অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


চরফ্যাশনে দূর্গতদের ঘরে ঘরে শুকনো খাবার নিয়ে হাজির ইউএনও


চরফ্যাসন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৯শে মে ২০২৪ রাত ০৯:৪০

remove_red_eye

২৪২

ইসরাফিল নাঈম, শশীভূষণ থেকে : চুলাভর্তি পানি। নেই রান্নার সুযোগ। সব থাকার পরও আজ দু’দিন আমরা না খেয়ে আছি ।  ঘরের ভিটার উপর দিয়ে বয়ে গেছে পানির ঢেউ। খাবারের জন্য ছেলে-মেয়েদের কান্না আর সহ্য করতে পারছি না। নিচে জোয়ারের পানির সাথে মাথার উপরে ঝরতে থাকা অবিরাম বৃষ্টিতে আমরা অসহায় হয়ে পরেছি। তাই একটু খাবারের জন্য ত্রানের লাইনে দাড়িয়েছি। চর-মানিকা আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা রিপা, ফাতেমাদের মতো চরফ্যাসনের বিভিন্ন গ্রামের দূর্গত মানুষের দুর্বিসহ কষ্টের প্রকাশ এমনই।

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে উপজেলার মানিকা, চর-কলমী, নজরুল নগর, জাহানপুর এবং আবদুল্লাহপুরের দূর্গত এলাকা ঘুরে বিভিন্ন স্থানে ত্রানের জন্য অভূক্ত দূর্গত মানুষের ভীর দেখা গেছে। পাশাপাশি মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে প্যাকেট ভর্তি শুকনো খাবার নিয়ে মূল ভূÑখন্ডের এসব দূর্গত মানুষের ঘরে ঘরে ছুটে গেছেন চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নওরীন হক।

সরেজমিনে দেখাগেছে, দূরবর্তী ঢালচর, পাতিলা, মুজিব নগর ইউনিয়নসহ মূল ভূÑখন্ডের বেড়িবাধেঁর বাহিরের মেঘনা, তেতুলিয়া এবং মায়ানদীর কূলের  বসতিগুলো ঘূর্ণিঝড় রিমেলের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। উপজেলা পরিষদের প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী এই উপজেলায় ৬ হাজার বসতঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। অধিকাংশ ঘরের ভেতর দিয়ে জলোচ্ছ্বাসের পানি বয়ে গেছে। ঘরভিটা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি ভারীবর্ষণের কারণে বেশির ভাগ পরিবারে রান্নার চুলা জ্বালানো যায়নি। ফলে সবকিছু থাকার পরও পরিবারগুলোতে খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার দিনভর উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে বিভিন্ন গ্রামের দূর্গত মানুষের মধ্যে জরুরী খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। জাহানপুরের তুলাগাছিয়া, যমুনা আবাসন, কবি মুজাম্মেল হক আবাসন, শের-ই বাংলা আবাসন, বেগম রোকেয়া আবাসন, শুরভী গুচ্চগ্রাম, কর্নফুলি গুচ্চগ্রাম,  আটকপাট কবি মাইকেল মধুসুদন দত্ত গুচ্ছগ্রাম , চর মানিকার মাহবুবা আবাসনসহ বেড়িবাধেঁর ঢালের ৫শতাধিক পরিবারের মধ্যে জরুরী শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নওরীন হক। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত খাদ্য বিতরণ অব্যহত আছে ।

শুকনো খাবার বিতরণ কালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নওরীন হক দূর্গতদের উদ্দেশ্যে  বলেছেন, একজন দূর্গত মানুষ ক্ষুধার্ত থাকাকালে আমি ঘরে ফিরছি না। প্রত্যেক দূর্গত মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দেয়া হবে। দূর্গত কোন মানুষ না খেয়ে থাকবে না। সকলের মুখে খাবার তুলে দেয়ার জন্য সরকারের তরফ থেকে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সরকারের এই প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।