অচিন্ত্য মজুমদার
প্রকাশিত: ৩০শে ডিসেম্বর ২০২০ রাত ১০:৩৯
১০৭
অচিন্ত্য মজুমদার: শীত এলেই প্রতিবছর ভোলার চরাঞ্চলে পরিযায়ী পাখি (অতিথি পাখি) এসে জড়ো হতে শুরু করে। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয় নি। নভেম্বরের মাঝা মাঝি থেকে জেলার বিভিন্ন চরবিরল অংশে অতিথি পাখিরা এসে জড়ো হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে রয়েছে অনেক বিপন্ন পাখি। তারা ছুটে আসে নির্দিষ্ট খাবারের সন্ধানে। ভোলার চরাঞ্চলেই তাদের আহার রয়েছে। শীত মৌসুমে এরা ছয়মাস ভোলায় অবস্থান করে। বাংলাদেশে পাখিদের জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের মধ্যে ভোলা একটি। তাই বিশ্বের বহু বিপন্ন পাখির টিকে থাকার জন্য এই অঞ্চলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০২০ সালে ঢাকা থেকে ভোলায় জলপাখি গণনা করতে আসা বন্যপ্রাণী গবেষক ও পাখি পর্যবেক্ষক সামিউল মেহেসনিন জানান, ১৯টি কাদা চর পর্যবেক্ষণ করে এবছর সর্বমোট ৬২ প্রজাতির ৪০ হাজার ৫১টি পাখির দেখা মিলেছে ভোলার উপক‚লে। যার মধ্যে ১৫ প্রজাতির ১৫ হাজার ৩২৭টি হাঁস ও ৩১ প্রজাতির ১২ হাজার ৬৫৭টি সৈকতপাখি রয়েছে। এছাড়া মহা বিপন্ন পাখি চামুচঠুঁটো বাটানের সন্ধান মিলেছে ৩টি, বিপন্ন পাখি নর্ডম্যান সবুজপা ১টি, সংকটাপন্ন পাখি দেশি গাঙচষা ১১০টি, বড় নথ ১৮টি। প্রায় সংকটাপন্ন পাখি কালালেজ জৌরালির সন্ধান মিলেছে ৩ হাজার ১৮৪টি, দাগিলেজ জৌরালির ৮টি,এশীয় ডউচার ৩টি, ইউরেশিয়ান গুলিন্দা ২৫৭টি, নদীয়া পানচিল ১২টি, কালামাথা কাস্তেচড়া ৭৭৫টি, মরচেরং ভুতিহাস ১টি।
শীত এলেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি এসে জড়ো হয় ভোলার চরাঞ্চলে। আর প্রতি বছর এসব পাখির মাঝে এসে ভিড় করে পৃথিবীর “মহাবিপন্ন” কিছু পাখি। যার দেখা মেলেনা বিশ্বের কোথাও। এমনটাই জানালেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন পাখি পর্যবেক্ষক ইনাম আল হক। এসব বিরল পাখির মধ্যে রয়েছে ছোট মদনটাক, নর্ডম্যান সবুজপা, কালামাথা কাস্তেচড়া, কালালেজ জৌরালি, ইউরেশিয়ান গুলিন্দা। বিশেষ করে চামুচঠুঁটো বাটান দেশি গাঙচষা, ঝিনুকমার, মরচেরং ভুতিহাস, নদীয়া পানচিল ও বড় মোটাহাটু জাতের অতি বিরল পাখির সন্ধান মিলেছে ভোলার চরাঞ্চলে। বিশ্বের বহু বিপন্ন পাখির টিকে থাকার জন্য এই অঞ্চলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই পাখির বিচরণ ক্ষেত্রগুলো মানুষের দখলমুক্ত করতে সরকারের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন পাখি পর্যবেক্ষকরা।
এসময় ইনাম আল হক আরো বলেন, বিশ্বের “মহাবিপন্ন” পাখি চামচঠুঁট-বাটান এবং সংকটাপন্ন পাখি দেশি গাঙচষা, বড় নট ও বড়গুটি ঈগল ছাড়াও অনেক প্রজাতির হাঁস ও সৈকতপাখি শীতে ভোলার চরগুলিতে এসে বসবাস করে। প্রতিটি পাখির আহার অন্য পাখির থেকে ভিন্ন। তাই যে পাখির আহার যেখানে থাকে সেখানেই তারা আসে। তিনি বলেন, যে প্রজাতির পাখিগুলো ভোলার চরাঞ্চলে আসে বুঝতে হবে এর আহার এখানেই আছে। পৃথিবীর আর কোথাও নেই। ফলে তাকে এখানেই আসতে হবে। এখানকার কাদা চরে ওই আহার না থাকলে সে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এমন পাখির মধ্যে চামুচঠুঁটো বাটান অন্যতম। এটি পৃথিবীর মহাবিপন্ন একটি পাখি। মিয়ানমারের মার্টবান চর এবং ভোলার চর শাহাজালাল ও দমারচর ছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও এর খাবার নেই। তাই শীত মৌসুমে এরা ছয়মাস ভোলায় অবস্থান করে। বাংলাদেশে পাখিদের জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের মধ্যে ভোলা একটি। তাই বিশ্বের বহু বিপন্ন পাখির টিকে থাকার জন্য এই অঞ্চলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চামুচঠুঁটো বাটান পাখি সম্পর্কে বলতে গিয়ে জলপাখি গণনা দলে থাকা বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশ ভ্রমনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন পর্যবেক্ষক অনু তারেক জানান, প্রতিবছরই পৃথিবীর মহাবিপন্ন পাখির মধ্যে চামুচঠুঁটো বাটান’র দেখা মিলছে ভোলার চরাঞ্চলে। পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে মহাবিপন্ন এ পাখিটি যে কোন সময় পৃথিবী থেকে হারিয়ে যেতে পরে। তারা ধারনা করছেন বর্তমানে পৃথিবীতে মাত্র ১০০ জোড়া চামুচঠুঁটো বাটান পাখি অবশিষ্ট রয়েছে। এরা শীত মৌসুমে সাইবেরিয়া থেকে ছুটে আসে বাংলাদেশে। আবার প্রজননের জন্য জুলাই-আগোস্ট মাসে এরা নিজ ভূমে ফিরে যায়। ভারতীয় উপমহাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার কোথাও গত একযুগে এই পাখিটির অস্তিত্ব মিলেনি। স্বভাবত কারণেই চামুচঠুঁটো বাটান পাখিটি অন্য পাখির ঝাঁকের মধ্যে থাকে। ভিজা বালি ও কাদার উপরের স্তর থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে। ভোলার দমার চর ও চর শাহাজালালে এ পাখিটির বিচরণ রয়েছে বলে জানন অনু তারেক।
কথা হয় পাখি-পর্যবেক্ষক ও পর্বত আরোহী এম.এ মুহিতের সাথে। তিনি ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর ভোলায় পাখি শুমারি করে আসছেন। তিনি জানান, ভোলার চরগুলোতে ৪ ধরনের বিরল পাখির দেখা মিলে। এগুলো হলো মহাবিপন্ন, বিপন্ন, প্রায় বিপন্ন ও সংকটাপন্ন। বলা হয় যে দেশে যত বেশি পাখি আসে সে দেশের প্রকৃতি তত নির্ভেজাল। যেহেতু পৃথিবীর মহাবিপন্ন পাখিরা তাদের আসার স্থল হিসেবে ভোলার এসব চরাঞ্চলগুলো বেছে নিয়েছে। সেহেতু দেশের পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষার জন্য সরকারের উচিৎ এসব যায়গাগুলোকে সংরক্ষ করা। বিশেষ করে এসব চরে মানুষ যাতে অবাধে বিচরণ করতে না পারে। এসময় তিনি বলেন, আইন করে পাখিদের রক্ষা করা যাবেনা। এজন্য মানুষ কে সচেতন করতে হবে। অনেকে জানেও না যে পাখি মারা অপরাধ। তাই আমরা পাখি রক্ষায় বার্ড ক্লাবের পক্ষ থেকে মানুষ কে সচেতন করার কাজ করে যাচ্ছি।
ভোলার সঙ্গীত গুরু দক্ষিণা মজুমদারের ২৪তম মৃত্যু বার্ষিকী
ভোলায় বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় মাছের জাতকে ধরে রাখতে অবহিতকরন কর্মশালা
চরফ্যাশনের চরমাদ্রাজ ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী ডাঃ আব্দুল মান্নানের শোডাউন
জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস উপলক্ষে বাংলা বাজারে সিপিপি সেচ্ছাসেবকদের র্যালী
ভোলার রাজাপুরে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের লক্ষ্যে ভোলায় প্রস্তুতি সভা
ভোলা পৌরসভার নব নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের পক্ষ থেকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে ফুলের শুভেচ্ছা
ভোলায় গ্রাম আদালত বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সভা
ভোলায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরন বিতরণ
চরফ্যাসনে সাংবাদিকদের কলম বিরতি
ভোলার ৪৩ এলাকা রেড জোন চিহ্নিত: আসছে লকডাউনের ঘোষনা
ভোলায় বাবা-মেয়ে করোনায় আক্রান্ত, ৪৫ বাড়ি লকডাউন
ভোলায় এবার কলেজ ছাত্র হত্যা, মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার
ভোলায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন করোনা রোগী: এলাকায় আতংক
ভোলার চরফ্যাশনে করোনা উপর্সগ নিয়ে এক নারীর মৃত্যু
ভোলায় কুপিয়ে হত্যা করে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই, আটক এক
ভোলায় ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আরও ৬ জনের করোনা শনাক্ত
ভোলায় উপজেলা চেয়ারম্যানসহ আরো ১০ জন করোনা আক্রান্ত
ভোলায় বাল্যবিয়ে কথা বলে চাঁদাদাবী : আটক হলো ২ কথিত সাংবাদিক
ভোলায় হাসপাতালের টেকনিশিয়ানসহ আরও ৩ জন করোনায় আক্রান্ত