অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


ভোলায় বুলবুলের তান্ডবে শতাধিক ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২ই নভেম্বর ২০১৯ রাত ০১:০০

remove_red_eye

৯৭৬

হাসিব রহমান, ভোলার চর কলমি থেকে ফিরে : নিলুফার বেগম। তার স্বামী শহিদুল একজন ঘাঠ শ্রমিক। ঝড়েরর রাতে তার স্বামী ছেলে,বউসহ ৬ জন ছিলো। তাদের ঘরে যা ছিলো হাড়ি পাতিল সব নিয়ে গেছে। খাওয়ার বাটি খোড়া কিছুই নেই। ঝড়ের সাথে লড়াই করে কোন রকমে জীবন বাঁচলেও অনেকেই আহত হয়েছেন। কিন্তু ভিটে মাটি ছাড়া তার পরিবারের কিছুই নেই। চরফ্যাসন উপজেলার চরকলমী ইউনিয়নের চর মঙ্গল গ্রামে সরেজমিনে গেলে ঘূর্নিঝড় বুলবুলের তান্ডবে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করা নিলুফার বেগমের পরিবারের চরম দুভোর্গ বিপাকের চিত্র বর্ননা করেন। তিনি কান্ন জরিত কন্ঠে আরো বলেন, তার ২ ছেলে নদী মাছ ধরে। তারা ২০ কেজি চাল ও মুরি পেয়েছেন। তাদের পক্ষে সরকারি সহায়তা না পেলে ঘর নির্মান করা সম্বব নয়। শুধু নিলুফাই নয় তার মতো এখনো বহু পরিবার ওই এলাকায় খোলা আকাশের নিচে চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। চরফ্যাসনের চর কলমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাওসার আহমেদ জানান, এই ইউনিয়নের প্রায় ৩৭ ঘর সম্পূর্ন বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রায় ৪০টি পরিবার অর্ধেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারের কাছে দ্রæত ওই ঘর পুন: নির্মানের দাবী জানান।
ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডবে গত শনিবার রাতে উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন ও চরফ্যাসন উপজেলার কয়েকটি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। বিধ্বস্ত হয়েছে অন্তত শতাধিক পাঁকা কাঁচা ঘর বাড়ি। ভোলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্নিঝড় বুলবুলের আঘাতে লন্ডভন্ড গ্রাম গুলোতে বিধ্বস্ত পরিবার গুলো এখনো খোলা আকাশের নিচে অসহায় অবস্থায় চরম দুর্ভোগে রয়েছে। শনিবার রাতে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডবে উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন ও চরফ্যাসন উপজেলার কয়েকটি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এতে স্থানীয় হিসাবে অন্তত দের শত বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোকে চাল আর শুকনো খাবার মুরি দেয়া হয়। কিন্তু পরিবার গুলোকে পুনবাসন করা না হলে তাদের পক্ষে ঘুরে দাড়ানো সম্ভব নয়।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাত ৯ টার পর থেকে ভোলার লালমোহন ও চরফ্যাসন উপজেলার উপর দিয়ে প্রবল বেগে জড়ো বাতাস ও দমকা হাওয়া বইতে থাকে। রাত সাড়ে ৯ টার দিকে লালমোহনের চরউমেদ ইউনিয়নের গজারিয়া বাজারের বটতলা গ্রামে ৩০ থেকে ৫০ সেকেন্টের টনের্ডোর আঘাতে প্রায় ৩০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এর মধ্যে ১৭ ঘর সর্ম্পূন বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রায় একই সময়ে লালমোহনের লডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের পেয়ারিমোহন গ্রামে ঘুর্নিঝড়ে ১০ ঘর বিধ্বস্থ হয়েছে। পরিবার গুলো এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। এ সময় অন্তত ১৫ জন ঘর চাপা পড়ে আহত হয়। এদেরকে ভোলা সদর,চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে রবিবার বেলা সাড়ে ১২ টায় লামোহন উপজেলা চেয়ারম্যন গিয়াসউদ্দিন আহম্মেদ,লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান রুমি লালমোহনের গজারিয়া বাজারের বটলতলা এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তারা বলেন,টনের্ডোর আঘাতে বটতলা এলাকার ৩০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি ঘর একেবারে বিধ্বস্ত হয়েছে। তাদেরকে ত্রান সামগ্রী চাল খাবার বিতরন করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক সহায়তা করা হবে।
অপর দিকে ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে প্রায় এক শত ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুটি উপড়ে পড়েছে। যার কারনে লালমোহন ও চরফ্যাসনের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও ভোলা জেলা বিভিন্ন স্থানে বহু গাছ পালা উপরে পড়েছে।
ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানান, প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনে তারা তালিকা করছেন। প্রাথমিক ভাবে ৬৫টি ঘর ক্ষতি হয়েছে। ২ বান্ডিল টিন ,৬ হাজার টাকা এবং ২০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে।