অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বুধবার, ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৭ই পৌষ ১৪৩২


জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে একটি কাগজে সই করা হচ্ছে: নাহিদ ইসলাম


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭ই অক্টোবর ২০২৫ বিকাল ০৪:৫২

remove_red_eye

৭৫

আজ কিছু রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐকমত্যের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে একটি কাগজে সই করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে জাতীয় শ্রমিকশক্তির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের কিছু মানুষ মনে করে, কিছু রাজনৈতিক দল এক টেবিলে বসলেই জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা হয়। আজকেও জুলাই সনদ নামে একটি সনদে কিছু রাজনৈতিক দল সই করবে। তারা এর নাম দিতে চায় জাতীয় ঐক্য, এটা কোনো জাতীয় ঐক্য নয়। জাতীয় ঐক্য এখানে, যেখানে শ্রমিক-কৃষকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ জাতীয় স্বার্থে দেশপ্রেমের ভিত্তিতে একত্রিত হয়ে লড়াই করে। যেটা হয়েছিল ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে।

তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে কোনো রাজনৈতিক দলের পরিচয় দেখিনি, কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানার দেখিনি, আমরা দেখেছিলাম ছাত্র-শ্রমিক-শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, যারা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। আমরা মনে করি, আমরা সেই জাতীয় ঐক্যে আছি, সেই ঐক্যের দিকে এগোচ্ছি। যেখানে ছাত্র-শ্রমিক কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করবে, সংগ্রাম করবে।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, শুধু নির্বাচন কেন্দ্রিক ছয়টি কমিশন নিয়ে ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়েছে। সেখানেও গণতন্ত্রের জন্য ভালো ইন্টেনশন দেখতে পাইনি। ফলে আমরা মনে করি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের যে লড়াই আমরা শুরু করেছি, অর্থনৈতিক রূপান্তরের যে লড়াই শুরু করেছি, আমরা যেটাকে বলেছিলাম বৈষম্যমূলক সমাজের বিপরীতে ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ। সেই বৈষম্যহীন সমাজের জন্য ছাত্র-শ্রমিক-কৃষকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ একসঙ্গে লড়াই করব।  

গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে গালগল্প শোনানো হয়েছে, প্রবৃদ্ধির গালগল্প শোনানো হয়েছে—বাংলাদেশকে সেই অর্থনৈতিক উন্নয়ন দেখানো থেকে বের হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নের কেন্দ্রে থাকতে হবে মানবিক মর্যাদা এবং মর্যাদাপূর্ণ কর্মসংস্থান। আমাদের লক্ষ্য দায় ও দরদের সমাজ প্রতিষ্ঠা।

জাতীয় শ্রমিকশক্তির আত্মপ্রকাশ প্রসঙ্গে নাহিদ আরও বলেন, আজকে একটি ঐতিহাসিক দিন। এই দিনে জাতীয় শ্রমিকশক্তি সেই অঙ্গীকার ও লক্ষ্য নিয়ে আত্মপ্রকাশ করছে। আর এই দিনে কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্যের নামে জনগণের সাথে প্রতারণা করে একটি কাগজে সই করছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি শ্রমিকদের পক্ষে রাজনীতি করবে। শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজনীতি করবে।

তিনি বলেন, কল-কারখানাতে, বস্তিতে আগুনে শ্রমিক মারা গেলে শ্রমিকের জীবনের দাম দেওয়া হয় দুই থেকে তিন লাখ টাকা। শ্রমিকের জীবনের কোনো মূল্য হয় না। শ্রমিকের শ্রম দিয়ে অর্থনীতির চাকা ঘোরে।

এনসিপির আহ্বায়ক আরও বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশে যে লুটপাট হয়েছে, যে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হয়েছে, সেখান থেকে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের দিকে যেতে চাই। ফ্যাসিবাদের সময়ের যেসব রাঘব-বোয়াল ছিল, মাফিয়া ছিল, অলিগার্করা ছিল তাদের বিচারের আওতায় আনা হয় নাই। সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে তাদের ব্যবসাগুলোকে রক্ষা করা হচ্ছে। শ্রমিকদের শোষণকারী হিসেবে সেই অলিগার্কিক ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই। সমাজের সেই বৃহত্তর অংশ যারা সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, বাংলাদেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে রক্তঘাম দিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখছে, তাদের ন্যায্য পক্ষে আমরা থাকব। শ্রমিক শক্তি এগিয়ে যাবে।