অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বুধবার, ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৭ই পৌষ ১৪৩২


বিশ্বের প্রাণঘাতী অধিকাংশ ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তিস্থল বঙ্গোপসাগর


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৫শে মে ২০২৪ রাত ০৯:১৩

remove_red_eye

২৫০

বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তিস্থল বঙ্গোপসাগর। গত ২০০ বছরে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণ গেছে বাংলার ২০ লাখ মানুষের। মূলত বঙ্গোপসাগরের ত্রিভুজ আকৃতি এবং ভৌগলিক অবস্থানের কারণেই সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে বড় শিকারে পরিণত হয়ে আসছে বাংলাদেশ।

বিশ্বের আবহাওয়া পরিস্থিতির ওপর নজর রাখে এমন একটি ওয়েবসাইট ‘ওয়েদার আন্ডারগ্রাউন্ড’। তাদের বিগত দিনের পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের ইতিহাসে প্রতি দশটি ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের আটটি সৃষ্টি হয় বঙ্গোপসাগরে। নথিবদ্ধ ইতিহাসে ৩৬ টি ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে ২৬ টিরই জন্মস্থান এ সমুদ্রভাগ।এমন বাস্তবতায় উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে আরেকটি ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-৫ এ বলা হচ্ছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ সকাল ৬ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

বিশ্বের প্রধান প্রধান আবহাওয়া মডেল অনুসারে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ রোববার (২৬ মে) সকাল ৬ টা থেকে সোমবার (২৭ মে) দুপুর ১২ টার মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলা থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার মধ্যবর্তী স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে।

বিশ্বের মোট মহাসাগরীয় অঞ্চলের মাত্র শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ স্থান অধিকার করে আছে বঙ্গোপসাগর। কিন্তু এর তটরেখা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ, সমুদ্র উপকূলে বাস করে প্রায় অর্ধশত কোটি মানুষ। তাই ঘূর্ণিঝড়ে হতাহতের ঘটনাও বেশি হয় এ সমুদ্রকে ঘিরে।

বঙ্গোপসাগরে বাড়ছে ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতাবঙ্গোপসাগরে বাড়ছে ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা

ওয়েদার আন্ডারগ্রাউন্ডের তথ্যানুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে তৈরি সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়টি ছিল ১৯৭০ সালের ভোলা ঘূর্ণিঝড়। ওই ঝড়ে দেশের ৩ থেকে ৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। দ্বিতীয়টি ঘটে ১৭৩৭ সালে। ভারত-বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত করা ওই ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় ‘হুগলী নদীর ঘূর্ণিঝড়’। ওই ঘূর্ণিঝড়ে ৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।

বঙ্গোপসাগরে সংঘটিত ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হওয়ার কার জলোচ্ছ্বাস। কখনো কখনো জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ১০ মিটারের বেশি হয়। ভূ-তাত্ত্বিকদের মতে, বঙ্গোপসাগরের ত্রিভুজাকৃতি এবং এর অগভীর তলদেশই ঘূর্ণিঝড়ে জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হওয়ার কারণ।

১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়টি ‘02B’ নামে পরিচিতি। এ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয় উপকূলীয় এলাকা। প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষ মারা যায়। কোটি মানুষ তাদের সর্বস্ব হারায়। ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ের সময় যে জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল তার উচ্চতা ছিল ১০ দশমিক ৪ মিটার বা ৩৪ ফুট।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসে দীর্ঘ ৩২ বছর আবহাওয়াবিদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বর্তমানে অবসর জীবন কাটাচ্ছেন ফরিদ আহমদ। দীর্ঘ দায়িত্ব পালনকালে তিনি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলোর প্রতিনিয়ত খবর রেখেছেন।

আবহাওয়াবিদ ফরিদ আহমদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে অন্য সাগরের তুলনায় বেশি জলোচ্ছ্বাস হয়। বঙ্গোপসাগরের অবতল আকৃতি এ জলোচ্ছ্বাসের অন্যতম কারণ। এছাড়া সমুদ্রের উপরিতল বা সারফেসের তাপমাত্রাও একটি কারণ।’

