অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


লালমোহনে ব্রিজের ওপর সাঁকো দিয়ে চলাচল!


লালমোহন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৪শে মার্চ ২০২৪ বিকাল ০৫:৩৩

remove_red_eye

২৪০

নতুন ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া না হলে ব্রিজের পুরো অংশই খালের মধ্যে ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা


লালমোহন প্রতিনিধি : লোহা আর ইট-সিমেন্টের তৈরি ব্রিজ। অথচ ওই ব্রিজের ওপরই সুপারি গাছ দিয়ে বানানো হয়েছে সাঁকো। হাতল হিসেবে দেওয়া হয়েছে লম্বা বাঁশের লাঠি। অদ্ভূত এ চিত্র ভোলার লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর কালমা এলাকার হাচন আলী খালের ওপরের ব্রিজটির।
জানা যায়, ২০০১ সালের দিকে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের কয়েক বছর পর থেকে ধীরে ধীরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে ব্রিজটি। গত প্রায় পাঁচ বছর আগে ব্রিজটির মাঝখান দিয়ে কয়েকটি গর্তের সৃষ্টি হয়। এরপরও মেরামত না করায় আরো জরাজীর্ণ হয়ে যায় ব্রিজটি। যার ফলে গত দুই বছর আগে হঠাৎ করেই মাঝখান থেকে ধ্বসে খালের মধ্যে পড়ে যায় ব্রিজের অধিকাংশ স্থান। এরপর স্থানীয়রা তাদের চলাচলের স্বার্থে ধ্বসে পড়া ওই অংশের ওপর সুপারি গাছ ও হাতল হিসেবে বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে কোনো রকমে চলাচল করছেন। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছেন আশেপাশের কয়েকটি এলাকার অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ।
উত্তর কালমা এলাকার গৃহিণী ঊসা রাণী মন্ডল বলেন, ব্রিজটি দিয়ে নারীদের চলাচলে খুবই কষ্ট হচ্ছে।  তবুও প্রয়োজনের তাগিদে মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করেই এই ব্রিজের ওপর দিয়ে চলতে হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে শিশুদের। এই এলাকার অর্ধশত শিশু ব্রিজটি পার হয়ে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়তে যায়। কখন যেন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শিশুরা, এমন উৎকণ্ঠায় থাকেন অভিভাবকরা।
ওই এলাকার মনোরঞ্জন কবিরাজ জানান, দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটির খুবই বেহাল দশা। তবুও প্রয়োজন সারতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজটির ওপর দিয়ে চলতে হচ্ছে। এই চলাচলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের শেষ নেই। ব্রিজটি এখন আর মেরামতের অবস্থায় নেই, এখানে এখন নতুন ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। খুব দ্রæত সময়ের মধ্যে যদি নতুন ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া না হয় তাহলে ব্রিজের পুরো অংশই খালের মধ্যে ধ্বসে পড়বে। এতে করে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে মানুষের চলাচল।
সবুজ মন্ডল নামে ওই এলাকার এক যুবক বলেন, এখান দিয়ে আগে অটোরিকশাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করতো। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় এখন সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই ব্রিজের ওপর দিয়ে এখন মানুষ চলতেই সমস্যা। এখনো আশেপাশের অন্তত কয়েকটি গ্রামের অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই জরাজীর্ণ ও বেহাল ব্রিজটির ওপর দিয়ে চলাচল করছেন। আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জরুরিভাবে এখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
কালমা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আকতার হোসেন জানান, ব্রিজটির মাঝখান দিয়ে ধ্বসে যাওয়ায় ওই এলাকাসহ আশেপাশের অনেক মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। মানুষজনের এ দুর্ভোগ লাঘবের লক্ষ্যে দ্রæত সময়ের মধ্যে ওই স্থানে নতুন করে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা দ্রæত সময়ের মধ্যে নতুন ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে এলজিইডির লালমোহন উপজেলা প্রকৌশলী রাজীব সাহা বলেন, ওই ব্রিজটিসহ উপজেলায় আরো বেশ কয়েকটি ব্রিজ বেহাল ও জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আমরা ওইসব ব্রিজগুলো পুনর্নিমাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। প্রস্তাবটি পাস হলে এবং বরাদ্দ পেলে বেহাল ও জরাজীর্ণ ব্রিজগুলো পুনর্নিমাণ করা হবে।