অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শুক্রবার, ১৪ই নভেম্বর ২০২৫ | ৩০শে কার্তিক ১৪৩২


ভোলায় আমার বাড়ি আমার খামারে জাহানারা বেগমের অভাব জয়


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ রাত ০২:৪৫

remove_red_eye

১৪১৯



হাসনাইন আহমেদ মুন্না : ভোলা জেলার উপজেলা সদরে ‘আমার বাড়ি আমার খামার, প্রকল্পের মাধ্যমে জাহানারা বেগম (৫৫) নামের এক নারী অভাবকে জয় করেছেন। উপজেলার শীবপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের গুচ্ছ গ্রাম এলাকায় বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন হস্ত শিল্প তৈরির মাধ্যমে স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন তিনি। বাঁশ কেটে পাতলা করে চেরি (বাঁশের অংশ) দিয়ে মুরগি, কুবুতরের খাঁচা, সাজি, কুলা, চালোন ইত্যাদী তৈরি করে বিক্রি করেন জাহানারা। পাইকারী ক্রেতারা তার বাড়ি থেকেই এসব কিনে নিয়ে যান। জাহানারা পারিবারিকভাবে কুটির শিল্পের সাথে সমৃক্ত থাকলেও মূলধনের অভাবে তার কর্মকান্ডকে সম্প্রসারণ করতে পারেননি।
অবশেষে ২০১৪ সালে আমার বাড়ি, আমার খামার প্রকল্পের সদস্য হন। পরে ২০১৭ সালে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে বাঁশ কিনে বৃদ্ধি করেন কাজের পরিধী। পরের বছর ২০ হাজার এবং তার পরের বছর ২৫ হাজার টাকার ক্ষুদ্র ঋণে বদলাতে থাকে তার অবস্থা। নদী ভাঙ্গণের শিকার হয়ে এক সময়ের সব হারানো জাহানারা এখন নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন। ১ ছেলে ও ২ মেয়ের অনেক আগেই বিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া তার স্বামী নজির আহমেদ ২০১৮ সালে এই প্রকল্পের সদস্য হন। ২০১৯ সালে তিনি প্রকল্প থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। বর্তমানে স্বামীকে নিয়ে সূখে আছেন জাহানারা। সাম্প্রতিককালে জাহানারার দেখাদেখি অনেকেই এই শিল্পের প্রতি ঝুঁকছেন।
সরেজমিনে শীবপুর ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম এলাকার জাহানারার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাঁশের তৈরি বিভিন্ন উপকরণ বানাতে ব্যস্ত রয়েছেন তিনি। স্বামী নজির আহমেদ বাঁশ কেটে পাতলা করে দিচ্ছেন। আর তাই দিয়ে খাঁচা, সাজি ইত্যাদি তৈরিতে মগ্ন জাহানারা। জাহানারা বাসস’র সাথে আলাপকালে জানান, একসময় তাদের অবস্থা ভালো থাকলেও প্রায় ১৪ বছর আগে নদী ভাঙ্গণের শিকার হয়ে সব হারান তারা। শেষে ঠাঁই হয় সরকারের এই গুচ্ছ গ্রামে। স্বামী দিনমজুরের কাজ করত। শুরু হয় তাদের কষ্টের দিন। শখের বসে হস্ত শিল্পের কাজ জানা থাকলেও এখন তা পেশায় পরিণত হয়েছে। মূলত পূর্ব শীবপুর গ্রাম উন্নয়ন দলের সদস্য হয়ে ঋণ নেয়ার পর থেকেই বদলাতে থাকে তার দূরবস্থা। প্রথম দিকে তার স্বামী হাটে গিয়ে এসব বিক্রি করলেও এখন পাইকাররা তার বাড়ি থেকেই কিনে নিয়ে যান।
তিনি আরো বলেন, মুরগি ও কবুতরের খাঁচা ৮০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়। এতে তার খরচ পড়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।ছোট সাজি ১৮০, মাঝারী ২৫০ ও বড় সাইজের ৪০০ টাকা বিক্রি করেন। কূলা ১৫০ ও চালোন ১৭০ টাকা দরে বিক্রি করেন।
জাহানারার স্বামী নজির আহমেদ বলেন, মানভেদে একটি বাঁশ ২’শ থেকে ৪০০ টাকায় কিনে আনেন তারা। পরে তা পুকুরের পানিতে ভিজিয়ে কাজের উপযোগী করা হয়। পানিতে না ভেজালে বাঁশে ঘুণে ধরে এবং অল্প সময়ে নষ্ট হয়ে যায়। এসব বিক্রি করে প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হয় বলে জানান তিনি।
একই সমিতির অপর সদস্য রহিমা বেগম এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২ দফায় ৩০ হাজার টাকা নিয়ে বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন প্রকার উপকরণ তৈরি করেন। তিনি বলেন, তার প্রতিবেশী জাহানারার এসব দেখে তিনিও উদ্বোদ্ধ হয়ে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে স্বামী-সন্তান নিয়ে ভালো আছেন তিনি।
পাইকারী ক্রেতা মো: ফরিদ হোসেন বলেন, জাহানারা ও নজির মিয়ার বাড়ি থেকে তিনি বিভিন্ন বাঁশের পণ্য ক্রয় করে থাকেন। এসব তিনি সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলার হাট বাজারে বিক্রি করছেন গত কয়েক বছর ধরে।
গ্রাম উন্নয়ন দলের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জাহানারা বেগম এই সমিতির একজন সফল উদ্যেক্তা। তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে রাত-দিন কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বাঁশের বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করে তা বিক্রি করে অভাবকে জয় করেছেন। একইসাথে তারা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করে থাকেন। ইদানিংকালে আরো কয়েজন সদস্য এই কুটির শিল্পের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এছাড়া গ্রাম উন্নয়ন দলের মাধ্যমে নিয়মিত উঠোন বৈঠক, কর্মপরিকল্পনা নির্ধারন, বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে আলোচনা ও কার্যকরী স্বিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী মো: জসিমউদ্দিন জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে জাহানারা বেগম ঋণ নিয়ে তা সঠিক ব্যবহারে সচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন। আজ পল্লী অঞ্চলের প্রতিটি বাড়ি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ এই উদ্যেগে। বিশেষ করে নারীরা তাদের বিভিন্ন উদ্যেগের মাধ্যমে পরিবারে বাড়তি আয়ের সুজোগ পাচ্ছেন। আমাদের সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ১১৭টি ওয়ার্ডে মোট ৩১৭টি সমিতি চালু রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এসব সমিতিতে মোট ১৪ হাজার ২৭৬ জন সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে ৯ হাজার ৫১৭ জন নারী ও ৪ হাজার ৪৫৯ জন পূরুষ সদস্য রয়েছেন। আর এদের মাঝে এ পর্যন্ত মোট ২৭ কোটি ৮৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। যা দিয়ে সদস্যরা বিভিন্ন আয়বর্ধক কর্মকান্ডের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন।





মানবিকতার আলোকবর্তিকা : ভোলার প্রিয় জেলা প্রশাসক আজাদ জাহানের বিদায়বেলা

মানবিকতার আলোকবর্তিকা : ভোলার প্রিয় জেলা প্রশাসক আজাদ জাহানের বিদায়বেলা

ভোলার মানবিক ডিসি মো. আজাদ জাহান অন্যত্র যোগদান, রেখে গেলেন সেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

ভোলার মানবিক ডিসি মো. আজাদ জাহান অন্যত্র যোগদান, রেখে গেলেন সেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

মনপুরায় যুবদল-ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশ

মনপুরায় যুবদল-ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশ

জুলাই সনদ ও গণভোটের আগে নির্বাচন নয় : মনপুরায় প্রফেসর কামাল উদ্দিন

জুলাই সনদ ও গণভোটের আগে নির্বাচন নয় : মনপুরায় প্রফেসর কামাল উদ্দিন

মনপুরায় ধানক্ষেত থেকে হরিণ শাবক উদ্ধার

মনপুরায় ধানক্ষেত থেকে হরিণ শাবক উদ্ধার

বরিশালে রেইজ প্রকল্পের দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন নানা পন্য নিয়ে উদ্যোক্তাদের মেলা

বরিশালে রেইজ প্রকল্পের দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন নানা পন্য নিয়ে উদ্যোক্তাদের মেলা

ফেব্রুয়ারিতে উৎসবমুখর ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা

ফেব্রুয়ারিতে উৎসবমুখর ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতির উদ্দেশে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতির উদ্দেশে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে : প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে : প্রধান উপদেষ্টা

আরও...