অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ৩রা ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩০


স্মরণীয় বিশ্বকাপের পর আফগানিস্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যত আশা করছেন ট্রট


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১ই নভেম্বর ২০২৩ বিকাল ০৪:৪৫

remove_red_eye

৩১

বিশ্বকাপে নিজেদের ইতিহাসে এ যাবতকালের সবচেয়ে সফল এক যাত্রা শেষে আফগানিস্তান কোচ জোনাথন ট্রট বলেছেন এই দলটির ভবিষ্যত বেশ উজ্জ্বল। 
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫ উইকেটের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করেছে আফগানিস্তান। এই ম্যাচে জয়ী হতে পারলে আফগানদের সেমিফাইনালে কিছুটা আশা হয়তো টিকে থাকতো। যদিও কাজটা মোটেই সহজ ছিলনা। ৪৩৮ রানের বিশাল ব্যবধানে তাদের প্রোটিয়াদের পরাজিত করতে হতো, যা অনেকটাই অসম্ভব। আজমাতুল্লাক ওমরজাইয়ের ৯৭ রানের ভর করে আফগানিস্তান গতকাল ২৪৪ রানে অল আউট হয়। জবাবে ১৫ বল হাতে রেখে ইতোমধ্যেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা দক্ষিণ আফ্রিকার ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে। 
হাশমতুল্লাহ শাহিদীর নেতৃত্বে আফগানিস্তান ভারতের মাটিতে এবারের বিশ্বকাপে যেভাবে নিজেদের প্রমান করেছে তাতে তাদের প্রশংসা করতেই হয়। ৯ ম্যাচে চার জয়ের মধ্যে ছিল সাবেক তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়। 
আফগান কোচ ট্রট বলেন, ‘আমি খেলোয়াড়দের মধ্যে আত্মবিশ্বাস দেখেছি। কিন্তু অনেক সময় এটা দৃশ্যমান না হলে কিংবা মাঠে কেউ সেটা প্রমান করে দেখাতে না পারলে খুব বেশী নিশ্চিত হওয়া যায়না। এই টুর্নামেন্টের আগে আমি বেশ কয়েকবারই বলেছি নিজেদের উপর আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে হলে অন্তত দুটি ম্যাচে জয় প্রয়োজন। আমরা তা করে দেখিয়েছি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ম্যাচ জয়ের পথ খুঁজে পেয়েছি।’
রশিদ খানের নেতৃত্বে আফগানিস্তানের বিশ্বমানের স্পিন আক্রমন সম্পর্কে সকলেই অবগত। পুরো টুর্নামেন্টে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১১ উইকেট শিকার  করেছেন  রশীদ। মোহাম্মদ নবী ও মুজিব উর রহমানও প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে দেয়নি। প্রথম আফগান ব্যাটার হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ইব্রাহিম জারদান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হতাশাজনক পরাজয়ের ম্যাচটিতে জারদান সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন।  
দলের হয়ে ৪৭ গড়ে সর্বোচ্চ ২৭৬ রান নিয়ে জারদান বিশ্বকাপ শেষ করেছেন। বিশ্বকাপে শীর্ষ ১০ জন রান সংগ্রাহকের তালিকায় তার এই রান যথেষ্ট। এই তালিকায় ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ব্যাটারদের আধিপত্য রয়েছে। 
ট্রট বলেন, ‘স্বাভাবিক ভাবে এই ধরনের দলগুলোর বোলিংই বেশী শক্তিশালী থাকে। কিন্তু কিছু কিছু ম্যাচে রান তাড়া করতে গিয়ে সহজেই আমাদের ব্যাটাররা তা ধরে ফেলেছে। বিশেষ করে বড় দলগুলোতে হারানোর ক্ষেত্রে ব্যাটাররা অনেক ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে।’
টিনএজ রিস্ট স্পিনার নুর আহমেদ ও ফাস্ট বোলার নাভিন-উল-হক দলে তাদের উপস্থিতির জানান দিয়েছে। এ সম্পর্কে ট্রট বলেন, ‘অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের উপরই নজড় ছিল বেশী। কিন্তু নাভিনের মত খেলোয়াড়রাও ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন আফগানিস্তানের ভবিষ্যত। তাদের উপর অনায়াসেই আস্থা রাখা যায়। এখন দলীয় ব্যবস্থাপনা, কোচিং স্টাফদের দায়িত্ব তাদের সঠিক পথে পরিচালনা করা। তাদেরকে প্রতিভা বিকাশের সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’
বিশ্বকাপে জয় পাওয়া চার ম্যাচের মধ্যে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়টা ছিল অন্যরকম এক অনুভূতি। আফগানিস্তানের অনেক খেলোয়াড়ই পাকিস্তানের শরণার্থী শিবিরে থেকে ক্রিকেটের তালিম নিয়েছে। সে কারনে তাদের বিপক্ষে জয়টা ছিল বিশেষ এক অর্জন। 
এই বিশ্বকাপের আগে আফগানিস্তান দুই বিশ্বকাপে মাত্র একটি ম্যাচে জয়ী হয়েছিল। ২০১৯ সালে তারা ৯টি ম্যাচের সবকটিতেই পরাজিত হয়েছিল।  
ট্রট বলেন, ‘বিশ্বকাপ আমাদের জন্য কঠিন ছিল। কিন্তু চার জয় অনেক কিছুই পাল্টে দিয়েছে। সে কারনে এবারের আসরটা সবদিক থেকেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই খেলোয়াড়দের আমি কখনই ভুলতে পারবো না।’

সুত্র বাসস