অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


ভোলায় প্রথম সরকারি সুবিধা পেয়ে খুশি ভাসমান বেদে জেলেরা


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯শে অক্টোবর ২০১৯ রাত ১১:০৪

remove_red_eye

১১০৩

 

অমিতাভ অপু : নৌকায় যাদের জীবন, নৌকায় মৃত্যু। নৌকায় বসবাস। নেই কোন স্থায়ী ঠিকানা । সরকারের উন্নয়ন সুবিধা বঞ্চিত এমন ভাসমান বেদে জেলেদের ৩০০ পরিবার প্রথম সরকারের সুবিধাপ্রাপ্তির তালিকাভুক্ত হওয়ায় বেশায় খুশি। জীবনের প্রথম মুল্যায়নের তৃপ্তি দেখা গেছে শুক্রবার শেষ বিকালে মেঘনা পাড়ে। এমন অনন্য উদ্যোগ নেন ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক। মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে নৌকায় থাকা ভাসমান জেলেদের হাতে ২০ কেজি হারে চালের বস্তা তুলে দেন জেলা প্রশাসক । কথা বলেন ওই ভাসমান মানুষদের সঙ্গে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আজাহারুল ইসলাম ও ইউএনও মোঃ কামাল হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
সাপের খেলা দেখিয়ে অথবা বাত-ব্যথা কমাতে সিঙ্গা দেয়া, ঝাড়ফোক তাবিজ দেয়া, এমন পেশায় বর্তমান আধুনিক যুগে আকাল যাচ্ছে। তাই পেশাবদল করে এরা মাছ ধরায় নামে। কিন্তু স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় এরা ছিলেন সরকারের সকল সুবিধা বঞ্চিত। প্রথম সরকারিভাবে চাল পেয়ে ভিশন খুশির কথা জানান ধনিয়া ঘাটের তৈয়ব আলীর স্ত্রী মোসামৎ জোবেদা , কাঞ্চনের পুত্র মোঃ রাসেল, মোঃ সানু সর্দারের ছেলে মোঃ বাদল, আব্দুর রহিমের ছেলে মোঃ মোস্তফা, চান মিয়ার ছেলে মোঃ আবুল হোসেন, রহমত আলীর ছেলে মোঃ সোহরাব, কহিনুর বেগমসহ বেদেরা। এরা মাথা গোজার জন্য ঘর চান। বেদে পল্লী চান। জেলা প্রশাসকের কাছে এমন দাবি জানান । বেদে জেলেরা তাদের পূর্নবাসনের দাবির কথা জানালে জেলা প্রশাসক আশ্বাস দেন। তাৎক্ষনিক মাঝের চরে বেদে জেলে পল্লী ( গুচ্ছাগ্রাম ) তৈরী করার প্রস্তাব দেয়ার জন্য ইউএনওকে নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক যুগান্তরকে জানান সরকারের সুবিধা বঞ্চিত এসব জেলেরা এত দিন নিয়ন্ত্রনহীন ভাবেই নৌকায় বসবাস করার পাশপাশি নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো। এদের নির্দিস্ট ঠিকানা না থাকায় এরা সরকারের সামাজিক উন্নয়ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এদের দেয়া হয় নি জেলেকার্ড নিবন্ধন সনদ। এদের নেই জন্মনিবন্ধন, নেই জাতীয় পরিচয়পত্র। ভোটার তালিকায়ও নাম নেই। ইলিশের ভরা প্রজনন ও ডিম ছাড়ার জন্য ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন মেঘনা তেতুঁলিয়া নদীতে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় সুবিধা বঞ্চিত জেলেকার্ড বিহীন এসব বেদে ভাসমান জেলেরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। ২২ দিনের অভিযান সফল করতে জেলা প্রশাসকের নিজস্ব তহিবিলের ৪ মেট্রিক টন চাল ( জিআর) বরাদ্দ দিয়ে ওই চাল বিতরণ করা হয় । ভোলা জেলায় মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে প্রায় এমন সহস্রাাধিকব জেলে পরিবার রয়েছে। এদের সন্তানরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। বঞ্চিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে। প্রথম পর্যায়ে ৪শ পরিবারকে তালিকাভুক্ত করে সরকারের সুবিধার আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়। এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার পাশপাশি দেশ ব্যাপী এমন উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলেও জানান ভোলার সুশীল সমাজের প্রতিনিধি প্রেসক্লাব সভাপতি এম হাবিবুর রহমান।