অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


ভোলার আবাসিক এলাকায় বালুর ব্যবসা, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১শে মার্চ ২০২৩ রাত ০৮:৪১

remove_red_eye

৩৪৮

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদ: ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা বাস স্ট্যান্ড থেকে কলঘাট বাজার পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে প্রায় ৫০টির অধিক বালুখোলা গড়ে ওঠেছে। উন্মুক্ত স্থানে বালু রেখে দীর্ঘ দিন ব্যবসা করে আসছে একটি অসাধু চক্র। যার ফলে ওই এলাকার প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দা ও সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থীা স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। প্রতিদিন সড়ক দিয়ে যাতায়াতের সময় বাতাসে বালু উড়ে পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারের চোখে মুখে যাচ্ছে। এতে করে স্থানীয় বাসিন্দারা এ্যাজমা শ^াসকষ্টসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আাক্রান্ত হচ্ছে। অপরদিকে বালুখোলো থেকে প্রতিদিন শত শত খোলা ট্রাকে করে বালু আনা নেয়ার সময় সেই বালুও পথচারীতে চোখে মুখে যায়। এবং গ্রামীণ সরু সড়ক দিয়ে ভাড়ী যানাবাহন চলাচলের কারনে সড়কগুলো খানাখন্দকে পরিনত হয়েছে। সড়ক সংস্কার করা হলেও এসকল ভারী যানবাহনের চলাচলের কারনে এর সুফল পচ্ছে না এলাকাবাসী।
বিষয়টি স্থানীয়রা বেশ কয়েকবার মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হলেও এর কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না এলাকাবাসী।
বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী গত দুই দিন ধরে ওই সড়কটিতে গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে মালাবহী যান চলাচল বাঁধা দিচ্ছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহরাব, মিজান, মাকসুদ ও জিলনসহ ১০-১৫জন বাসিন্দা জানান, ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের বাপ্তা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাবুল মোল্লা সেতু পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠেছে প্রায় অর্ধশতাধিক বালুখোলা। এ বালুখোলায় দুই-তিন তলা ভবনের মতো উচু করে বালু রেখে তা বিক্রি করছে। যার ফলে স্থানীয় বাসিন্দাসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বালুখোলা থেকে বাতাসে ওড়ে গিয়ে মানুষের ঘরবাড়িতে যাচ্ছে। এখান থেকে প্রতি দিন শতাধিক খোলাট্রাকে বালু আনানেওয়ার সময় স্কুলের সহ¯্রধিক শিক্ষার্থী ও পথচারীদের নাকে-মুখে প্রবেশ করে। এতে করে এলাকার মানুষ বিভিন্ন শ^াসজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এমনকি এই এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার লোকের বসবাস। বাতাসে এ বালু উড়ে গিয়ে মানুষের ঘরে, স্কুল-কলেজে ও মসজিদ-মাদরাসায় প্রবেশ করে। এতে করে অনেকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
এছাড়াও এ সড়কটি দিয়ে অতিরিক্ত ভারী যানবাহন চলাচলের কারেন সড়কটিও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুষ্ক মৌষুমে বালু ও আর বর্ষা মৌসুমে কাঁদাপানির জন্য এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না।

স্থানীয় পশ্চিম বাপ্তা আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক মোজাম্মেল, রাশেদ ও শিক্ষার্থী সুমাইয়া, শারমিন, শাকিলসহ ১৫-২০জন শিক্ষার্থী জানান, তাঁরা প্রতিদিন এ সড়ক দিয়েই যাতায়াত করেন। কিন্তু সড়ক দিয়ে আসার সময় সড়কের পাশে স্তুপ করে রাখা বালু ও খোলা ট্রাকের করে বালু নেয়ার সময় বাতাসে উড়ে বালু তাদের চোখে-মুখে প্রবেশ করে। যার ফলে তাদের এ্যাজমা, শ^াসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে হয়। অপরদিকে এ সড়কটি দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলের কারনে সংস্কারের দুই তিন মাসের মাথায় সড়কটি আবারও ভেঙে যায়। যার কারেন চলাচলের সময় তাদের বিভিন্ন দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। তাই তারা দ্রæত সড়কের পাশে থাকা বালুর ব্যবসা বন্ধ ও  সড়কটি সংস্কার করার জোর দাবি করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা বাসিন্দা জানান, এ সড়কটিকে ঘিরে ওই এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার লোকের বসবাস। সড়কের পাশে চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি স্কুল এন্ড কলেজ ও ৮-১০টি মসজিদ রয়েছে। কিন্তু চার কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে খোলা যায়গায় প্রায় ৫০টি বালুখোলা রয়েছে। সেগুলো থেকে প্রতিদিন শতাধিক খোলা ট্রাকে করে বালু আনানেওয়া করে থাকে। এতে করে একদিকে বালুর কারনে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে, অন্যদিকে সড়কটিও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ইতোপূর্বে স্থানীয়রা বেশ কয়েকবার আন্দোলন করেছিলেন। প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। প্রতিবারই আবাসিক এলাকা থেকে বালু ব্যাবসায়ীদেরকে সরিয়ে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ বালু ব্যাবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
স্থানীয়রা আরো জানান, এ সড়কটি গত ২০২০ সালে সংস্কারের পর ওই এলাকার মানুষ এর সুফল দুই তিন মাসও ভোগ করতে পারেনি। যার প্রধান কারন এ বালুর ব্যবসা এবং ভারী যানবাহন চলাচল। প্রতিদিন এ সড়কটি দিয়ে শত শত বালুর ট্রাক ও ভারী যানবাহন চলাচলের কারনে সড়কটি এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের দুই পাশে বালুর ব্যবসা ও সড়কের বেহাল দশার কারনে এ সড়ক দিয়ে মানুষ চলাচল করতে পারে না। এমনটি এ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থী চলাচল করে থাকে। তাই এ এলাকার বাসিন্দা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে দ্রæত সড়ক পাশ থেকে বালুর খোলা বন্ধ করে সড়কের সংস্কারের দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
ভোলা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, তাঁর কাছে এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে বালুর বিষয়টি তিনি জেনে ব্যবস্থা নিবেন। তবে সড়ক সংস্কারের বিষয়টি সড়ক বিভাগ দেখবে।   





আরও...