অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


লালমোহনের যুবক জাফরের বাঁচার আকুতি


লালমোহন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ রাত ১১:৩৮

remove_red_eye

২৪৩

লালমোহন প্রতিনিধি : ৩৫ বছরের যুবক মো. জাফর। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে গিয়েছিলেন সৌদি আরব। তবে এখন নিজেই হয়ে পড়েছেন অস্বচ্ছল। মরণব্যাধী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে তাকে। দুরারোগ্য এই ব্যাধীতে আক্রান্ত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। এরইমধ্যে সৌদি থেকে দেশে ফেরা ও চিকিৎসায় তার ব্যয় হয়ে গেছে অন্তত আটলাখ টাকা। সৌদি আরব গিয়ে কিছু জমি কিনলেও সেই জমিও বিক্রি করে দিতে হয়েছে চিকিৎসার জন্য। ধার-দেনায় কোনো রকমে চলছে যুবক জাফরের চিকিৎসা। পরিপূর্ণ চিকিৎসা করাতে দরকার অনেক টাকার। যা জোগাড়ের সাধ্য নেই জাফর ও তার পরিবারের।
যুবক জাফর ভোলার লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রায়চাঁদ এলাকার মৃত রফিজল পাটওয়ারীর ছেলে। ব্যক্তিগত জীবনে জাফর বিবাহিত। তার সংসারে রয়েছে স্ত্রীসহ দুই সন্তান। যার মধ্যে একজন ছেলে ও একজন মেয়ে। তারা স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। বাবার দুরারোগ্যব্যাধীতে আক্রান্তের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম তাদের পড়ালেখা।
জাফর জানান, দেশের বাহিরে থাকাকালীন প্রায়ই পেট পুলে থাকতো। মাঝে মাঝে বমি হতো। বিগত কয়েক মাস ধরে শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ যাচ্ছিল। পরে বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে পরামর্শ করলে তারা দেশে চলে আসতে বলেন। এরপর গত তিন মাস আগে দেশে ফিরে আসি। দেশে এসে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি) হসপিটালে ডাক্তার দেখাই। সেখানের ডাক্তার কিছু পরীক্ষা করাতে বলেন। ওইসব পরীক্ষা করানো পর আমার লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা যায়। সমস্যা ছিল খাদ্যনালীতেও। তখন খাদ্যনালীর অপারেশন করা হয়। সেখানে খরচ হয়েছে চার লাখ টাকা। তবে লিভারে ক্যান্সারের ফলে ডাক্তার বলেছেন নয়টি কেমোথ্যারাপী দিতে হবে। ডাক্তারের নির্দেশনায় এরইমধ্যে ঢাকার একটি হসপিটালে দুইটি থ্যাপারী দিয়েছি। যার জন্য খরচ হয়েছে দুই লক্ষাধিক টাকা। এরইমধ্যে দেশে ফেরা ও চিকিৎসার পেছনে অন্তত আটলাখ টাকা চলে গেছে।  আর টাকা জোগাড়ের সাধ্য নেই। তবে দিতে হবে এখনো সাতটি কেমোথ্যারাপী। থ্যারাপীর সঙ্গে লাগবে ওষুধও।
তিনি আরো জানান, সবমিলিয়ে যার জন্য এখনো দরকার পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা। কিভাবে এ টাকা জোগাড় করবো তাই ভেবে উঠতে পারছি না। ঠিকমতো চিকিৎসা করাতে না পারলে হয়তো বেশি দিন বাঁচবো না। আমি মারা গেলে আমার ছোট ছোট দুই সন্তানের কি হবে? সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে হলেও আমি সকলের কাছে আমার চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা কামনা করছি।
যুবক জাফরের ছোট ভাই মো. জাকির বলেন, পারিবারিকভাবে আমরা তেমন স্বচ্ছল নই। বাবা মারা গেছেন। সংসারে এখন আছি আমরা ছয় ভাই। যার মধ্যে জাফর তৃতীয়। তিনি সংসারের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন। এখন তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত। তার এই চিকিৎসার জন্য দরকার বহু টাকার। এরইমধ্যে জমি বিক্রি আর ধার-দেনা করে চিকিৎসা ও অন্যান্য বিষয়ে অন্তত আট লাখ টাকা ব্যয় হয়ে গেছে। আমার ভাই জাফরের স্ত্রীসহ দুই সন্তান রয়েছে। আমার ভাইয়ের কিছু হলে তাদের কি হবে? ওই দুই সন্তানের দিকে তাকিয়ে হলেও সকলের কাছে ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা কামনা করছি। হয়তো সমাজের হৃদয়বান ও বিত্তবানদের সহযোগিতায় বেঁচে যাবেন আমার ভাই। সহযোগিতার জন্য ০১৬১৯৬২২৫২৪ এই নম্বরে যোগাযোগের অনুরোধ করছি।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মাসুদ বলেন, দুরারোগ্য ব্যাধীতে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সরকারিভাবে অনুদানের ব্যবস্থা রয়েছে। ওই ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।