অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


শাওয়ালের ৬ রোজা যেভাবে সারাবছর রোজার রাখার মতো


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৪শে এপ্রিল ২০২৩ বিকাল ০৫:৩৫

remove_red_eye

২৫৮

রমজানের দীর্ঘ এক মাস রোজা পালন করে ঈদের আনন্দ উদযাপনের পর পর শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা রাখলেই রোজাদার পেয়ে যাবেন পূর্ণ এক বছর রোজা রাখার সওয়াব। হাদিসে পাকের একাধিক বর্ণনায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কত চমৎকার ঘোষণাই না দিলেন, সুবহানাল্লাহ!

শাওয়ালের ৬ রোজায় তারাই সারাবছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে যারা রমজানের রোজা রেখেছেন। কেননা আল্লাহ তাআলা রমজানের রোজার প্রতিদানে দেবেন ১০মাস রোজা রাখার সওয়াব আর রমজানের রোজা রাখার পর শাওয়ালের ৬ রোজা রাখায় দেবেন ২ মাস রোজা পালনের সওয়াব। তাই যারা রমজানের রোজা রাখার পর পর শাওয়ালের ৬ রোজা রাখবেন, তাদের জন্য রয়েছে পুরো বছরজুড়ে সওয়াব পাওয়ার হাতছানি। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-

১. হজরত আবু আইয়ুব আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّا مِنْ شَوَّالٍ، كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ

রমজান মাসের রোজা পালন করার পরে শাওয়াল মাসে ৬ দিন রোজা রাখা সারা বছর রোজা রাখার মতো।’ (মুসলিম ১১৬৪)

২. হজরত সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

صِيَامُ رَمَضَانَ بِعَشْرِ أَشْهُرٍ، وَصِيَامُ سِتَّةِ أَيَّامٍ بِشَهْرَيْنِ، فَذَلِكَ صِيَامُ سَنَةٍ

‘রমজানের রোজা পালন করা দশ মাস রোজা রাখার সমান আর শাওয়ালের ছয় রোজা পালন বছরের অবশিষ্ট দুইমাস রোজা পালন করার সমান।’ (নাসাঈ ২৮৭৩)

৩. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

مَنْ صَامَ رَمَضَانَ، ثُمَّ أَتْبَعَهُ بِسِتٍّ مِنْ شَوَّالٍ، فَكَأَنَّمَا صَامَ الدَّهْرَ

‘যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা পালন করার পরে শাওয়াল মাসে ছয় দিন রোজা পালন করে সে যেন সারাবছর রোজা পালন করলো।’ (আবু দাউদ ২৪৩৩)

৪. হজরত ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

مَنْ صَامَ رَمَضَانَ وَأَتْبَعَهُ سِتًّا مِنْ شَوَّالٍ خَرَجَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ

‘যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা পালন করার পরে শাওয়াল মাসে ৬ দিন রোজা পালন করে সে যেন সদ্য মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ট হওয়া শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে গেল।’ (তাবরানি ৮৬২২)

হাদিসের এ বর্ণনাগুলো কোরআনুল কারিমের ঘোষণা অনুযায়ী বর্ণিত হয়েছে। কেননা প্রতিটি নেক কাজের বিনিময় দশগুণ। আল্লাহ তাআলা বলেন-

مَنۡ جَآءَ بِالۡحَسَنَۃِ فَلَهٗ عَشۡرُ اَمۡثَالِهَا

কোনো ব্যক্তি সৎ কাজ করলে সে তার দশগুণ (সাওয়াব বা প্রতিদান) পাবে।’ (সুরা আনআম: আয়াত ১৬০)

সুতরাং রমজান ও ঈদ শেষ হয়েছে। এ মাসের মধ্যে ৬টি রোজা পালন করে পুরো এক বছর রোজা পালনের সাওয়াব পাওয়ার মোক্ষম সময়। তাই প্রত্যেক রোজাদার মুসলিম উম্মাহর উচিত শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা পালনের মাধ্যমে পূর্ণ এক বছরের রোজা পালনের সওয়াব অর্জন করা।

আবার এ মাসে ৬টি রোজা এক টানা রাখতে হবে এমন নয়। বরং বিরতি দিয়ে দিয়েও এ রোজাগুলো রাখা যাবে। আবার চাইলে এ মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখও রাখা যেতে পারে। তাতে এক দিকে যেমন শাওয়ালের ৬ রোজা থেকে ৩টি রোজা আদায় হবে, আবার অন্য দিকে নবিজির সুন্নত প্রতি আরবি মাসে ৩টি আইয়্যামে বিজের রোজাও রাখা হবে। এভাবে দ্বিগুণ সওয়াব পাওয়ার সুযোগও রয়েছে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে অল্প আমলের মাধ্যমে বছরব্যাপী রমজানের রোজা পালনের সওয়াব অর্জনের জন্য শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা পালনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

সুত্র জাগো