তিনি বলেন, ‘দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় হলো ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় এবং ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর সর্বোচ্চ ২২৪ কিলোমিটার বেগে চট্টগ্রামের উপকূলে আঘাত হানে। এতে ১০-৩৩ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল। ১৯৯১ সালে ছয়-ঘণ্টার বেশি সময় বাতাস বইতে থাকে। ২২৪ কিলোমিটার বেগে আসা এ ঘূর্ণিঝড়ে ভেসে গিয়েছিল চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের বিমান। এছাড়া ১৯৮৫ সালের উরিরচরের ঘূর্ণিঝড়, ২০০৭ সালের সিডর, ২০০৯ সালের আইলা স্মরণকালের ঘূর্ণিঝড়গুলোর অন্যতম।’

বার্লিনভিত্তিক পরিবেশ গবেষণা সংস্থা (গ্রিন-ওয়াচ) ২০১৯ সালে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবিত দেশগুলোর মধ্যে সপ্তম।

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির মাসভিত্তিক প্রবণতাবঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির মাসভিত্তিক প্রবণতা

সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশের উপকূলে লবণাক্ত পানির ছোবলে বিপর্যস্ত কৃষিকাজ। অন্যদিকে মেরুর বরফ গলে সাগরের উচ্চতা বাড়ছে যেমন, ঠিক তেমনি তাপমাত্রার প্রভাবে সাগরের পানির প্রসারণও বেড়েছে। বেড়েছে ঘূর্ণিঝড় ও লবণাক্ততা।

ওয়েদার আন্ডারগ্রাউন্ডের এক প্রতিবেদনে আবহাওয়াবিদ বব হেনসন উল্লেখ করেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের টেক্সটবুক উদাহরণ হচ্ছে বঙ্গোপসাগর। বঙ্গোপসাগর খুবই উষ্ণ এক সাগর। বিশেষ করে সমুদ্রের উপরিতলের তাপমাত্রা। এ উষ্ণতা বঙ্গোপসাগরে ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্যও দায়ী।’

‘বিশ্বের যে কোনো উপকূলের চেয়ে বঙ্গোপসাগরের উত্তর উপকূল জলোচ্ছ্বাসের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে। একই কারণে এখানে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতিও বেশি। কেননা বিশ্বের প্রতি চারজন মানুষের একজন থাকে বঙ্গোপসাগর উপকূলের দেশগুলোতে।’

 





মনপুরায় খালেদা জিয়ার রুহের মাগফিরাত কামনায় বিএনপির কোরআন খতম ও দোয়া

মনপুরায় খালেদা জিয়ার রুহের মাগফিরাত কামনায় বিএনপির কোরআন খতম ও দোয়া

খালেদা জিয়ার বিশ্বস্ত ছায়াসঙ্গী ফাতেমা এখন ‘একা’

খালেদা জিয়ার বিশ্বস্ত ছায়াসঙ্গী ফাতেমা এখন ‘একা’

মায়ের কবরে তারেক রহমানের শ্রদ্ধা

মায়ের কবরে তারেক রহমানের শ্রদ্ধা

ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশিসহ বিশ্ববাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশিসহ বিশ্ববাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন তারেক রহমান

খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন তারেক রহমান

অশ্রুসিক্ত বিদায়: নজিরবিহীন জনসমুদ্রে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা সম্পন্ন

অশ্রুসিক্ত বিদায়: নজিরবিহীন জনসমুদ্রে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা সম্পন্ন

দেশে এমন জানাজা আগে দেখেনি কেউ

দেশে এমন জানাজা আগে দেখেনি কেউ

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে সমাহিত খালেদা জিয়া

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে সমাহিত খালেদা জিয়া

স্বামীর সমাধির পাশেই: অন্তিম শয্যায় আপসহীন নেত্রী

স্বামীর সমাধির পাশেই: অন্তিম শয্যায় আপসহীন নেত্রী

খালেদা জিয়ার জানাজায় ৩২ দেশের কূটনীতিকদের উপস্থিতি

খালেদা জিয়ার জানাজায় ৩২ দেশের কূটনীতিকদের উপস্থিতি

আরও...