অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


ভোলায় ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগের দাবিতে র্দীঘ মানববন্ধন


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩ই মে ২০২৩ সন্ধ্যা ০৭:৫৯

remove_red_eye

৩১৭

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক: ভোলায় ঘরে ঘরে আবাসিক গ্যাস সংযোগের দাবিতে বিশাল এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ভোলা পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভোলা শহরের সদর রোডে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এক কিলোমিটার দীর্ঘ এ মানববন্ধনে ভোলার প্রায় সহ¯্রাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহন করেন।

মানববন্ধনে এ সময় বক্তব্য রাখেন, ভোলা পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, প্যানেল মেয়র ও পৌরসভা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সালাহউদ্দিন লিংকন, জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ভোলা জেলা সভাপতি আমিরুল ইসলাম রতন,  ভোলা প্রেসক্লাব সম্পাদক অমিতাব অপু, গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজিবুল্লাহ নাজু, বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) ভোলা জেলার সাধারণ সম্পাদক অবিনাশ নন্দী প্রমূখ।
ভোলায় দুর্গম এলাকা থেকে
আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ

আকাশ মেঘাচ্ছন্ন
চরাঞ্চলে আতঙ্ক
 উৎকন্ঠা

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক \  দ্বীপ জেলা ভোলায় ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ঘোষণার পর উপকূলীয় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার (১৩ মে) বিকাল ও সন্ধ্যায় জেলার চর পাতিলা থেকে চর কুকরি মুকরি, ঢাল চর, চর নিজামসহ বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন চর থেকে  আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে দেখা গেছে চরাঞ্চলে থাকা মানুষদের। তবে বাড়ি ঘর ছেড়ে অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চাচ্ছে না। কেউ কেউ গবাদি পশু নিয়েও আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছে।  পরিস্থিতি মোকাবিলায় খোলা হয়েছে ৮টি কন্ট্রোল রুম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৭৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ কয়েকশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখা'র প্রভাবে ভোলায় শনিবার সকাল থেকেই আকাশ মেঘচ্চন্ন অবস্থায় থমথমে আবহাওয়া বিরাজ করে। তবে বিকালে আকাশে আবার ঝলমলে রোদের দেখা মিলে।  সদর উপজেলা এখনো কোন বৃষ্টি বা ঝড়ো বাতাস হয়নি। তবে ভোলার সাগর মোহনার বিচ্ছিন্ন চরগুলোতে থেমে থেমে বৃষ্টিসহ হালকা বাতাস হওয়ার খবর পাওয়া গেছে । শনিবার রামে মনপুরায় হালকা বৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে চরফ্যাশনের ঢালচর, চরনিজাম, মনপুরা, কুকরি-মুকরি, চরপাতিলায় শুক্রবার রাত থেকেই বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। ঘূর্ণিঝড় মোখা'র প্রভাবে ভোলায় শনিবার সকাল থেকেই আকাশ মেঘচ্চন্ন অবস্থায় থমথমে আবহাওয়া বিরাজ করে। তবে বিকালে আকাশে আবার ঝলমলে রোদের দেখা মিলে।  সদর উপজেলা এখনো কোন বৃষ্টি বা ঝড়ো বাতাস হয়নি। তবে ভোলার সাগর মোহনার বিচ্ছিন্ন চরগুলোতে থেমে থেমে বৃষ্টিসহ হালকা বাতাস হওয়ার খবর পাওয়া গেছে । বিশেষ করে চরফ্যাশনের ঢালচর, চরনিজাম, মনপুরা, কুকরি-মুকরি, চরপাতিলায় শুক্রবার রাত থেকেই বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে।

ভোলার সাগর মোহনার চর কুকরি-মুকরি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন জানান, তাদের সেখানে দুইটি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে শনিবার সকালে সেখানে কিছুটা বৃষ্টিপাত হলেও দুপুরের দিকে আবহাওয়া স্বাভাবিক রয়েছে। বিচ্ছিন্ন চর পাতিলা থেকে সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে আনতে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তবে সেখানে হালকা বাতাস থাকলেও নদীর পানি স্বাভাবিক রয়েছে। ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চর কুকরি-মুকরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন জানান, তার ইউনিয়নের চরপাতিলা থেকে এক হাজারের বেশি বাসিন্দাকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে আনার হয়েছে। এজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের লোকজন মাঠে কাজ করছে। তবে সাধারণ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চাচ্ছেনা। এরপরও তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

সাগর মোহনার ঢালচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সালাম জানান, তার সেখানে ১০-১২ হাজার লোকের বসবাস। তবে সেখানে কোনো আশ্রয় কেন্দ্র নেই। এতে করে সেখানকার মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছে। তারপরও মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে শনিবার দিনভর প্রচারণা চালানো হয়েছে।

