অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


মনপুরায় নিষিদ্ধ বেহুন্দি জালে ঘেরা মেঘনা ,ধ্বংস হচ্ছে মাছের পোনা


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২০ ভোর ০৪:২৯

remove_red_eye

১৬২২

 

মনপুরা প্রতিনিধি : ভোলার মনপুরার মেঘনায় হাজার হাজার নিষিদ্ধ বেহুন্দি (বাঁধাজাল) ও চরঘেরা জালে মাছ শিকার করছে অসাধু জেলেরা। যেন স্থানীয় প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। মেঘনার বিস্তৃর্ন এলাকায় অসাধু জেলেরা বেহুন্দি (বাঁধাজাল) ও চরঘেরা জালের ফাঁদ পেতে  ধ্বংস করছে কোটি কোটি বিভিন্ন জাতের রেনু পোনা সহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজপ্রাণী। এতে হুমকীর মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য।

অভিযোগ রয়েছে প্রশাসন ম্যানেজ করে অঘোষিত অনুমোদনে নিষিদ্ধ বেহুন্দি জালে মাছ শিকার করছে ওই অসাধু জেলেরা। এই সমস্ত জেলেদের মদদ দিচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী মৎস্য ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও কোস্টগার্ডে ক্যাম্পের সামনে মেঘনায় শত শত নিষিদ্ধ বেহুন্দি জাল (বাঁধাজাল) দিয়ে মাছ শিকার করার অভিযোগ ইলিশ জেলেদের।

চাঁদপুর ইলিশ গবেষনা কেন্দ্রের প্রধান গবেষক ড. আনিসুর রহমান জানান, মনপুরার মেঘনা ইলিশের খনি। মেঘনায় অবাধে নিষিদ্ধ বেহুন্দি ও চরঘেরা জাল দিয়ে মৎস্য শিকার অব্যাহত থাকলে ইলিশ উৎপাদনে বাধাগ্রস্থ হবে। এমনকি ইলিশ শূন্য হয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। এছাড়াও জলজপ্রাণী ধ্বংস হওয়ায় হুমকীর মধ্যে রয়েছে জীববৈচিত্র্য।

হাজিরহাট ইউনিয়নের সুতার জালের মাঝি শামসুমাঝি, নুরু মাঝি, হেজু মাঝি, মনপুরা ইউনিয়নের করিম মাঝি, সুলতান মাঝি, আলমগীর মাঝি ও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলী মাঝি, রাসেদ মাঝি, আক্তার মাঝি অভিযোগ করেন, স্থানীয় মৎস্য প্রশাসন ও কোস্টগার্ডকে ম্যানেজ করে নিষিদ্ধ বেহুন্দি ও চরঘেরা জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে অসাধু জেলেরা। কোস্টগার্ডের সাথে যেই সমস্ত বেহুন্দি জালের জেলেরা রফা-দফা না করে তাদের বিরুদ্ধে লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করে।

সরেজমিনে গত শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত মেঘনার বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে, মেঘনার বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে মাকসাড় জালের মত ছড়িয়ে রয়েছে নিষিদ্ধ বেহুন্দি জাল। খোদ কোস্টগার্ড ক্যাম্পের সামনের মেঘনায় শত শত নিষিদ্ধ বেহুন্দি জাল পাতা রয়েছে। এই সমস্ত বেহুন্দি জাল নৌকা করে ঘাটে নিয়ে আসা হয়। পরে ওই সমস্ত জাল থেকে দলবেঁধে চিংড়ি ও ছোট ইলিশের পোনা বাছাই করে চাপলি বলে প্রকাশ্যে বাজারে বিক্রি করা হয়। বাছাই শেষে অন্যান্য মাছের রেনু পোনাসহ জলজপ্রাণী তীরে ফেলা হয়।

মনপুরা কোস্টগার্ডের কন্টিজেন্ট কমান্ডার ওলি উল্লা জানান, নিয়মিত মেঘনায় অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ বেহুন্দি জাল আটক করে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। ম্যানেজের ব্যাপারটি ভিত্তিহীন।

মনপুরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা চরফ্যাসন মৎস্য কর্মকর্তা মাহরুফ হোসেন মিনার জানান, মেঘনা থেকে নিষিদ্ধ বেহুন্দি ও চরঘেরা জালে ধ্বংস করার ব্যাপারে মৎস্য অফিস যৌথ অভিযান পরিচালনা করছে। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে লিখিত আকারে জেলেরা জানালে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস জানান,নিয়মিত উপজেলা মৎস্য অফিসার  না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। তারপরও এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।