বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:৪১
৩৪
বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা দেশ।
আজ মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ও প্রবাসে শোকের ছায়া নেমে আসে। দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ দেশের রাজনীতির প্রধান অভিভাবক, জাতীয় ও আপোষহীন দেশনেত্রী খ্যাত বেগম খালেদা জিয়ার বিদায়ে গভীর শোক প্রকাশ করছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে রাজপথ, সর্বত্রই এখন শোকের আবহ। দলীয় নেতা-কমীদের মাঝে শোকের মাতম বিরাজ করছে।
আজ সকাল ৬টায় মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ভিড় করতে শুরু করেন হাজার হাজার মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই জনস্রোত বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্রধান সড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। হাসপাতালের সামনে উপস্থিত নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের চোখে ছিল অশ্রু। দীর্ঘ অসুস্থতার পর প্রিয় নেত্রীর এই চিরবিদায় মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে অনেকের।
সেখানে উপস্থিত ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ জালাল উদ্দিন বলেন, তিনি সুদূর নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন কেবল নেত্রীকে এক নজর দেখার জন্য।
এদিকে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকেও গভীর শোক জানানো হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক শোকবার্তায় বেগম খালেদা জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক পরম মহিমান্বিত ব্যক্তিত্ব। গণতন্ত্র, বহুদলীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তাঁর অসামান্য ভূমিকা ইতিহাসে অম্লান হয়ে থাকবে। স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তাঁর আপসহীন নেতৃত্ব বারবার জাতিকে গণতন্ত্রহীন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ দেখিয়েছে এবং মুক্তির প্রেরণা যুগিয়েছে। দেশ ও জাতির প্রতি তাঁর সমুজ্জ্বল অবদান জাতি চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
তিনি আরও বলেন, তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রা, গণমুখী নেতৃত্ব এবং প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রাখতে তাঁর অবিচল ভূমিকা অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এমন একজন মহান, দূরদর্শী ও নিখাদ দেশপ্রেমিক নেত্রীর শূন্যতা পূরণ হবার নয়।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজ সকাল থেকেই শোকের মাতম চলছে। সাধারণ জনগণসহ, রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ নিজেদের প্রোফাইল ছবি কালো করে এবং বেগম খালেদা জিয়ার ছবি পোস্ট করে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। ফেসবুকে নিউজফিডজুড়ে আজ শুধুই শোকবার্তা।
সাবেক তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক একাউন্টে লিখেছেন, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক খালেদা জিয়াকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন। আমিন।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও এই মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘রাজনীতি করতে গিয়ে নিজের এক ছেলেকে হারিয়েছেন, আরেক ছেলেকে ১৭ বছর দেখতে পারেননি। রাজনীতির কারণে হারিয়েছেন স্বামীকে। এত এত কঠিন সময় পার করেছেন তবুও নিজের দেশ ছাড়েন নি তিনি। চির বিদায় হে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আপনার কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শিখার আছে, জানার আছে। বাংলাদেশের মানুষ আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে আজীবন।’
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ক্রীড়াঙ্গনের ব্যাক্তিবর্গ, সাংবাদিক, শিক্ষক, দল-মত নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষসহ সমাজের বিশিষ্টজনরা তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল লিখেছেন, ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন।
তাঁর প্রয়াণে দেশ হারাল এক দৃঢ় নেতৃত্বের প্রতীককে। মহান আল্লাহ তাঁর রূহের মাগফিরাত দান করুন ও জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন।’
রাজধানীর পাশাপাশি শোকের ছায়া নেমেছে সারা দেশে। বেগম খালেদা জিয়ার পৈতৃক নিবাস ফেনী এবং বিএনপির রাজনৈতিক দুর্গ হিসেবে পরিচিত বগুড়ায় শোকের দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। স্থানীয় সংবাদদাতারা জানান, মৃত্যুর খবর পৌঁছামাত্রই বগুড়ার বিভিন্ন রাস্তায় মানুষ নেমে আসেন। বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসায় মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়া সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারেও তাঁর জন্য বিশেষভাবে দোয়া করা হয়।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রিয় নেত্রীকে শেষবারের মতো দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনেও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে এবং নেতাকর্মীদের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে।
জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোতে বেগম খালেদা জিয়ার পাশে ছিলেন তাঁর বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মায়ের বিদায়ে তারেক রহমানের শোকাতুর অবস্থা দেশবাসীর হৃদয়কে ভারাক্রান্ত করেছে।
পারিবারিক ও দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে। গণতন্ত্রের মা হিসেবে পরিচিত এই নেত্রীর বিদায়ে যে শোকের আবহ তৈরি হয়েছে, তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অমর দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ও একদিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেবেন প্রধান উপদেষ্টা
৫১টি দল মনোনয়ন জমা দিয়েছে: ইসি
রুমিন ফারহানাসহ বিএনপির ৯ নেতা বহিষ্কার
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতি হারাল এক মহান অভিভাবক : প্রধান উপদেষ্টা
দেশের মানুষই ছিল তার পরিবার, অস্তিত্ব: মাকে নিয়ে তারেক রহমান
আমরা গভীর শোক ও বেদনায় নিস্তব্ধ, জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা
নেত্রীর জন্য দোয়া চাই, গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাই: ফখরুল
খালেদা জিয়ার জানাজা পড়াবেন যিনি
ভোলায় বিষের বোতল নিয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকা
ভোলায় পাঁচ সন্তানের জননীকে গলা কেটে হত্যা
ভোলার ৪৩ এলাকা রেড জোন চিহ্নিত: আসছে লকডাউনের ঘোষনা
উৎসবের ঋতু হেমন্ত কাল
ভোলায় বাবা-মেয়ে করোনায় আক্রান্ত, ৪৫ বাড়ি লকডাউন
ভোলায় এবার কলেজ ছাত্র হত্যা, মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার
ঢাকা-ভোলা নৌ-রুটের দিবা সার্ভিসে যুক্ত হলো এমভি দোয়েল পাখি-১র
ভোলায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন করোনা রোগী: এলাকায় আতংক
জাতীয় সংসদে জাতির পিতার ছবি টানানোর নির্দেশ
ভোলায় কুপিয়ে হত্যা করে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই, আটক এক