলেকে চুরির অপবাদ দিয়ে মাতাব্বরদের করা জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে না পারার ঘটনায় এক গৃহবধু আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা জানান, জরিমানার টাকার জন্য স্বামী-স্ত্রীকে রাতভর আটকে রাখেন কামরুল সর্দার নামে এক মাতব্বর। পরে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ওই রাতে বাড়ি ফিরেন। এর পর থেকে বাকি টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় গত সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে গৃহবধু জাহানারা আত্মহত্যা করেন। চরফ্যাসন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে এঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধু ওই গ্রামের জামাল উদ্দিনের স্ত্রী।
স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে থানা পুলিশ নিহত ওই গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা মর্গে পাঠিয়েছেন।
গৃহবধুর স্বামী জামাল উদ্দিন জানান, গত কয়েকদিন আগে স্থানীয় মাতাব্বর কামরুল সরদার, আল-আমিন ফরাজী, আবুল হোসেন মাতাব্বার ও নাছির মৃর্ধা তার ছেলে আল-আমিনের উপর ঢাকায় একটি মোটরসাইকেল চুরির অপবাদ দিয়ে সালিশ বৈঠক ডাকেন। এসময় তিনি এবং তার ছেলে আল-আমিন ও স্ত্রী জাহানারাকে নিয়ে ওই সালিশে তিনি উপস্থিত হন। তাদের কোন মতামত না শুনেই প্রভাবশালী মাতাব্বরা ছেলে আল-আমিনকে চোর সাব্যস্ত করে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেন। পরে জরিমানার টাকা আদায়ের জন্য তার স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই আটকে রাখেন। এক পর্যায়ে এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা এনে দিয়ে ওই রাতে বাড়ি ফিরেন।
তবে মাতাব্বরদের বেধে দেয়া বাকী ৫০ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দিতে থাকেন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি এবং তার স্ত্রী জাহানারা। একদিকে জরিমানার টাকার জন্য মাতাব্বরদের চাপ অন্যদিকে বসত ভিটে বিক্রির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে খুব চিন্তামগ্ন ছিলেন স্ত্রী জাহানারা। গত রবিবার রাতে এসব নিয়ে কথা বলে তিনি অস্থির হয়ে উঠেন। ভোর ৬ টায় পরিবারের সদস্যরা ঘুম থেকে উঠার আগেই তিনি বসত ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যান। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। মাতাব্বরদের বেধে দেয়া জরিমানার টাকা পরিশোধে হতাশ হয়ে জাহানারা আত্মহত্যা করেছেন বলে স্বজনরা দাবি করেন।     
মাতাব্বর কামরুল সর্দার জরিমানার টাকার জন্য আটকে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তার ছেলে ঢাকায় চুরি করেছে এমন একটি খবর পেয়ে আমরা তাকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসা করেছি এর বাহিরে আর কোন কথা হয়নি আমাদের।

দক্ষিণ আইচা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদ আহমেদ জানান, অর্থনৈতিক সংকট ও লেনদেন সংক্রান্ত ব্যপারে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।