অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


যেভাবে ‌‘আপসহীন নেত্রী’ হয়ে ওঠেন খালেদা জিয়া


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ সকাল ১০:২৬

remove_red_eye

৪১

চার দেয়ালের গণ্ডি পেরিয়ে যে নারী উঠে এসেছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতির সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোতে, আজ তিনি নেই। আপসহীন নেতৃত্ব, দৃঢ়তা আর আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত রেখে যাওয়া খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় ইন্তেকাল করেছেন।

জেল, জুলুম, নির্যাতন সবকিছু উপেক্ষা করে গণতন্ত্রের প্রশ্নে তিনি ছিলেন অবিচল। তার রাজনৈতিক জীবনের এই নির্ভীক পথচলাই তাকে দিয়েছে ‘আপসহীন নেত্রী’র ঐতিহাসিক উপাধি।

১৯৮১ সালের ৩০ মে এক সামরিক অভ্যুত্থানে শহীদ হন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান। সেই আকস্মিক ও বেদনাবিধুর ঘটনায় নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দিশেহারা হয়ে ওঠে দল ও নেতাকর্মীরা। ঠিক সেই শোক ও অনিশ্চয়তার মুহূর্তেই রাজনীতির ময়দানে পা রাখেন বেগম খালেদা জিয়া। ব্যক্তিগত বেদনা ও স্বামীর শূন্যতা বুকে ধারণ করেই তিনি কাঁধে তুলে নেন একটি বড় রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব।

১৯৮১ সাল থেকেই একদিকে দলকে পুনর্গঠন, অন্যদিকে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে আপসহীন অবস্থান নেন খালেদা জিয়া। সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি। বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রাজনীতির যে ভিত্তি শহীদ জিয়াউর রহমান রেখে গিয়েছিলেন, সেই পথেই বিএনপিকে এগিয়ে নেন খালেদা জিয়া কোনো আপস ছাড়াই।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, খালেদা জিয়ার দৃঢ় ও সাহসী নেতৃত্বেই ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতন ঘটে স্বৈরাচার এরশাদের। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সেই আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন অন্যতম প্রধান কাণ্ডারি। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হয় এবং তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সেই অর্জন তাকে ইতিহাসে অনন্য উচ্চতায় স্থান দেয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জাতীয়তাবাদ, দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি কখনও একচুল ছাড় দেননি। ভয় কিংবা লোভ কোনোটির কাছেই মাথা নত করেননি। দীর্ঘ সময় কারাবরণ, রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং মারাত্মক অসুস্থতার মধ্যেও তিনি মাতৃভূমি ছেড়ে যাননি। গণতন্ত্র ও ইসলামী মূল্যবোধের প্রশ্নে তিনি বারবার নিজেকে প্রমাণ করেছেন আপসহীন ও দৃঢ়চেতা নেত্রী হিসেবে।