অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বৃহঃস্পতিবার, ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ | ১৬ই কার্তিক ১৪৩১


বোরহানউদ্দিনে ক্রমশ জনপ্রিয় হচেছ সূর্যমুখীর চাষ


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩০শে এপ্রিল ২০২০ রাত ০৮:১৫

remove_red_eye

৯২৮

বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি:: ভোলার বোরহানউদ্দিনে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সূর্যমুখীর চাষ। এ বছর উপজেলায় সাড়ে ২৭ একর জমিতে সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ৩৩ একর জমিতে কৃষকরা সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। গত বছর এর পরিমান ছিল অর্ধেক। উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে কৃষকরা কম-বেশী এফ-১ ও বারি সূর্যমুখী-২ জাতের সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। উপজেলায় এ বছরই সর্বোচ্চ পরিমান সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে।

তবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে তেলের আমদানী নির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি লাভজনক হওয়ায় কৃষকদের আরও বেশী সূর্যমুখী চাষে উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে। এ লক্ষ্য অর্জণে কৃষকদের যাবতীয় প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক জানান, ‘সূর্যমুখী চাষের ৯০ থেকে ১০৫ দিনের মধ্যেই কৃষকরা বীজ ঘরে তুলতে পারে। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হয় তাহলে চার শতাংশ জমিতে ২৫-২৮ কেজি সূর্যমুখী ফুলের বীজ পাওয়া যাবে। এক মণ বীজ থেকে ১৬-১৮ কেজি তেল পাওয়া যাবে। এ তেলের বাজারমূল্যও বেশী। সূর্যমুখীর তেল ছাড়াও খৈল দিয়ে মাছের খাবার এবং গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এর কোনো অংশই ফেলা যায় না। এছাড়া সূর্যমুখী চাষের পরও কৃষক যথা সময়ে আউশ ধানের চাষ করতে পারবেন। এসব তেল প্রক্রিয়াজাত এবং বাজারজাত করার ক্ষেত্রেও কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান।

উপজেলার বড়মানিকা ইউনিয়নের সূর্যমুখী চাষি মাহাবুব মুন্সি, রফিক রাড়ি, সিরাজ রাড়ি জানান, প্রথম বারের মত সূর্যমুখী চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। তবে গত তিন দিনের বৃষ্টির পর রোদ না হলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।

এছাড়া কুতুবা ইউনিয়নের সূর্যমুখী চাষি অহিদ সর্দার, মোতাহার কালু, দুলাল মিয়া, পক্ষিয়া ইউনিয়নের শামছল হক, নুরনবী, মোতাহার হোসেন জানান, আমরা ফলনে খুশি। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে আমাদের খেত দেখতে আসে; ছবি তোলে।

তারা আরো জানান, আগে তারা জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করতেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এ বছর উপজেলা কৃষি অফিসারের পরামর্শে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। কৃষি অফিস থেকে তাদের বিনামূল্যে সূর্যমুখীর বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।

বড়মানিকা ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন ও পক্ষিয়া বøকের উপ-সহকারী কর্মকর্তা খায়রুল আলম জানান, উপজেলার ৪০-৪৫ জন কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া কৃষকপ্রতি ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার কৃষি অফিস বিনামূল্যে সরবরাহ করেছে। তাদের ব্লকে সূর্যমুখীর ফলন ভালো হয়েছে বলেও তারা জানান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক আরো জানান, উপজেলার মানিকার হাটে সূর্যমুখী ফুল থেকে তৈল তৈরির মিল আছে। আমাদের উৎপাদিত সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে তারা তৈল উৎপাদন করবে। এছাড়া ভবিষ্যতে যাতে কৃষকদের কাছ থেকেই কোম্পানি সরাসরি বীজ কিনে সে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কৃষি অফিস মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।