বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:০১
৮৫
বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় ভারসাম্য নিশ্চিত করতে পারে এমন সংবিধান প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সেমিনার তিনি এ কথা জানান। আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে এনসিপির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তি আয়োজনে এ সেমিনার করা হয়। সেমিনারের বিষয়বস্তু ছিল ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কেমন সংবিধান চাই’।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার ও জাবেদ রাসিন, যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা, যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল আমীন এবং জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলাম, সদস্য সচিব ডা. জাহেদুল ইসলাম, মুখ্য সংগঠক ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সোহেলসহ কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা।
সেমিনারে সংবিধান নিয়ে আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরে আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা চাই এমন সংবিধান, যে সংবিধান মানুষের গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দিতে পারে। এমন সংবিধান, যেটা বাংলাদেশের মানুষের অভিপ্রায়কে ধারণ করতে পারে। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকারকে সুরক্ষিত করতে পারে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে স্বাধীন রাখতে পারে। যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবেন, তাদের জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসতে পারে। ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত না করে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণকে জারি রাখতে পারে।’
বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় ভারসাম্য নিশ্চিত করতে পারে, এমন সংবিধান চান উল্লেখ করে এনসিপির সদস্য সচিব আরও বলেন, ‘আমরা এমন সংবিধান চাই, যেটা বাংলাদেশের সব শ্রেণির মানুষকে ধারণ করতে পারে। বাংলাদেশের সব ধর্মের মানুষ, সব সম্প্রদায়ের মানুষ, সব জনগোষ্ঠীর মানুষের অধিকারকে ধারণ করতে পারে।’

নতুন সংবিধান না হলে এসব চাওয়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘যেকোনো সময় কোর্টে এটাকে চ্যালেঞ্জ করা হবে; কোর্ট সিদ্ধান্ত যদি বাতিল করার অথরিটি দেখে, যেহেতু এই সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচার ৭২–এর বেসিক স্ট্রাকচার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে। আমরা এমন সংবিধান চাই, যে সংবিধান তার নতুন বেসিক স্ট্রাকচার নিয়ে জাতির কাছে হাজির হবে।’
জুলাই সনদকে ‘সম্পদ’ হিসেবে বর্ণনা করে সেটাকে বাস্তবায়ন করা হবে নাকি অঙ্গীকারের মধ্য ফেলে রাখা হবে, এমন প্রশ্ন তোলেন আখতার হোসেন।
সেমিনারে জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানে মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। যার কারণে গণপরিষদের দুইজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সংবিধানে সই করেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জনগণ দ্বারা নির্বাচিত একটা গণপরিষদ কেবল সংবিধান প্রণয়ন করতে পারে। অথচ ১৯৭২ সালে গণপরিষদ গঠন করা হয়েছে ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান সরকারের অধিনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে। স্বাধীন দেশে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গণপরিষদ গঠন করা হয়নি। যার ফলে সংবিধান জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। যেই সংবিধান জনমানুষের মৌলিক চাহিদার কথা বলা হয় না, জনমানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার কথা বলা হয় না সেই সংবিধান আমরা চাই না। আওয়ামী লীগের ফিরে আসা আটকাতে নতুন সংবিধান লাগবে। তাছাড়া ৫৪ বছর ধরে সংবিধানে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ শব্দটি স্থান পায়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
যুবশক্তির সদস্য সচিব ডা. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘সংবিধানের একেকটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কাটাছেঁড়া করে সংবিধানকে বিদঘুটে ও বিশ্রী করে ফেলা হয়েছে। এই সংবিধান ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে আমাদের নতুন সংবিধান লিখতে হবে। নাগরিক অধিকারের বদলে রাতের আঁধারে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে এমন সংবিধান আমরা চাই না।’
তিনি বলেন, ‘এই সংবিধান বোঝার জন্য শিক্ষক রাখতে হয়। সব শ্রেণির মানুষের জন্য বোধগম্য এমন সংবিধান আনতে হবে যাতে রাষ্ট্র সংস্কারের কথা থাকবে এবং সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে। আমরা চাই এমন একটি সংবিধান যাতে লেখা থাকবে, শাসক ও নাগরিকের সমান অধিকার। আমরা এমন সংবিধান চাই যা নাগরিকের উপর অবিচার করবে না।’
