মলয় দে: ভোলায় বিবা'র মানবতার দেয়াল যেনো মানবতার এক নতুন উদাহরন।নিত্য নতুন কায়দায় অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর মাধ্যমে তাদের মানবতার শাখা-প্রশাখা যেনো বেড়েই চলছে।ভোলা শহরের যুগীরঘোল এলাকায় বিবা'র মানবতার দেয়াল নামক এই প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত।দি বেস্ট ইনিশিয়েটিভ অব ভোলা এসোসিয়েশন এর আয়োজনে এখানে অসহায় মানুষের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের নতুন ও পুরাতন পোশাক।যে যার প্রয়োজন মতো সেখান থেকে এই পোশাক নিয়ে যাচ্ছে।আবার যাদের অনেক আছে তারা রেখে যাচ্ছে।তার পাশাপাশি স্থায়ী কর্মসংস্থানের জন্য তুলে দেয়া হয়েছে দোকান ও দোকানে বিক্রিযোগ্য নানা সামগ্রী।সামান্য বিনোদনের জন্য রয়েছে দেয়ালিকা।যেখানে প্রতিদিনের স্থানীয় দৈনিক ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকা লাগানো থাকে।পথচারীরা ইচ্ছে হলেই চোখ বুলিয়ে নিতে পারে পত্রিকাগুলোতে।সবচেয়ে বেশী যেটি প্রভাবিত করে অসহায় মানুষদের তা হলো প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার এখানে বিভিন্ন ধরনের সবজি ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।যা ভোলায় এখন পর্যন্ত নজিরবিহীন একটি বিষয়। ওই দিনগুলোতে ৫০ এর অধিক পরিবারকে এই সহায়তার আওতায় আনা হয়।অসাধারণ এই বিষয়টি নজর কেড়েছে অনেক বিত্তবানদের।তাই প্রতি শুক্রবার অসহায় এই মানুষ গুলোর পাশে দাড়াতে যে যার মতো সহায়তার হাত বাড়াতে ছুটে আসে এই বিবা'র মানবতার দেয়ালে।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ১৬ ই জুন বিবা'র মানবতার দেয়ালে এসেছেন জেলা পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম, বিপিএম,পিপিএম, পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশরাফ হোসেন লাবু,পুলিশ কর্মকর্তা ডিআই ওয়ান খাইরুল কবির,প্রেসক্লাব সম্পাদক অমিতাভ অপু, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিন ফকির।
উপস্থিত সকলে দাড়িয়ে থেকে অসহায় মানুষ গুলোর হাতে বিবা'র মানবতার দেয়ালের পক্ষ থেকে কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেন।সেই সাথে অন্যের প্রয়োজনে কিছু পোশাক রেখে যান।
বিবা'র মানবতার দেয়াল প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন,আমি উদ্বোধনের পর থেকে বিবা'র মানবতার দেয়ালটি অবজারভেশনে রেখেছিলাম। বিবা'র মানবতার দেয়ালটি দেখলাম আগের চেযে়ও বেশি প্রাণবন্ত ভাবে তারা কাজ চালিযে় যাচ্ছে।আসন্ন কোরবানি ঈদে বিবা'র মানবতার দেয়ালের পক্ষ থেকে মাংস বিতরণে আমরাও সাপোর্ট দিবো।আমি না থাকলেও আমাদের এই সহযোগিতা মানবতার দেয়ালের প্রতি থাকবে।কারণ পুলিশ সবসময়ই মানবতার পাশে দাড়ায়।আমরা আশা করব মানবতার দেয়ালটি ভোলা পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চালু হোক।
বিবা'র মানবতার দেয়ালটি নিয়ে যে সব সময় ভাবে এবং যার চিন্তা চেতনা ও নিরলস শ্রমে এই কার্যক্রম গুলো সুন্দর ভাবে পরিচালিত হচ্ছে তিনি এই ভোলার সুপরিচিত একজন ব্যক্তি মনিরুল ইসলাম। পেশায় একজন শিক্ষক ও সাংবাদিক।সেই সাথে একজন সফল ব্যবসায়ীও।তার নিজ উদ্যোগে গড়ে ওঠে এই বিবা'র মানবতার দেয়াল।নিজের সাধ্য মতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অন্যের প্রয়োজনে।তার এই মানবতার দৃষ্টান্ত দেখে অন্য সকলের মনে নাড়া দেয় সহযোগীতার হাত বাড়ানোর জন্য।এর পর থেকেই সমাজের বিভিন্ন বিত্তবানরা প্রতি শুক্রবার এখানে চলে আসে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে।
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলাম জানায়,ভোলায় ২০০৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় যারা জিপিএ -৫ পেয়েছিলো তাদের সংবর্ধণা দেয়ার মধ্যে দিয়েই আমাদের এই পথচলা শুরু।এরপর করোনা কালীন সময় থেকেই বিভিন্ন ভাবে আমরা মানবতার দেয়াল এর মাধ্যমে মানবিক কাজে সহযোগিতা করে আসতেছি।সারা দেশে যখন করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় ওই সময় ভোলায় সর্বপ্রথম আমরা হাত ধোয়া কর্মসূচি চালু করি। পরবর্তীতে আমরা এই বিবা'র মানবতার দেয়াল চালু করি।
মানবতার এই দেয়ালটির ধারাবাহিকতা রক্ষায় সকলের সহযোগিতা আমাদের একান্ত কাম্য। সহযোগীতা পেলে প্রতিটি এলাকায় এর শাখা খোলা যাবে।এতে করে অসহায় মানুষগুলোর মুখে আমরা একটু স্বস্থির হাসি দেখার সুযোগ পাবো।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার ট্রেজারার মোস্তফা কামাল,ভোলা সদর পৌরসভার প্রকৌশলী মোহাম্মদ অনিক,ভোলার বাণী সম্পাদক মাকসুদুর রহমান প্রমুখ।