অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৮ই অক্টোবর ২০২৪ | ২৩শে আশ্বিন ১৪৩১


চরফ্যাশনে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু


চরফ্যাসন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৮

remove_red_eye

৭৪

           লাখ টাকায় সমোঝতা

শশীভ‚ষণ প্রতিনিধি : ভোলার চরফ্যাশনে হাসপাতাল রোডে অবস্থিত সেন্টাল ইউনাইটেড নামের প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আঁখি আক্তারের ভুল চিকিৎসায় অস্ত্রপাচারের সময় মুন্নি আক্তার নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। অস্ত্রপাচারের সময় প্রসুতির মৃত্যু হলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় সদ্যভ‚মিষ্ঠ হওয়া নবজাতক শিশু। ওই ক্লিনিকে প্রসূতির নারীর মৃত্যু হলে চিকিৎসক বিষয়টি গোপন রেখে রোগীকে দ্রæত বরিশাল শেবাচিমে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

পরিবারের সদস্যরা ঘটনাটি টের পেয়ে ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ক্লিনিকের ভিতরে হট্টোগোল শুরু করেন। পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে পরিবেশ শান্ত হয়। পরে রাতেই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ওই নারীর পরিবারকে এক লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করেন। নিহত মুন্নি আক্তার উপজেলার আমিনাবাদ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে।

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬ টায় ওই ক্লিনিকে প্রসুতি নারীকে অস্ত্রপাচারের সময় তার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

নিহত প্রসুতি নারী মুন্নির বাবা আনোয়ার হোসেন জানান, দুপুরে তার অন্তঃসত্ত¡া মেয়ের প্রসব বেদনা শুরু হলে তার পরিবারের সদস্যরা চরফ্যাশনের সেন্টাল প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যান। কর্তব্যরত গাইনি চিকিৎসক ডাঃ আঁখি আক্তার কোন রকম পরিক্ষা ছাড়াই গর্ভের সন্তান সংকটাপন্ন বলে জানান এবং পূর্বের পরীক্ষার রির্পোট অনুযায়ী তার মেয়েকে অস্ত্রপাচারের সিদ্ধান্ত নেন। অস্ত্রপাচারের সময় নবজাতক শিশু জিবিত থাকলেও মৃত্যু হয় মেয়ে মুন্নি আক্তারের। বিষয়টি চিকিৎসক ও নার্সরা গোপন রেখে তার মেয়ের অবস্থাসংকাটপ্ন বলে তাকে দ্রæত বরিশালে নিয়ে যাওয়র পরামর্শ দেন। ঘটনাটি তিনি এবং তার স্বজনা বুঝতে পেরে ওই ক্লিনিকে হট্টোগোল শুরু করলে ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের চাপের মুখে পড়ে তারা মেয়েকে লালামোহন হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান অস্ত্রপাচারের সময় তার মৃত্যু হয়েছে। পরে তারা মরদেহ নিয়ে ওই ক্লিনিকে গেলে কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে তারা মৃতদেহ নিয়ে ক্লিনিক ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

তিনি আরও জানান, রাতে তারা নিহত মুন্নির মরদেহ দাফনের পর ওই ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষরা তাদের বাড়িতে যান। এবং তার মেয়ে গর্ভের ভ‚মিষ্ঠ হওয়ার নবজাতকের চিকিৎসা করানোর জন্য তার হাতে এক লাখ টাকা তুলেন দেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ চরফ্যাশনের আনাচকানাচে গড়ে উঠা অবৈধ ক্লিনিক গুলোতে চিকিৎসকদের ভ‚ল চিকিৎসায় প্রান হারান অসংখ্য প্রসূতি নারীরা। ক্লিনিক গুলোতে প্রসুতি নারীরা চিকিৎসা বা নরমাল ডেলিভারির জন্য গেলে চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ গ্রামের সহজ সরল মানুষদের ভুল বুঝিয়ে সিজার করাতে বাধ্য করান। নিরুপায় হয়ে সিজারের নামে চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ হাতিয়ে নেন হাজার হাজার টাকা। পাশাপাশি তাদের অপচিকিৎসার বলি হন প্রসবের জন্য গ্রাম থেকে ছুটে আসা নারীরা। এসব ক্লিনিকের বিরুদ্ধে দ্রæত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা।

এবিষয়ে জানতে ওই ক্লিনিকে গেলে চিকিৎসক আঁখি আক্তারকে পাওয়া যায়নি। পরে তার মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানাযায়নি।

তবে ওই ক্লিনিকের পরিচালক মো. বশির আহমেদ জানান, নারীর পরিবার বাড়িতে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করে যখন প্রসূতির অবস্থা সংকাটপ্ন তখন তাদের ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। চিকিসকের কাছ থেকে যতটুকু জানতে পেরেছি গর্ভের সন্তানের অবস্থা সংকাটপন্ন হওয়ায় তাকে দ্রæত অস্ত্রপাচারের সিদ্ধান্ত নেন। পরে প্রসুতি নারীর জ্ঞান না ফেরায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে রেফার করা হয়। তবে চিকিৎসকরা ধারনা করেছেন ওই নারীর অস্ত্রপাচারের সময় স্টোক করেছেন। পরে তিনি মারা গেছেন।