অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


লালমোহনে অর্ধশত গৃহহীন পরিবারের মানবেতর জীবন


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২ই নভেম্বর ২০১৯ রাত ১০:২১

remove_red_eye

৭৭৯

 

 

আনোয়ার রাব্বি: ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ঘরবাড়ি হারিয়ে ভোলার লালমোহনে অর্ধশতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এসব পরিবার এখন আত্মীয় স্বজন আর পাড়া-প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয়ে আছেন। অনেক পরিবার খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার শূন্য ভিটায় টঙঘর তুলে কোনোমতে আশ্রয় নিয়েছেন। শূন্যভিটায় পুনরায় ঘর তুলতে সরকারের সাহায্য-সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন তারা। এদিকে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত পরিবারগুলোকে গৃহনির্মাণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন। তিনি এমপি হিসেবে এক মাসে যে সম্মানী পান তা এলাকার দুর্গতদের জন্য অনুদান হিসেবে দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন। তবে গতকাল মঙ্গলবার সরকারের পক্ষ থেকে ঘর তোলার জন্য ২ বান্ডিল করে টিন এবং নগদ ৬ হাজার টাকা করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক।
গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের চরপ্যায়ারীমোহন ও পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নে নবগ্রাম এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কেউ কেউ বসতভিটার ওপর থাকা থাকা ধ্বংসম্ভুপ সরিয়ে নিচ্ছে। কিছু পরিবার টংঘর তুলছে রোদ বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে। উপড়ে পড়া গাছপালা কেটে অপসারণ করতে দেখা গেছে অনেককে। লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের চর প্যাচারীমোহন গ্রামের মোহাম্মদ আলী, মোস্তফা ও নাসিরের ভিটার ঘরের চিহু পর্যন্ত নেই। শুধু বেড়া পড়ে আছে । ঘরের মধ্যে থাকা কিছু আসবাস ছড়িয়ে চিটিয়ে রয়েছে।
চর প্যায়ারীমোহন এলাকার মোহাম্মদ আলী জানান, তার স্ত্রী চিকিৎসার জন্য লালমোহন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। হাড়িঁ-পাতিল উড়িয়ে নিয়ে গেছে । রান্নার চুলাও নেই। মুড়ি চিড়া গুড় খেয়ে আছেন। মোস্তফার ভিটার ঘরের চিহৃ পর্যন্ত নেই। এই পরিবারের ৫ সদস্যই ভোলা ও লালমোহন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এলাকায় কেউ না থাকায় শূন্য ভিটা পড়ে রয়েছে। একই অবস্থা উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের নবগ্রাম ও সৈনিক বাজার এলাকায়। নবগ্রামের লক্ষণ চন্দ্র শীল, আব্দুর রশিদ মাল, এমরান মাল বলেন, কাজ নেই,হাতে টাকাও নেই। ঘর তুলতে অনেক টাকা লাগবে। যদি সরকার টিনের ব্যবস্থা করত, তাহলে আপাতত চাল তুলে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হতো।
লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিয়া জানান, ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অধিকাংশই দরিদ্র। গৃহহারা মানুষের পুনর্বাসনের জন্য তিনি ব্যাক্তিগতভাবে তাৎক্ষণিক সহায়তা করছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক জানান, ক্ষতিগ্রস্ত গৃহহারা পরিববারকে দুই বান্ডিল করে টিন, নগদ ৬ হাজার টাকা ও ২০ কেজি চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া সম্পূর্ণ বিধ্বস্তদের পরিবারের জন্য গৃহনির্মাণে সহায়তা করা হবে।