অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিনে ভূমিহীনের অভিশাপ থেকে মুক্ত হচ্ছে ভোলা


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪ই মার্চ ২০২৩ রাত ১০:৪১

remove_red_eye

২৯০


অমিতাভ অপু :  ভোলায় টানা ৪ দফায়  প্রধানমন্ত্রীর দেয়া জমি ও ঘর বিতরনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিনে ভূমিহীন মুক্ত হচ্ছে জেলা সদর উপজেলা। ২ শতাংশ জমিসহ ঘর পেয়েছে ৬৯২টি পরিবার। জেলার ৭ উপজেলায় ঘর পেয়েছে ৪ হাজার ১৪৯টি পরিবার। ৭ উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলার ৬৯২ ঘরের নির্মান কাজ শেষ হওয়ায় তৃতীয় দফায় ৬০২টি ঘর বিতরণ করা হয়। চতুর্থ পর্যায়ে ৯২টি ঘরসহ জমির দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। ১৩ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের দুই দিনের বৈঠক শেষে তাদের এলাকায় আর কোন ভূমিহীন পরিবার নেই বলে জানান ্ইউপি চেয়ারম্যানরা। ১৭ মার্চ শুকবার  জাতির পিতার জন্ম দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোলা সদরকে ভূমিহীন ঘোষণা করা হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম। অপরদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মোশারফ হোসেন জানান, জেলায় নদীর ভাঙন ও সিকস্তি পরিবার সৃষ্টি একই সূতোয় গাথা।  নদীর ভাঙনের কারনে কোন পরিবার ভূমিহীন হলে, তারাও পাবেন প্রধানমন্ত্রীর ঘর ও জমি । এমন ঘোষণার মধ্য দিয়েই জেলা সদর উপজেলাকে অনুষ্ঠানিকভাবে ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করা হচ্ছে। ৬৯২ পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ পাকা ঘর বিতরণ কার্যক্রম শেষে জেলা প্রশাসক মোঃ তৌফিক ই লাহী চৌধুরী  জানান জেলা সদরের ১৩ ইউনিয়নে এখন কেউ আর ভ’মিহীন নন।  যারা প্রধানমন্ত্রীর  স্বপ্নপূরণের ঘর পেয়েছেন ওই পরিবার এখন পাকা ঘরে ঘুমান। ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয় হয়। পাচ্ছেন আলো। ফ্যানের বাতাস। আধুনিক সুবিধা।  ভূমিহীন পরিবার না থাকায় আপতত জেলা সদরকে প্রাথমিকভাবে ভ’মিহীন ঘোষণা করা হয়। ইতিমধ্যে তিন দফায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। তবে নদী ভাঙনের কারনে জেলার বিভিন্ন স্থানে নতুন নতুৃন ভূমিহীন পরিবার  সৃষ্টি হলে তাদের জন্য পুনরায় ঘর প্রদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম , সহকারী কমিশনার ( ভূমি) আলী রেজা  সোমবার কয়েকটি গুচ্ছগ্রাম পরিদর্শণ শেষে এ প্রতিবেদককে জানান, প্রধানমন্ত্রী ঘর ও জমি উপহার হিসেবে দিতে প্রথমে তারা প্রতিবন্ধী পরিবারে অগ্রাধিকার দেন। জেলা সদরে ৬৯২ জনের মধ্যে ৫২ জনই ছিল প্রতিবন্ধী। ৮ জন রয়েছে তৃতীয় লিঙ্গ পরিবার। কয়েক দফা নদী ভাঙনের শিকার ২৩ পরিবার ঘর পেয়েছে ধনিয়াগুলি এলাকার গুচ্ছগ্রামে। এরা এত দিন  বেড়িবাঁধে ঝুপড়ি ঘর তুলে জীবন যাপন করতো। এখন তারা প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা ঘরে বসবাস করেন। ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের  হিন্দু ধর্ম বিষয়ের গেস্ট শিক্ষক  প্রভাত চন্দ্র দাস জানান, তার বাড়ি ছিল তজুমদ্দিন উপজেলার সোনাপুর গ্রামে। ৫০ বছর আগে প্রায় ২০ একর সম্পত্তিসহ ঘর বাড়ি নদীতে ভেঙে বিলীন হয়। ওই থেকে অন্যেও জমিতে কোন রকমে বাস করতেন। ৩০ বছর ধরে ভোলা জেলা সদরের অফিসার পাড়ার ভাড়া ঘরে  ৬ মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে  তার সংগ্রামী জীবন কাটছে। কোনদিন আবার জমি ও পাকা ঘর বাড়ি হবে, ভাবতেও পারেন নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে এবার ঘর ও জমির দলিল পেয়ে তিনি উচ্ছ¡সিত হন। আবেগে চোখের জল ধরে রাখতে পারেন নি। কয়েক দফা নদী ভাঙনে নিঃস্ব পরিবারগুলোর মধ্যে ঘর পেয়ে আবেগ তাড়িত হন ধনিয়া এলাকার মোঃ মনির ও তার স্ত্রী নাজমা বেগম, মোঃ সুলতার ও স্ত্রী রাশিদ বেগম, শাফিয়া বেগম , মোঃ জাকির মাঝি ও স্ত্রী বিবি সেতারা, আবু তাহের ও স্ত্রী ইয়ানুর বেগম, মোঃ ইয়াছিন ও স্ত্রী বিবি মরিয়ম, মোঃ হোসেন ও স্ত্রী মরিয়ম বেগম, মোঃ আকবর হোসেন ও স্ত্রী আবেনা বেগম, জালাল আহম্মেদেও বেয়ে  বিবি ফাতেমা, আব্দুল মান্নান, মোঃ আপন, মোঃ রুস্তুম সর্দার , মোঃ শফিকুল ইসলাস, রুবেল চন্দ্র শীলের স্ত্রী  কাকলী রানী,  রফিকুল ইসলাম , জরিনা বেগম, মোঃ ফারক, রহিম আলীর স্ত্রী ময়ফুল বেগম, বেচু বেপারীর স্ত্রী শাহিন আক্তার, বিলকিছ , নুর মোহাম্মদ, বিবি জহুরা , আব্দুল হাই ও তার স্ত্রী নুরুন নাহার। জেলা সদরের ৬৯২ ঘরের মধ্যে রয়েছে পূর্ব ইলিশায় ৫৮টি, পশ্চিম ইলিশায় ৫৫টি, ভেদুরিয়া ইউনিয়নে ১১০টি, রাজাপুর ইউনিয়নে ২০টি, কাচিয়া ইউনিয়নে ৫০টি, ধনিয়া ইউনিয়নে ১৪১টি  ভেলুমিয়া ইউনিয়নে ৪৯ টি, চরসামাইয়া ইউনিয়নে ২৬টি,দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নে ৩০টি জমিসহ পাকা ঘর নির্মান করা হয়।





আরও...