অপরদিকে শুক্রবার রাতে ৮নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত দেয়ার পর থেকেই ভোলা-ঢাকা-বরিশাল সহ সকল রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ ও ভোলা-ল²ীপুর-বরিশাল রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ইলিশা ঘাটে আসা যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা। দূর দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীরা নৌ যান চলাচল বন্ধের খবর না যেনে সকালে অনেকে ঘাটে এসে অপেক্ষা করতে থাকে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে অনেকে বাড়ি ফিরে গেছে। এদিকে নদী ও সাগর থেকে মাছধরার নৌকা ও ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে আনতে কাজ করছে প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় কোস্টগার্ড, রেড ক্রিসেন্ট ও সিপিপি সদস্যরা স্থানীদের সর্তক করতে নদীর তীরে মাইকিং করছে।
এ দিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় জেলার ৭৪৬টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া এক হাজার ৩০৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখার রাখার জন্য অবহিত করা হয়েছে। সাত উপজেলায় খোলা হয়েছে ৮টি কন্ট্রোল রুম। গঠন করা হয়েছে ৯২টি মেডিকেল টিম। দুর্যোগ মোকাবেলায় ১৫ হাজার সিপিপি ও রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। ভোলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সকল বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ৯৮টি মেডিকেল টিম। এ ছাড়া দুর্গম চরাঞ্চল থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসার জন্য পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, সিপিপি, রেড ক্রিসেন্ট, রোভার স্কাউটসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রায় ১৯ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করে যাচ্ছেন।

স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্রের লোকজনের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে, ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে নগদ ৮ লাখ টাকা, ৩৫০ মেট্রিকটন চাল এবং ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভোলার ঢালচর, কুকরি-মুকরি, চরনিজামসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে অন্তত ২ লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করছে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের মানুষজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনার ওপর বিশেষ জোর দেয়া হচ্ছে। গবাদি পশুর নিরাপত্তার জন্য জেলায় ৩৫টি মুজিব কিল¯œা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসক  জানান, ৭৪৬টি কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া লোকজনের জন্য সকাল, দুপুর এবং রাতে খাবারের পাশাপাশি শুকনো খাবারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
এদিকে, বিদ্যুৎ বিভাগ, সড়ক বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল, শিক্ষা বিভাগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগসমূহের কর্মকর্তাদেরকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবস্থায় রাখা হয়েছে।

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানান, ভোলার ৩৩৪ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভালো অবস্থায় রয়েছে। তবে মনপুরায় যে সবস্থানে বাধ ঝুঁকিপূর্ণ সেখানে জিও ব্যাগ দিয়ে মেরামত করা হয়েছে। তবে নদীর পানি স্বাভাবিক রযেছে।
 ভোলার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ৭৪৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নেয়া মানুষদের জন্য পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মানুষজন আসতে শুরু করেছে। সেখানে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থার পাশাপাশি চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলেরা বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে ১০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বলে গনমাধ্যমকে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভোলা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনজুরুল আলম, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এফরানুর রহমান মিথুন মোল্লা, ৬নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওমর ফারুক, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাইনুল ইসলাম শামিম, গ্যাস সংযোগ কাজের ঠিকাদার বেল্লাল সিকদার প্রমূখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভোলায় বর্তমানে বাপেক্সের অধীনে ৯টি গ্যাস কূপ রয়েছে। এ ৯টি কূপ থেকে দৈনিক প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। ভবিষ্যতে দৈনিক আরো প্রায় ১০০ মিলিয়ন গ্যাস উৎপাদিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সর্বমোট ভোলায় দৈনিক প্রায় ২৪০-২৫০ মিলিয়ন গ্যাস উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পক্ষান্তরে ভোলায় গৃহস্থলিতে ০.৭ মিলিয়ন গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু ভোলার জনগণের নূন্যতম গ্যাস ব্যবহারের সুবিধা বিবেচনা না করে বিভিন্ন পন্থায় ভোলার গ্যাস জেলার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা চলছে। যেহেতু দেশের যাবতীয় সম্পদের মালিক সরকার, সেহেতু সরকার যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রাখে। কিন্তু ভোলার জনগণকে দেশের অন্যান্য এলাকার ন্যায় গৃহস্থলি কাজে গ্যাস ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে গ্যাস অন্যত্র নিলে ভোলাবাসীর কোন আপত্তি থাকবে না। তাই উৎপাদিত গ্যাসের শুধুমাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশ গ্যাস ভোলাবাসীকে গৃহস্থলি কাজে ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে দেশের অন্যান্য শিল্প কারখানায় সরবরাহের পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান বক্তারা।
রক্তারা আরো বলেন, বর্তমানে ভোলাতে ৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ৩টি শিল্প কারখানা এবং ২ হাজার ৩৫০টি আবাসিক সংযোগে গ্যাসের ব্যবহার হচ্ছে। গৃহস্থলি কাজে গ্যাস দেওয়ার জন্য সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি ডিমান্ড নোটের মাধ্যমে প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাহকের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা জমা নেওয়া সত্তে¡ও দীর্ঘ ৪ বছরের অধিক সময় ধরে গ্রাহকরা গ্যাসের সংযোগ পাচ্ছে না। ভোলাবাসীর চাওয়া ভোলার গ্যাস দ্বারা ভোলাতেই শিল্পকারখানায় গ্যাস সরবরাহ এবং ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দিতে হবে।





আরও...