অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


লালমোহনে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ সচেতনতাই প্রতিরোধের পথ


লালমোহন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭ই জুলাই ২০২৩ রাত ১০:৪০

remove_red_eye

২১২

লালমোহন প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহনে গত কয়েকদিন ধরে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে গত ১৬ দিনে অন্তত ৩০জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া প্রতিদিন কমপক্ষে ৫-৭জন রোগী ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। আর ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সেবা নিচ্ছেন ১২ জনের মতো রোগী। ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে রোগীর চাপ বাড়ায় বেড সংকটে অনেককে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে ফ্লোরে।
জানা গেছে, শরীরে ১০১ থেকে ১০৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় জ্বর ও শরীর ব্যথাই ডেঙ্গু আক্রান্তদের প্রধান লক্ষণ। এছাড়া ডেঙ্গু রোগীদের পেট ফুলে যাওয়া, রক্তবমি, মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ এবং শরীর ঠান্ডা অনুভব করাসহ আরো বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রæত সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করার আহবান চিকিৎসকদের।
লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন গজারিয়া এলাকার ৩৫ বছর বয়সের যুবক মো. মহসিন। তিনি বলেন, প্রথমে প্রচন্ড কোমড় ব্যথা হয়। এরপর ধীরে ধীরে পুরো শরীর ব্যথা করতে শুরু করে। সঙ্গে দেখা দেয় প্রচুর জ্বরও। এনিয়ে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ খেলেও কোনোভাবেই ব্যথা আর জ্বর না কমায় হাসপাতালে আসি। এখানে আসার পর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। এ জন্য হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি।
প্রচন্ড জ্বর নিয়ে উপজেলার লালমোহন ইউনিয়নের ফুলবাগিচা পূর্ব রাস্তার মাথা থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম। তখন ডাক্তার ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে বলে। এরপর টেস্ট করলে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। তাই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি।
ভর্তি অনেক রোগীর অভিযোগ অতি গুরুত্বপূর্ণ যেসব ওষুধ প্রয়োজন তা হাসপাতালে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই সেগুলো বাহিরের ফার্মেসি থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। এতে করে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের।
লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং সুপারভাইজার দিপালী রাণী দে জানান, জরুরি বিভাগ থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের ভর্তির পর বেডে পাঠানো হয়। এরপর আমাদের নার্সরা তাদেরকে আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দেন। প্রতিদিন রোগী বাড়ায় বেড দেওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে অনেক রোগীকে ফ্লোরে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. অতনু মজুমদার বলেন, জুলাই মাসের প্রথম থেকে লালমোহনে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে শুরু করেছে। তবে আমরা সাধ্য অনুযায়ী রোগীদের আন্তরিকতার সঙ্গে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা প্রদান করছি। এছাড়া রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত যেসব ওষুধ রয়েছে তা হাসপাতাল থেকে প্রদান করা হয়।
এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরো বলেন, ডেঙ্গু থেকে মুক্তির জন্য সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। সকলকে নিজের জন্য হলেও বাসা-বাড়ির আঙিনা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে কোথায়ও যেন বেশি দিন পানি জমে না থাকে। পানি জমে থাকলে সেখানে মশার উৎপত্তি হয়। এছাড়া সকলকে অবশ্যই মশুরি টানিয়ে ঘুমাতে হবে। তাহলেই ডেঙ্গু আক্রান্ত থেকে অনেকাংশে রক্ষা পাওয়া যাবে।





আরও...