অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা : রয়েছে অনেক প্রশ্ন


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১ই মার্চ ২০১৯ সকাল ১০:১২

remove_red_eye

১০১১

এক যুবকের বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনাটি শুধু দেশে নয়, বিশ্বজুড়ে আলোচিত। সবার মনে একটাই প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে, বিমানবন্দরের চারস্তরের নিরাপত্তা ডিঙিয়ে ওই যুবক কীভাবে ফ্লাইটে ‘পিস্তল’ নিয়ে ঢুকল ? যদিও ঘটনার পরপরই সিএমপি কমিশনার বলেন, যুবকের হাতের পিস্তলটি ছিল খেলনা। আর সোমবার বিমান প্রতিমন্ত্রী বললেন, এত নিরাপত্তা ভেদ করে ‘অস্ত্র’ নিয়ে ঢোকা অসম্ভব ! ঘটনার তদন্ত চলছে। সবার আগ্রহ, খুলবে কি রহস্যের জট ?
বিমানবন্দরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে ফাঁক ও ঘাটতি কেন ঃ হজরত শাহ আমানত বিমানবন্দরে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় দেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার ইস্যু নিয়ে যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি পশ্চিমা রাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করে কার্গো বিমান উড্ডয়ন বন্দ রেখেছিল, এ ঘটনা দুই বছর আগের। পরে নিরাপত্তায় সরকার যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলের আস্থা ফের ফিরে আসে। গত রোববার চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে দুবাইগামী ফ্লাইটে এক যুবক যাত্রীদের জিম্মি করে এবং বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। পরে সেনাবাহিনীর একটি কমান্ডো ফোর্স ইউনিট আট মিনিটের অভিযানে অস্ত্রধারী যুবককে হত্যা করতে সক্ষম হয়। এই বিমান চিনতাইয়ের ঘটনাটি বিশ্বের বিভিন্ন মিডিয়ার প্রচারে আসায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে সংকটে পড়তে পারে বাংলাদেশ, এ কথা বলেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, বিমানবন্দরের চার স্তরের নিরাপত্তা ভেদ করে কীভাবে একজন যুবক অস্ত্র নিয়ে বিমানে উঠে সেই প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই খুঁজতে হবে। তবে বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলছেন, নিরাপত্তা ভেদ করে বিমানে উঠা খুবই দুরূহ। তবে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সম্পর্কে একজন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফাইটে যাত্রী ওঠানোর ক্ষেত্রে তল্লাশির বেলায় নিশ্চয়ই কোনো ফাঁক আছে। তাছাড়া আমাদের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তায় এখনো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আনার ব্যাপারে ঘাটতি আছে। আর বিমানবন্দরে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিতদের দক্ষতার অভাব রয়েছে। এই ঘাটতি ও অভাব দূর করতে হবে। চট্টগ্রামে গত রোববার বিমানটি জরুরি অবতরণ করেনি উল্লেখ করে বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে বিমানটি চট্টগ্রামে যাত্রা বিরতি করেছে। এখানে ইমার্জেন্সি কোনো ল্যান্ডিং ছিল না।
এদিকে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ব্যক্তির কাছে কোনো কিছু ছিল কিনা সেটি তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে জানা যাবে বলে জানান বিমান সচিব মো. মহিবুল হক। তিনি বলেন, তদন্ত দল পাঁচ দিনের ভেতরে সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করবে। তখন জানা যাবে ওটা খেলনা পিস্তল নাকি আসল পিস্তল।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাইম হাসান জানিয়েছেন চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত রোববার বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ করছে। কমিটির সদস্যরা উড়োজাহাজে থাকা পাইলট ও ক্রুদের সঙ্গে কথা বলবেন। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলা হবে। অন্য সূত্র থেকেও তথ্য সংগ্রহ করবে। তখন সব কিছু জানা জাবে।
বিমান চলাচল বিষয়ে বিশ্লেষক কাজী ওয়াহিদুল আলম মনে করেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দুর্বলতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, শাহজালাল বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দুর্বলতা নিয়ে সমালোচনা নতুন কিছু নয়।
কাজী ওয়াহিদুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ বিমানের বেশ কয়েকটি ফ্লাইট ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বা সিলেট হয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে থাকে। এসব ফ্লাইটে আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী নেওয়া হয়। আর সেখানেই নিরাপত্তার ঘাটতি থাকে বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোতে নিরাপত্তার জন্য আধুনিক যেসব ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল বা ডিজিটাল ব্যবস্থা আরো উন্নত করা উচিত ছিল-সেখানেও ঘাটতি আছে।





আরও...