অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বৃহঃস্পতিবার, ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ | ১৬ই কার্তিক ১৪৩১


চরফ্যাশনে সিন্ডিকেটের ফাঁদে সরকারি ধান ক্রয়


চরফ্যাসন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৮শে ফেব্রুয়ারি ২০২০ ভোর ০৪:৫৩

remove_red_eye

৬৬৮




চরফ্যাশন প্রতিনিধি : ভোলার চরফ্যাশনে দুইটি খাদ্যগুদামে ৬ হাজার ৮শ টন ধানক্রয়ের প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও এখানে সাধারণ কৃষকের ধান বিক্রির সুযোগ নেই। গুদাম কর্তৃপক্ষের সাথে প্রভাবশালীদের নিয়ে গড়ে উঠা একটি সিন্ডিকেটের সমঝোতায় ধানক্রয়ের ফলে সাধারন কৃষকরা সরকার নির্ধারিত দামে ধান বিক্রয়ের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সিন্ডিকেট সদস্যদের এই অনৈতিক সুবিধা দিয়ে গুদাম কর্তৃপক্ষ কৃষকদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উপরী হাতিয়ে নিচ্ছেন। সাধারণ কৃষকরা গুদামের ধানক্রয় প্রক্রিয়ার মাঠ পর্যায়ে তদন্তের দাবী জানিয়েছেন।
খাদ্যগুদামের দেয়া তথ্যানুযায়ী, সরকার নির্ধারিত প্রতিকেজি ২৬ টাকা দরে শশীভূষণ খাদ্যগুদামে ৩ হাজার ২শ ৫২ টন এবং মুখারবান্দা খাদ্যগুদামে ৩ হাজার ৫শ ৯৬ টন ধান ক্রয়ের প্রক্রিয়া চলছে । ১ জানুয়ারী থেকে এই ধানক্রয় শুরু হলেও বহস্পতিবার পর্যন্ত শশীভূষণ খাদ্যগুদামে ১৭শ৫০ টন এবং মুখারবান্দা খাদ্যগুদামে ১৫শ ৩৯ টন ধানক্রয় করা হয়েছে । ধানক্রয় চলবে ফেব্রæয়ারী মাসের শেষদিন পর্যন্ত। শশীভূষণ খাদ্যগুদাম এলাকার নির্বাচিত ১ হাজার ১শ এবং মুখারবান্দা খাদ্যগুদাম এলাকার ১ হাজার ১শ ৫০জন কৃষক থেকে এই ধানক্রয় করার কথা রয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ প্রভাবশালীদের নিয়ে গড়ে উঠা একটি সিন্ডিকেটের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে টনপ্রতি ৩ হাজার  টাকা উপরী নিয়ে সিন্ডিকেট থেকেই এই ধানক্রয় করে গুদাম ভরছে। ফলে স্থানীয় কৃষকরা সরকার নির্ধারিত ২৬ টাকা কেজি দরে গুদামে ধানবিক্রির সুযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। কৃষকদের অভিযোগ, হাতেগোনা কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি গুদামে ধানবিক্রির সুযোগ নিয়েছে। এসব প্রভাবশালী ব্যক্তিরা গুদামে একশ, দেড়শ বা ২শ টন করে ধান দিচ্ছে। ভোলা জেলার বাহিরে দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে ধানগুলো ক্রয় করে গুদাম এলাকার বিভিন্ন মাঠে রেখে প্রক্রিয়া শেষে সিন্ডিকেটের সদস্যরা ধানগুলো গুদামে বুঝিয়ে দিচ্ছে। ফলে স্থানীয় কৃষকরা সরাসারি গুদামে ধানবিক্রির সুবিধা পাচ্ছেন না। এমনকি একটু বাড়তি দামে  সিন্ডিকেট সদস্যদের কাছেও  ধানবিক্রির সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন কৃষক।
এওয়াজপুর ইউনিয়নের মৌসুমী লটারীর মাধ্যেমে নির্বাচিত কৃষক কামাল হোসেন জানান, আমার নামের কৃষিকার্ড স্থানীয় আলতাফ হোসেন নামে একজন ব্যাক্তি নিয়ে গেছে। আমিও আমার উৎপাদিত ধান ন্যয্য মুল্যে বিক্রি করতে পারিনি।
কৃষিকার্ড প্রাপ্ত কৃষক কবির হোসেন জানান, আমার কৃষিকার্ড থাকা সত্বেও আমার ধান গুধামে বিক্রি করতে পারিনি। স্থানীয় নেতারা প্রকৃত কৃষকের ধান ক্রয় না করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান ক্রয় করেন। প্রকৃত কৃষকরা ধান নিয়ে বিপাকে আছেন। মুখারবান্দা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শৈলেন চন্দ্র দাস জানান,উপজেলা পরিষদ থেকে লটারীর মাধ্যেমে কৃষক নির্ধারন করে যে তালিকা দেয়া হয়েছে সে তালিকা অনুযায়ী খাদ্য গুদাম ধান ক্রয় করছে।
উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম জানান, খাদ্যগুদামের চাহিদা তুলনায় ধান উৎপাদন বেশি হয়েছে। তাই সকল কৃষিকার্ড প্রাপ্ত কৃষক থেকে ধান ক্রয় করা সম্ভব হচ্ছেনা। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান ক্রয় করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, লটারীতে কৃষক নির্ধারন করে ন্যয্য মূল্যে ধান ক্রয় করা হচ্ছে। লটারীতে নির্ধারিত  কৃষকদের মধ্যে থেকে ও অনেক কৃষকের ধান ক্রয় করা যাচ্ছেনা বলে বঞ্চিতকৃষকরা  এমন অভিযোগ তুলছেন।