অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


বোরহানউদ্দিনে ৫ দিনে দেড় শতাধিক ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত


বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮ই জুলাই ২০২৩ রাত ০৯:০৫

remove_red_eye

২৮৫

বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি: ভোলার বোরহানউদ্দিনে এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে ডাবল সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর তথ্যমতে মঙ্গলবার পর্যন্ত গত ৫ দিনে দেড় শতাধিক রোগীর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। ডেঙ্গু টেস্টে দেড় শতাধিক রোগী শনাক্ত হলেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সর্বোচ্চ ২৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। দিন যতই যাচ্ছে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে পজেটিভ শনাক্ত হলেও বেশীর ক্ষেত্রে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাসা-বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে অবস্থা শংকটাপন্ন হওয়ায় ২-৪ জন সরাসরি ঢাকায় যাবার তথ্য  পাওয়া গেছে। ওই রোগীদের মধ্যে সোমবার উপজেলা বড়মানিকা ইউনিয়নের ১ নাম্বার ওয়ার্ডের আনোয়ার নামের ১ যুবকের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে।

জ্বরে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগী টেস্ট না করে পল্লী চিকিৎসক কিংবা ফার্মেসী থেকে এন্টিবায়োটিক ও প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ ক্রয় করে চলে বাসা-বাড়িতে থাকছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক(আরএমও) ডা. মেহাম্মদ তারেক জানান, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জন্য এন্টিবায়োটিক ঝুঁকির পরিমান আরও বাড়িয়ে দেয়। তিনি আরও জানান, গত ৩ দিনে ৩২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ২১ জন ছাড়পত্র নিয়ে চলে গেছে। রোগীদের মধ্যে ১৫ জন পুরুষ, ১২ জন নারী ও ৫ জন শিশু। আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে রোগী ও তাঁদের স্বজনরা জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে ডেঙ্গুর বিষয়টি বুঝতে না পারলেও ধীরে ধীরে সমস্যা প্রকট হওয়ায় হাসপাতালে এসেছেন। এর আগে ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনে খেয়েছেন। বোরহানউদ্দিন ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আজম বাকলাই ও সিনিয়র সহ-সভাপতি আকবর হোসেন মানিক জানান,জ্বর নিয়ে আসা রোগীরা শরীরে অল্প ব্যাথা আর গায়ে গায়ে জ্বর বলে ফার্মেসীতে ঔষধ দিতে বলেন। আমরা ডেঙ্গু টেস্টের কথা বললে,অধিকাংশরা টেস্ট করতে অনিহা প্রকাশ করেন। তারা অল্প ঔষধ নিয়ে চলে যায়। আবার গ্রাম এলাকায় অধিকাংশ মানুষ পল্লী চিকিৎসকদের কাছ থেকে ঔষধ কিনে চলে যান।

বোরহানউদ্দিনের হাসপাতালে সামনের ৭ টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৪ দিনে তাদের ল্যাব টেস্টে ১২৪ জনের মত ডেঙ্গু পজেটিভ রোগী শনাক্ত করেছেন।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নিরুপম সরকার বর্তমানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা উর্ধ্বমুখী। হাসপাতালে কোন প্রতিন্ধকতা ছাড়াই রোগীদের চিকিৎসা দেয়া যাচ্ছে। এছাড়া ডেঙ্গুর তিনটি পরীক্ষা এনএস-১ এন্টিজেন, আইজিএম এন্টিবডি, আইজিজি এন্টিবডি মাত্র ৫০ টাকা সরকারি ফি নিয়ে করা হয়। ভর্তির হার কম বিষয়ে তিনি বলেন, ডেঙ্গু সংশ্লিষ্ট  শারীরিক জটিলতা কিংবা প্লাটিলেটগত  সমস্যা না হলে  রোগীরা হাসপাতালে আসে না। তিনি আরও বলেন,একজন সুস্থ মানুষের প্রতি ঘন মিলিমিটার রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ দেড় থেকে চার লাখ থাকা উচিত। ডেঙ্গু হলে এই মাত্রা দ্রæত কমে গিয়ে দেহে রক্তক্ষরণ ও নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দেয়। তখন আমরা রোগীকে ঢাকা,বরিশাল প্রেরণ করি।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যবস্থাগ্রহণ প্রসঙ্গে বোরহানউদ্দিন পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিরোধে জনসাধারণের সচেতন হওয়াটা জরুরী। পৌরসভার পক্ষ থেকে পৌর এলাকায় পরিচ্ছন্নতার উপর জোর দেয়াসহ নিয়মিত মশক নিধনের ঔষধ ছিনানো হচ্ছে। এছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগ নির্দেশিত জনসচেতনতামূলক মাইকিং অব্যাহত আছে।