অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বুধবার, ১৪ই মে ২০২৫ | ৩১শে বৈশাখ ১৪৩২


সড়কে নিহত দুই ছাত্রী মৃতহের পাশে দাঁড়িয়ে শিক্ষকের কান্না ভিডিও ভাইরাল


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮ই মার্চ ২০২৩ রাত ১০:৫১

remove_red_eye

৩৯৬

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক: ভোলায় বাস চাপায় দুই কলেজছাত্রী নিহত হওয়ার খবরে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় তাদের সহপাঠী ও শিক্ষকরা। এসময় সহপাঠী ও শিক্ষকরা দুই ছাত্রীর লাশের পাশে দাঁড়িয়ে বাঁধ ভাঙা কান্নায় ভেঙে পড়েন। রাস্তায় গড়াগড়ি করে বিলাপ দিতে দেখা যায় তাদের সহপাঠীদের।

ঘটনার পর শুক্রবার বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুই ছাত্রীর লাশের পাশে দাঁড়িয়ে শিশু বাচ্চাদের মতো কান্নাকাটি করতে দেখা যায় এক শিক্ষককে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই শিক্ষকের নাম বিপ্লব কুমার পাল। তিনি দৌলতখান উপজেলা হালিমা খাতুন মহিলা মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক। নিহত দুই শিক্ষার্থী তাঁর ছাত্রী ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়। 'শিক্ষক বিপ্লব কুমার পাল নিহত দুই ছাত্রীর লাশের পাশে দাঁড়িয়ে শিশু বাচ্চাদের মতো কান্নাকাটি করছে। তাঁর মাথায় হেলমেট পড়া তাঁর চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। তিনি একবার লাশের দিকে তাকাচ্ছেন আরেকবার নিহত ছাত্রীদের সহপাঠীদের দিকে তাকাচ্ছেন'।

শাওন খান নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ছড়িয়ে পড়া ভিডিও তাঁর টাইমলাইনে পোষ্ট করে তিনি লিখেছেন, 'শিশু বাচ্চাদের মতো লাশের পাশে দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করা লোকটি শিখা ও রিমার শিক্ষক, খবর পেয়ে এই স্যার মোটরসাইকেল দিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছে। মাথায় হেলমেট রেখেই শিখা ও রিমার লাশ দেখে কান্না শুরু করেন'।

শাকিব আদনান নামে এক ছাত্র লিখেছে, 'বিপ্লব স্যারকে এভাবে কান্না করতে হবে তা কোনোদিন ভাবিনি, বিপ্লব স্যার আজ খুব অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যে শিক্ষক তাদেরকে পড়িয়েছে। আজ সেই শিক্ষকের সামনে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ পড়ে রয়েছে। এই দৃশ্য যে কতটা কষ্টের তা শুধু বিপ্লব স্যারেই জানে'।

শিক্ষক বিপ্লব কুমার পাল জানান, বঙ্গবন্ধুর ১০৩ তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার সকালে তিনি কলেজে আসেন। এরপর অধ্যক্ষ নুরে আলমের কাছ থেকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে রওনা দেন। শিখা ও রিমার চূর্ণবিচূর্ণ লাশ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। দুই ছাত্রীর এমন মর্মান্তিক মৃত্যু দেখে তিনি মানসিকভাবে ঠিক থাকতে পারেননি। শিখা ও রিমা তাঁর আদরের ছাত্রী ছিলেন।

তিনি আরও জানান, শিখা ও রিমা কলেজের যেকোনো অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দিত। গত ৯ মার্চ কলেজ থেকে চরফ্যাশন বেথুয়া প্রশান্তির পার্ক ও জ্যাকব টাওয়ারে বার্ষিক বনভোজনে গিয়েছিলেন তাঁরা। বনভোজনে অনুষ্ঠিত রাফেল ড্র'র পুরষ্কার এখনো বিতরণ করা হয়নি। কথা ছিল সেই পুরষ্কার তাঁরা কয়েকদিনের মধ্যে বিতরণ করবে। কিন্তু এখন তো তাঁরা পরপারে চলে গেল।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কের মধ্য জয়নগর এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে চরফ্যাশের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা শ্যামলী সার্ভিস নামে একটি যাত্রীবাহী বাস নিহত শিখা ও রিমার বহন করা অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁরা দু'জনসহ ৩ জনের নিহত হয়। এ ঘটনায় গতকালই সড়ক আইনে মামলা হয়েছে। পুলিশ ঘাতক চালককে গ্রেফতার করেছে।