অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


চরফ্যাশনের শসার বাম্পার ফলন ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেনা চাষীরা


এ আর সোহেব চৌধুরী

প্রকাশিত: ২৪শে মার্চ ২০২০ ভোর ০৪:৩২

remove_red_eye

১০৬৪


এআর সোহেব চৌধুরী, চরফ্যাশন : চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চরফ্যাশনে শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলন হওয়ার পরেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনছেন চাষিরা।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হাটবাজারে খুচরা ব্যবসায়িরা ১৫ থেকে ২০ টাকায় শসা বিক্রি করলেও চাষিদের পকেটে যাচ্ছে কেজি প্রতি মাত্র  ২ থেকে ৩টাকা। তাই হতাস হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের শসা চাষিরা। উপজেলা সদরসহ শশিভূষণ,দক্ষিণ আইচা ও দুলারহাটের পাইকারি বাজারেও দেখা গেছে একই চিত্র।

চাষীরা বলছেন, পরিশ্রম ও মূলধন বিনিয়োগ করে শসা উৎপাদন করার পরেও হাত ঘুরেই লাভবান হচ্ছেন পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়িরা। এবছর চরফ্যাশন উপজেলায় আউশ মৌসুমে প্রায় ৭হাজার ৫শত ২ হেক্টর ও রবি মৌসুমে ২হাজার ৮শত ৯০ হেক্টর জমিতে শসার আবাদ হয়েছে। মাদ্রাজ ইউনিয়নের শসা চাষি মো.জসিম উদ্দিন জানান, ২বিঘা জমিতে শসা চাষ করে উৎপাদ ভালো হয়েছ কিন্তু বীজ সার কিটনাশক ও জমি তৈরিসহ শ্রমিক খরচ মিলিয়ে মোট উৎপাদন খরচ হয়েছে প্রায় ৬০হাজার টাকা। অথচ মন প্রতি ১২০টাকা এবং কেজি প্রতি ৩টাকায় এ শসা বিক্রি করতে হচ্ছে তাকে। অথচ প্রতি কেজি শসায় চার গুন উৎপাদন খরচ পড়েছে।
শশিভূষন থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের চাষি মালেক মুন্সি ও দুলারহাট থানার নীলকোমল ইউনিয়নের আঃ আলি, মো.সেলিম ও রফিকুল ইসলাম জানান, ২ থোকে ৩টাকায় প্রতি কেজি ও ১শ থেকে ১২০টাকায় প্রতি মন শসা বিক্রি করলেও পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়িরা হাতিয়ে নিচ্ছেন অধিক মুনাফা। তারা আরোও জানান, এবছর শসার উৎপাদন বেশি হওয়ায় কানি প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চরফ্যাশন কাঁচা বাজারের আড়ৎ থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার মণ শসা ক্রয় বিক্রয়সহ ভোলা-বরিশাল,ল²িপুর,নোয়াখালি,ঢাকা,চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি হচ্ছে। পাইকাররা জানান, উপজেলার ২২টি ইউনিয়নসহ মনপুরা উপজেলা এবং পটুয়াখালির গলাচিপা,দশমিনাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রচুর পরিমানে শসা আসছে চরফ্যাশনের পাইকারি বাজারে। এবছর প্রচুর পরিমানে শসা উৎপাদন হওয়ায় আমদানি বেশি কিন্তু করোনা ভাইরাসের জন্য রপ্তানি কম। প্রথম প্রথম একটু বেশি মূল্যে ক্রয় বিক্রয় হলেও শেষ সময়ে প্রচুর পরিমানে শসা আসার ফলে দাম কমে গেছে। তারা আরোও বলেন, এলাকায় যদি কাঁচা তরিতরকারি সংরক্ষণে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা থাকতো তাহলে কাঁচামাল সংরক্ষনের মাধ্যমে কৃষকের লক্ষ লক্ষ টাকার পরিমান ক্ষতি কমে যেতো। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসনাইন আহমেদ বলেন, চলতি মৌসুমে অন্যান্য বছরের তুলনায় শসার প্রচুর চাষাবাদ হয়েছে। এছাড়াও রোগবালাই কম হওয়ার ফলে শসার উৎপাদন বেশি হয়েছে। কৃষক পরিশ্রম করে ফলন উৎপাদন করারা পরেও যদি বাজারে উপযুক্ত দাম না পায় তবে তারা কৃষি আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে।