বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮ই জুন ২০২৪ সন্ধ্যা ০৬:২২
২৩১
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের মূল লক্ষ্য চলমান অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সংকট দূর এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। সারাবিশ্বে অর্থনীতির সংকট কালে প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবসম্মত ও গণমুখী।
তিনি বলেন, ‘এই বাজেটর লক্ষ্য দেশের অর্থনীতিকে ধীরে ধীরে করোনা অতিমারি এবং বিশ্বে চলমান যুদ্ধ পূর্ববর্তী উচ্চ গতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে ফিরিয়ে নেয়া। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতির সংকটকালে এ বাজেট বাস্তবসম্মত ও গণমুখী।’
ওবায়দুল কাদের আজ শনিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন। বাজেট পরবর্তি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
প্রস্তাবিত বাজেটকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে স্বাগত জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ, উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ বাজেটকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে স্বাগত জানাচ্ছি। ভারসাম্যমূলক একটি বাজেট উপহার দেবার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী “টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা” শীর্ষক ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পেশ করেছেন।
এই বাজেটের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মানের অঙ্গীকার।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সংকটকালেও সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত দেড় দশকে বাংলাদেশ একটি দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মর্যাদা লাভ করেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৩তম বৃহৎ অর্থনীতি। অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশের জনসাধারণের জীবনমান দিন দিন উন্নততর হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন শুধু ডাল-ভাতে নয়, পুষ্টি উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সব কয়টি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকে। এ সময়ে মোট দেশজ উৎপাদন গড়ে ৬.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে যা সারা দুনিয়ায় উচ্চতম প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে অন্যতম করে তুলেছে।ং
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০০৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার দেশের ৪০ শতাংশের বেশি মানুষকে দারিদ্র্যের মধ্যে রেখে গিয়েছিল। জনগণের ধারাবাহিক সমর্থন নিয়ে আমাদের সরকার মাত্র ১৪ বছরের মধ্যে সে দারিদ্র্য ১৮.৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। অতি দারিদ্র এখন মাত্র ৫.৬ শতাংশ।
তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক কম প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করেছে। এতে আমদানি কমেছে বছরে ১৫ শতাংশের বেশি হারে যার ফলে সংকটকালেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী ৩ মাসের বেশি আমদানির জন্য ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। তা সত্ত্বেও টাকার মান ধরে রাখতে রিজার্ভ থেকে ২২ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হয়েছে ফলে রিজার্ভ অনেক কমে গিয়েছে।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণের লক্ষ্যে নতুন সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গেই সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। এবারের বাজেটেও তার পূর্ণ প্রতিফলন রয়েছে।
সড়ক পরিবহন ওসেতুমন্ত্রী বলেন, অর্থ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে চাহিদা কমিয়ে এবং পণ্য ও সেবার সরবরাহ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানো যায়। এবারের বাজেট এই দুই পথের মিলন ঘটিয়েছে। দ্রব্যমূল্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কিছু দিন পূর্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকোচনমূলক মূদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। যার মাধ্যমে সুদের হার বাজারভিত্তিক করা হয়েছে এবং নতুন পদ্ধতিতে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার। এতে ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল হয়েছে। নতুন করে ডলার সংকট হবার সম্ভাবনা আর দেখা যাচ্ছে না। রিজার্ভ এখন থেকে বাড়তে শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মুদ্রানীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবারের বাজেটে রাজস্বনীতি নির্ধারন করা হয়েছে যাতে কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যয় নিরুৎসাহিত করা হয়েছে, সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচী চলমান রাখা হয়েছে, কর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমদানি বিকল্প উৎপাদন উৎসাহিত করা হয়েছে এবং কৃষি ও শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রণোদনা ও ভর্তুকি চলমানরেখে তার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। বাজেটের এ সকল উদ্যোগ একদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করবে অন্যদিকে রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ বাজেটের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামী অর্থ বছরে মূল্যস্ফীতির গড় ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য পূরণ হবে বলে আশা করি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ইতোমধ্যে সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ি শতভাগ জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। ২০০৯ সালের তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৬ গুনেরবেশি বৃদ্ধি করে বর্তমানে ৩০ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াট করা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এর বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে যার মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানী থেকে উৎপাদন করা হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ হওয়ায় প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুতের জন্য বরাদ্দ ৪ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা কম ধরা হয়েছে। জ্বালানীর আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করার জন্য নিজস্ব গ্যাস উত্তোলনের নিমিত্তে ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৪৯টি কুপ খনন করা হয়েছে। ২০০৯ সালে আমাদের গ্যাসের উৎপাদন ছিল দৈনিক ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট যা বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে। অধিকতর গ্যাস উত্তোলনের জন্য অগভীর সমুদ্রের ২৪টি ব্লকের তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পিএসসি স্বাক্ষর করা সম্ভব হবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে ৬টি মেট্রোরেলের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। বিগত ১৫ বছরে দেশে ৯৪৮ কিলোমিটার নতুনরেললাইন নির্মাণ এবং ১ হাজার ৩৯১ কিলোমিটার পুরনো লাইনের সংস্কার করা হয়েছে। খুলনা হতে মোংলা লাইন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে যা ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ে এবং উপ-আঞ্চলিক করিডোরের একটি বড় অংশ হিসেবে কাজ করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল লাইন নির্মানের কাজ এগিয়ে চলছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এসব কাজ এগিয়ে নেয়ার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০০৯ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে তখনও আমরা ১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতির একটা অর্থনীতি পেয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পরিচালনার দক্ষতার গুণে পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে আমরা সে মূল্যস্ফীতি দমন করে জাতিকে স্থিতিশীল অর্থনীতি উপহার দিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের বিভিন্ন অংশের সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে এবারের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও আমরা সক্ষম হব বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। এই বাজেটে মানুষের মৌলিক অধিকার, কৃষি, দেশীয় শিল্প ও সামাজিক নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যা দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা অতিমারি থেকে শুরু করে চলমান আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট ডলার সংকট এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেও প্রতি বছরই বাংলাদেশ অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি ৫.২ শতাংশ হবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে। তিনি বলেন, মুদ্রানীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে ভারসাম্যমূলক বাজেটের কারণে মুদ্রাস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে এনে আগামী অর্থবছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬.৭৫ শতাংশের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে বলে আমরা আশা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও ডা.মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আজ থেকে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ ভোলার বিএনপি নেতাকর্মীরা কোরআন তেলাওয়াত দোয়া
ভোলায় স্কুল ছাত্রদের ভলিবল প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠিত
ভোলায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ উদ্যোগ বিষয়ক জেলা সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
মনপুরায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে দুইজন গ্রেপ্তার
ভোলা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক
তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ও একদিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেবেন প্রধান উপদেষ্টা
খালেদা জিয়ার মৃত্যু: কাঁদছে বাংলাদেশ
৫১টি দল মনোনয়ন জমা দিয়েছে: ইসি
ভোলায় বিষের বোতল নিয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকা
ভোলায় পাঁচ সন্তানের জননীকে গলা কেটে হত্যা
ভোলার ৪৩ এলাকা রেড জোন চিহ্নিত: আসছে লকডাউনের ঘোষনা
উৎসবের ঋতু হেমন্ত কাল
ভোলায় বাবা-মেয়ে করোনায় আক্রান্ত, ৪৫ বাড়ি লকডাউন
ভোলায় এবার কলেজ ছাত্র হত্যা, মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার
ঢাকা-ভোলা নৌ-রুটের দিবা সার্ভিসে যুক্ত হলো এমভি দোয়েল পাখি-১র
ভোলায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন করোনা রোগী: এলাকায় আতংক
জাতীয় সংসদে জাতির পিতার ছবি টানানোর নির্দেশ
ভোলায় কুপিয়ে হত্যা করে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই, আটক এক