অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


পরিবেশ দূষণে যেসব কঠিন রোগের ঝুঁকি বাড়ছে


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ৬ই জুন ২০২৩ বিকাল ০৫:০৫

remove_red_eye

১৩৬৬

পরিবেশ দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে সবারই কমবেশি জানা আছে। তবুও মানুষের অসচেতনতার কারণেই পরিবেশ ক্রমাগত দূষিত হচ্ছে। বৈশ্বিক উন্নয়ন, ক্রমাগত শিল্পায়ন ও জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি পরিবেশ দূষণ বাড়াচ্ছে।

এছাড়া পরিবেশগত পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে প্রধান বৈশ্বিক সমস্যা যেমন- জলবায়ু পরিবর্তন, ওজোন হ্রাস, বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য হ্রাস, প্রাকৃতিক সম্পদের অবক্ষয় ও ভূমির অবক্ষয় অন্তর্ভুক্ত।

যেহেতু মানুষের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ পরিবেশের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে, এ কারণে দূষণের মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দেয়। পরিবেশ দূষণ একটি সমস্যা, যা মানুষের স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

পরিবেশ দূষণ আসলে কী?

চারপাশে বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ দূষণ হচ্ছে যেমন- বায়ু, পানি, ভূমি, শব্দ, তেজস্ক্রিয়, তাপ ও আলোক দূষণ। যদিও কিছুর তুচ্ছ প্রভাব থাকতে পারে আবার কিছু কিছু আছে, যা জনসংখ্যার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

কয়েক বছর ধরে, গবেষকরা মানব স্বাস্থ্যের ওপর দূষণের প্রভাবের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন ও বেশ কিছু অধ্যয়নও করেছেন। বিশ্বজুড়ে অত্যন্ত দূষিত সাইটগুলো থেকে নেওয়া গবেষণার অনেক ফলাফল উচ্চ মাত্রার পরিবেশ দূষণের সম্ভাব্য স্বাস্থ্যের প্রভাবগুলো নির্দেশ করে। এই দুইয়ের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক অনিবার্য।

বিশেষ করে বায়ু, পানি ও ভূমি দূষণ, এগুলো হলো প্রধান পরিবেশগত সমস্যা, যা জীবিত প্রাণীর জন্য বিশেষ করে মানব স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বড় ঝুঁকি তৈরি করে।

বায়ু দূষণ

বায়ু দূষণ হলো পরিবেশগত দূষণগুলোর মধ্যে একটি। যা প্রধানত বায়ুমণ্ডলে ক্ষতিকারক বায়বীয় দূষক নির্গত হওয়ার কারণে ঘটে। বায়ু দূষণকারীর মানবসৃষ্ট উৎস হলো পরিবহন ও উৎপাদন।

বায়ু দূষণকারীর উদাহরণগুলোর মধ্যে আছে কার্বন ডাই অক্সাইড যা জ্বালালির দহন থেকে নির্গত হয়। যেমন- বেনজিন, যা পেট্রল থেকে পাওয়া যায়, ড্রাই ক্লিনিং সুবিধায় ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রাবক পারক্লোরেথ্লাইন ইত্যাদি।

এই দূষকগুলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যানসারসহ তীব্র শ্বাসযন্ত্রের উভয় রোগের ঝুঁকির অন্যতম কারণ। বায়ু দূষণের কারণে যেমন রোগের ঝুঁকি বাড়ে-

>> ফুসফুসের কার্যকারিতা কমে যাওয়া
>> চোখ, নাক, মুখ ও গলা জ্বালা
>> হাঁপানি
>> শ্বাসকষ্টের উপসর্গ যেমন- কাশি ও শ্বাসকষ্ট
>> ব্রঙ্কাইটিসের মতো শ্বাসযন্ত্রের রোগ বেড়ে যায়
>> মাথাব্যথা ও মাথা ঘোরা
>> প্রজনন ও ইমিউন সিস্টেমের ব্যাঘাত
>> কার্ডিওভাস্কুলার স্বাস্থ্যের সমস্যা
>> ক্যানসার
>> অকাল মৃত্যু।

পানি দূষণ

পানির দূষণ ঘটে মূলত রাসায়নিকের কারণে। বিভিন্ন শিল্প-কারখানার বর্জ্য পদার্থ পানিতে নির্গত হওয়ার কারণে পানি দূষিত হয়। দূষণকারীর উপস্থিতি হেপাটাইটিস, এনসেফালাইটিস, গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস, ডায়রিয়া, বমি, পেটে ব্যথার মতো গুরুতর রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এমনকি প্রজনন সমস্যা ও স্নায়বিক ব্যাধিরও কারণ হতে পারে।

আরও পড়ুন: চার্জার ফ্যান ভালো রাখতে যত্ন নেবেন যেভাবে

জমি বা ভূমি দূষণ

জমি দূষণ, ভুমি দূষণ নামেও পরিচিত। বিপজ্জনক ও বিষাক্ত রাসায়নিকের কারণে জমির দূষণ ঘটে। এ ধরনের দূষণ বেশিরভাগই মানুষের তৈরি কর্ম, শিল্প কার্যক্রম, কৃষি রাসায়নিক ও অপর্যাপ্ত বর্জ্য নিষ্পত্তির কারণে ঘটে।

ভূমি দূষণের সঙ্গে জড়িত সবচেয়ে সাধারণ রাসায়নিকগুলো হলো পেট্রোলিয়াম হাইড্রোকার্বন, দ্রাবক, কীটনাশক, সীসা, পারদ ও অন্যান্য ভারী ধাতু। এসব রাসায়সিক মানব স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

এক্ষেত্রে মাথাব্যথা, চোখের জ্বালা ও ত্বকে ফুসকুড়ি থেকে শুরু করে আরও অনেক গুরুতর রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, মাটিতে উচ্চ মাত্রার সীসা ছোট শিশুদের মস্তিষ্কের উন্নয়নমূলক ক্ষতি করতে পারে। অন্যদিকে পারদের সংস্পর্শে অঙ্গের ক্ষতির ঝুঁকি বাড়াতে পারে এমনকি কিডনি ও লিভারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বায়ু, পানি ও ভূমি দূষণ হলো প্রধান পরিবেশগত বিপদ, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। এজন্য সবারই উচিত পরিবেশ দূষণকে আরও গুরুত্ব সহকারে নেওয়া ও সচেতন থাকা।

সুত্র বাসস