সেমিনারে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘৭২ সালে গৃহীত সংবিধানে ফ্যাসিবাদী সব কাঠামো বিদ্যমান ছিল। কারণ তার কয়েক বছর পরেই শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে সংবিধানের যতটুকু কাঠামো ছিল, সেটুকু ধ্বংস করে দিলেন। সে সংবিধান জনগণের অভিপ্রায় ধরে রাখতে পারেনি। ৩৬ জুলাই জনরায়ের মাধ্যমে সেই সংবিধান আসলে বাতিল হয়ে গেছে। সে জন্য আমাদের একমাত্র মুক্তির পথ হচ্ছে নতুন একটি গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান নির্মাণ।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, ‘অভ্যুত্থানের ওপর দিয়ে যেই নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখেছি, সেই নতুন বাংলাদেশের যাত্রার দিকে, গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় আমরা যদি অগ্রসর হতে চাই, আমাদের মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই অগ্রসর হতে হবে।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমরাও নির্বাচন চাই। সেই নির্বাচন অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে। যে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা এই জুলাই সনদকে একটি টেকসই অবস্থায় নিয়ে যেতে সক্ষম হব।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো যুগপৎ আন্দোলনে এনসিপি যাবে না। এনসিপির অন্যান্য যে দাবিগুলো আছে, যে রাজনৈতিক দলগুলো সেই দাবিগুলোর সঙ্গে তাদের আমাদের একাত্মতা আছে-আমরা সেই দাবিগুলো নিয়ে আমাদের মতো করে আন্দোলন বা কর্মসূচি দেব। কিন্তু কোনো জোটের সাথে, কোনো দলের সাথে, কোনো যুগপৎ আন্দোলনে এনসিপি যাবে না।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘অনেক কথা ছড়াচ্ছে বাজারে এনসিপি একটি জোটে যাচ্ছে। এনসিপি কোনো জোটে যাবে না। এনসিপি সামনে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে, মধ্যমপন্থি বাংলাদেশি রাজনীতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে।’
দেশের বিদ্যমান সংবিধানকে মৃত উল্লেখ করে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আমাদের সংকট হচ্ছে সংবিধান নিয়ে এবং এই সংবিধানের ভেতর থেকেই বারবার মিলিটারি শাসন আসে, বারবার জরুরি অবস্থা আসে।’
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে যে বাহাত্তরের সংবিধানটা আছে, এটা একটা মরহুম সংবিধান। কিন্তু আমাদের দেশের স্টাবলিশমেন্ট এটা রাখবেই। রাজা মারা গেছেন, কিন্তু তার মমিটা দেখিয়ে বলা হবে, এটা জীবিত আছে। এই সংবিধান আর নাই।’
বর্তমান সরকার সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের ওপর ভিত্তি করে গঠিত হয়েছে-এটা ধাপ্পাবাজি বলে অভিহিত করেন সারোয়ার তুষার।
১০৬ ধারার মূল বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে বাংলাদেশে, এটার পরে সরকার গঠন করা যাবে কিনা সেটার জন্য শেখ হাসিনার রাষ্ট্রপতি তার প্রধান বিচারপতির কাছে রেফারেন্স পাঠাচ্ছেন, যে বিচারপতি তখন পলাতক। সেই রেফারেন্সের ভিত্তিতে এই সরকার গঠিত হয়েছে। মহা ধাপ্পাবাজি। এর চেয়ে বড় ধাপ্পাবাজি আর হতে পারে না।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘সেই ১০৬-এর সার্টিফায়েড কপিটা কই, আমরা দেখতে চাই। কপিটা দেখান। আমাদের একটা ভীষণ বিপদের মধ্যে আপনারা নিয়ে যাচ্ছেন। যেকোনো মুহূর্তে যে কাউকে দিয়ে এই সরকারের আইনিভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে। ১০৬-এর সার্টিফায়েড কপিটা আসলে কোথায়? কোনো শুনানি হয়নি। ১০৬-এর একটা বাধ্যবাধকতা আছে যে শুনানি হতে হবে। আপনারা কেউ শুনানির কথা শুনেছেন?’
এনসিপির নেতা বলেন, ‘যখন জুলাই সনদের বাস্তবায়নের কথা আসছে, তারা আমাদের আবার আদালত দেখাচ্ছেন। ১০৬ দেখাচ্ছেন। ১০৬ একটা সাংবিধানিক ব্যাপার। সংবিধানের অধীন একটা বিষয় দিয়ে কীভাবে অতি সাংবিধানিক বিষয়ের ফয়সালা হতে পারে? ১০৬-এর মধ্য দিয়ে জুলাই সনদ টেকানো যাবে না, পার্লামেন্টও টেকানো যাবে না।’
ভোলা-বরিশাল সেতু সহ পাঁচ দফা দাবিতে তেঁতুলিয়া নদী পেরিয়ে ছাত্র যুবকের ঢাকার পথে লংমার্চ
মানবিকতার আলোকবর্তিকা : ভোলার প্রিয় জেলা প্রশাসক আজাদ জাহানের বিদায়বেলা
ভোলার মানবিক ডিসি মো. আজাদ জাহান অন্যত্র যোগদান, রেখে গেলেন সেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত
মনপুরায় যুবদল-ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশ
জুলাই সনদ ও গণভোটের আগে নির্বাচন নয় : মনপুরায় প্রফেসর কামাল উদ্দিন
মনপুরায় ধানক্ষেত থেকে হরিণ শাবক উদ্ধার
বরিশালে রেইজ প্রকল্পের দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন নানা পন্য নিয়ে উদ্যোক্তাদের মেলা
ফেব্রুয়ারিতে উৎসবমুখর ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতির উদ্দেশে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের
ভোলায় বিষের বোতল নিয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকা
ভোলায় পাঁচ সন্তানের জননীকে গলা কেটে হত্যা
ভোলার ৪৩ এলাকা রেড জোন চিহ্নিত: আসছে লকডাউনের ঘোষনা
উৎসবের ঋতু হেমন্ত কাল
ভোলায় বাবা-মেয়ে করোনায় আক্রান্ত, ৪৫ বাড়ি লকডাউন
ভোলায় এবার কলেজ ছাত্র হত্যা, মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার
ভোলায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন করোনা রোগী: এলাকায় আতংক
ঢাকা-ভোলা নৌ-রুটের দিবা সার্ভিসে যুক্ত হলো এমভি দোয়েল পাখি-১র
ভোলায় কুপিয়ে হত্যা করে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই, আটক এক
ভোলার চরফ্যাশনে করোনা উপর্সগ নিয়ে এক নারীর মৃত্যু