অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বৃহঃস্পতিবার, ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ | ১৬ই কার্তিক ১৪৩১


চরফ্যাশনে বাগদা চিংড়ি রেনু আহরণ ধ্বংস হচ্ছে নানা প্রজাতির পোনা


চরফ্যাসন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১শে মার্চ ২০২০ ভোর ০৪:০৯

remove_red_eye

১০৫৮


এ আর সোহেব চৌধুরী , চরফ্যাশন :  ভোলার চরফ্যাশনের মেঘনা,তেঁতুলিয়া ও সাগর উপকূল থেকে অবৈধভাবে বিভিন্ন চর-চরাঞ্চলের জেলেরা অবাধে গলদা ও বাগদা চিংড়ির রেনু আহরণ করছে। চিংড়ির এ রেনু আহরণের কারনে প্রতিয়িতই ধ্বংস হচ্ছে নানা প্রজাতির জলজ প্রাণী ও মাছের পোনা।
 খোঁজ নিয়ে জানা যায়,উপজেলার বেতুয়া লঞ্চঘাট, বেতুয়া স্লুইজ নতুন ¯øুইজগেট,সামরাজ মৎস ঘাট,হাজারিগঞ্জ আট কপাট,পাঁচ কপাট,মাইনুদ্দিন মৎসঘাট,খেজুরগাছিয়া,ঘোসেরহাট,দক্ষিন আইচা চর- কচ্ছপিয়া,এক কপাট ¯øুইজঘাট,মাইনকা খালের মাথা,ঢালচরের সাগর উপকূলসহ তারুয়া চরের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে প্রতিদিন চিংড়ির লক্ষ,লক্ষ রেনুপোনা আহরণ করছে নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। মার্চের শেষ সময় থেকে শুরু করে জুলাই পর্যন্ত প্রায় পাঁচ মাস ধরে চরফ্যাশনের উপকুলীয় অঞ্চলের প্রায় ৬ হাজার নারী পুরুষ,শিশু,বৃদ্ধসহ জেলেরা মিলে শুধু চিংড়ি রেনু আহরন করেই জিবীকা অর্জন করছেন।  প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় প্রজনন মৌসুম ও সরকারি নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই অবাধে চিংড়ি রেনুসহ অন্যান্য মাছ শিকার ও ক্রয় বিক্রয় করছেন এসব জেলেরা। বেতুয়া এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে রেনু আহরণকারিরা মশারি জাল ও ঠেলা জালে আটকানো অন্যান্য মাছের পোনা ও জলজ প্রানী ফেলে দিয়ে শুধু গলদা ও বাগদা চিংড়ির রেনু সংগ্রহ করছে।
সূত্রে জানা গেছে এসব চিংড়ীর রেনু প্রভাবশালী মহল চড়া দামে ক্রয় করে প্লাস্টিকের ড্রাম ও মাটির টালিতে করে খুলনা,বাগেরহাট,ঢাকা,চট্টগ্রাম ও যশোরের বিভিন্ন চিংড়ির ঘেরে অধিক মুনাফায় বিক্রি করছে। গোপন সূত্রে জানা যায় মৎস বিভাগের কতিপয় ব্যাক্তি মৎস ব্যবসার সাথে জরিত কয়েকটি মহল থেকে এবং কমবেশি প্রতি ট্রলার থেকে মাসিক চাদাঁ কালেকশনের মাধ্যমে এ উপজেলা থেকে জাটকা ইলিশসহ প্রতিদিন বিভিন্ন রুটে লক্ষাধীক চিংড়ি রেনু পাচারে সহযোগীতা করছে। আসলামপুর এলাকার মো. হৃদয় ইসলাম (১৮) জানান, তিনি ঢাকায় রডের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন, বাগদা রেনু আহরণের জন্য প্রতিবছর এ মৌসুমে চলে আসেন, তিনি আরোও জানান, এক ইঞ্চি থেকে দুই ইঞ্চি বাগদা ও গলদা চিংড়ি রেনুর শত (একশ পিস) ১শ থেকে ২শ টাকায় মহাজনদের কাছে বিক্রী করা হয়। একই এলাকার বিবি আয়শা বেগম (৫০) বলেন, আমি ও আমার ছেলে প্রতিবছর এ রেনু আহরণ করে বিক্রি করি। অভাবের সংসার তাই বেড়িবাধের কিনারায় বাস করি এবং অবৈধ জেনেও পেটের দায়ে এ কাজ করছি।
আসলামপুর আয়শাবাগ এলাকার নাজিম (২৯) বলেন, তিনি প্রতিবছরের এ মৌসুমে বেতুয়া,পুরান স্লুইস ও নতুন ¯øুইসগেট এলাকায় চিংড়ির রেনু সংগ্রহ করে শত প্রতি ৬০ থেকে ১শ টাকায় বিক্রি করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আড়তদার বলেন, এ চিংড়ির রেনু প্রতি পিস এক ইঞ্চি থেকে একটু বড় সাইজের রেনুগুলো  ২থেকে আড়াইটাকায় কিনলেও সব কিছু ম্যানেজ করে প্রতি পিস রেনুর দাম পড়ে  ৪ থেকে ৫টাকা। স্থানীয়রা বলছেন মৎস্য বিভাগকে ম্যানেজ করেই অবাধে ধ্বংস করা হচ্ছে বিভিন্ন মাছের পোনার সঙ্গে চিংড়ির রেনুসহ জলজ সব উদ্ভিদ ও প্রানী। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন বলেন, আমরা তথ্য পেলেই এ রেনু উদ্ধারসহ আসামিদের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সাজা দিয়ে দেই। আর এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশাসনের কেউ যদি চাঁদা কালেকশন করে তবে তাদের বিরুদ্ধে তথ্য পেলেই আইনানুগ ব্যবস্থ্যা নেওয়া হবে।