অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শুক্রবার, ১লা নভেম্বর ২০২৪ | ১৬ই কার্তিক ১৪৩১


ভোলায় পাঁচ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রীর ভ্রুন হত্যা, স্বামী আটক


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৯শে জানুয়ারী ২০২০ রাত ০৩:৪৩

remove_red_eye

৫৯৫



 বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক : ভোলায় স্বামীর বিরুদ্ধে পাঁচ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রীর ভ্রুন হত্যার অভিযোগ উঠেছে। স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য এ হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্ত্রী ও তার পরিবারের দাবি করেন। ইতিপূর্বে স্ত্রী বাদি হয়ে স্বামীসহ তিনজনকে আসামী করে ভোলা সদর থানায় (২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি ধর্ষণ মামলা করেছে। ভ্রæণহত্যার অভিযোগে আরেকটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্ত্রী বর্তমানে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। ধর্ষণ মামলার এক নম্বর আসামী শরীফুল ইসলামকে সোমবার রাতেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। 
মামলার এজাহার (অভিযোগপত্র) সূত্রে জানা যায়, ভোলার সদর উপজেলার পূর্ব-ইলিশা ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের জংশন গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ফরাজীর ছোট ছেলে মো. শরীফুল ইসলাম (১৭) একই ইউনিয়নের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষন করে। এ ঘটনায় ছাত্রী অন্তঃস্বত্ত¡া হয়ে পড়লে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু শরীফুল ইসলাম  বিয়ে করতে রাজি হয় না। তাই বাধ্য হয়ে ছাত্রী ভোলা সদর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করে।
ছাত্রী (সুলতানা রাজিয়া) ও তার স্বজনরা গত সোমবার রাতে জানান, মামলার পরে দুই পরিবারের সিদ্ধান্তে ছাত্রীর সঙ্গে শরীফুল ইসলামের দুই লাখ টাকা দেনমোহরে ২ জানুয়ারী বিবাহ সম্পন্ন হয়। গত সোমবার (২৭জানুয়ারী) শরীফুল ইসলাম পিকনিকে নেওয়ার নাম করে ছাত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে ভোলা শহরে নিয়ে আসে। সেখানে মেরী স্টোপস নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে ছাত্রীর পেটের পাঁচ মাসের বাচ্চা (এ্যাবরোশন) নষ্ট করার জন্য ইনজেকশন দেয়। এ সময় ছাত্রী প্রতিবাদ করলেও শরীফুল তা মানেনি। ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক, শরীফুলের বোন ও শরীফুল জোর করে ইনজেকশন নিতে বাধ্য করে।
ছাত্রী আরও জানায়, ইনজেকশন দেওয়ার পরে সে বাড়িতে ফিরে আসলে কিছুক্ষণ পরে পেট ব্যথা শুরু হয়। পরে ব্যথা তীব্র হলে ছাত্রীকে ভোলা সদর হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করে। ভর্তির পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে একটি জীবিত বাচ্চা প্রসব হয়; পরক্ষণেই যার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তাঁর পরিবারে শোকের ছায়া নামে। 
ছাত্রী জানায়, তাঁর পেটের ৫ মাসের বাচ্চা(ভ্রæণ) হত্যা ও বিয়ে ভাঙার উদ্দেশ্যেই স্বামী শরীফুল ইসলাম তাঁকে জোর করে ইনজেকশন দিয়েছে।
ছাত্রীর বাবা বলেন, তাঁর পাঁচ মাসের অন্তঃস্বত্ত¡া মেয়ের পেটের ভ্রæণ হত্যার ঘটনায় আরেকটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
হাসপাতালে উপস্থিত স্বামী, মামলার আসামী শরীফুল ইসলাম বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়। দুজনের সম্মতিতেই মেরী স্টোপস ক্লিনিকে গিয়ে তাঁরা পেটের বাচ্চা নষ্ট করা হয়েছে।
মেরী স্টোপস ক্লিনিকের ব্যবস্থাপক মাইনউদ্দীন বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তাঁরা সাধারণত দেড়-দুই মাসের অন্তঃস্বত্ত¡া ভ্রæণ নষ্ট করে থাকে। এ ভ্রæণের বয়স পাঁচ মাস হয়েছে, সে তথ্য হয়তো গোপন করা হয়েছে।  ভোলা সদর থানার আওতাধীন ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (্এসআই) রতন কুমার শীল বলেন, পুলিশ সোমবার রাতেই ধর্ষণ মামলার আসামী শরীফুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে। ভ্রæণহত্যার ঘটনা ওই এজাহারের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হবে।