অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


ভোলার মেঘনা নদী থেকে ড্রেজারসহ ৫ ব্যাক্তি দুই দিন ধরে নিখোঁজ


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৮ই জুলাই ২০২৪ সন্ধ্যা ০৭:৪০

remove_red_eye

৩১১

           নৌ পুলিশ,কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের টিমের উদ্ধার তৎপরতা শুরু তীব্র স্রোতে উদ্ধার কাজ ব্যাহত


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক : ভোলার মেঘনা নদীতে বালু কাটার ড্রেজারসহ ৫ ব্যাক্তি দুই দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। আজ সোমবার সকালে নিখোঁজদের খুঁজতে নৌ পুলিশ,কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবরি টিম ঘটনা স্থলে গিয়ে নদীতে অনুসন্ধান করে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে মেঘনা নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ ঘটনায় ভোলা মডেল থানায় রবিবার রাতে একটি জিডি করা হয়েছে। স্থানীয়রা ধারণা করছেন,ড্রেজারসহ ৫ ব্যাক্তি মেঘনা নদীতে ডুবে গেছে। তবে ড্রেজারসহ ৫ জন কি ভাবে নিখোঁজ বা ডুবে গেছে সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয় যায়নি। নিখোঁজ শ্রমিকদের সন্ধানে তাদের স্বজনরা মেঘনা নদীর পাড়ে অপেক্ষা করছে।

ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের মোঃ শাহে আলম নামে এক ব্যক্তি রবিবার রাতে ভোলা মডেল থানায় করা জিডিতে উল্লেখ করেন , গত ১ মাস যাবৎ  ইলিশা নদীতে তিনি সহ আরো ৩ জন পার্টনার এবং ৫ জন লেবার সহ ড্রেজার দিয়ে বালু কেটে আসছে। গত ৬ জুলাই রাত অনুমান ১১ টার দিকে  ভোলা সদর উপজেলার  পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ইলিশা বালুর মহল ০৩নং এলাকার মেঘনা নদীতে তার ব্যবসায়িক পার্টনার নূরে আলম(নুক)সহ ৫জন শ্রমিক নদীতে ড্রেজার নিয়ে অবস্থান করছিলো। কিন্তু পর দিন সকাল থেকে নদীতে ড্রেজার সহ ওই ৫ ব্যাক্তি কে দেখা যাচ্ছে না। এর পর তাদের বিভিন্ন স্থানে খোঁজা খুঁজি করে তাদের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। এমনকি নিখোঁজ ব্যক্তিদের মোবাইল ফোন নাম্বার বন্ধ রয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার  ৫ জন হচ্ছে ব্যবসায়িক পার্টনার নূরে আলম(নুক) (৪০)  পিতা- সেরাজুল হক হাওলাদার,  শ্রমিক  মোঃ সিয়াম (২২) , পিতা আব্দুল হাই বকশি, মোঃ আরিফ (২৫) পিতা- হানিফ মিঝি,  মোঃ তানজিল ও মোঃ হারুন(৪০)  পিতা মোঃ ইউনুছ,পিতা- মোঃ হোসেন । নিখোঁজ ব্যক্তিদের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের পাঙ্গাশিয়া গ্রামের ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে। এদিকে বালুর ড্রেজারে থাকা নিখোঁজদের খুঁজতে তাদের আত্মীয় স্বজনরা মেঘনা নদীর তীরে অপেক্ষা করছে। তাদের দাবী যাতে দ্রæত তাদেরকে খুঁজে বের করা হয়। নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজন মো. জহির জানান, তার খালু ড্রেজারে বালু কাটার কাজ করতেন। শনিবার রাত থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এখন ইলিশা ঘাটে এসে জানতে পারেন ড্রেজারটি নাকি ডুবে গেছে। রাতে বালু কাটা বন্ধ করে ড্রেজারের পাইপ বেঁধে রেখে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। পরে রাতে বালুর মধ্যে পাইপ আটকে গিয়ে আস্তে আস্তে ড্রেজারটিসহ তারা ডুবে যায়।

এ দিকে নিখোঁজ ড্রেজার ও শ্রমিকদের সন্ধানে সোমবার সকাল থেকে কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোনের সদস্যরা ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবরী দল এবং ইলিশা নৌ-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে রয়েছে। নদীতে তীব্র স্রোতের কারেন উদ্ধার অভিযান চালানো যাচ্ছে না। ¯্রােত কমলে ডুবরী দল উদ্ধার অভিযান চালাবেন বলে তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত নিখোঁজ শ্রমিকদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ভোলা সদর উপজেলার স্টেশন ইনচার্জ মো. ফারুক সাংবাদিকদের জানান, সোমবার সকালে বরিশাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবরী দল ভোলায় এসে ঘটনাস্থলে রয়েছে। নিখোঁজ ড্রেজারটি মোটামুটি সন্ধান পাওয়া গেছে। সেটি নদীর ৩০ ফুট গভীরে রয়েছে। সেটিকে গ্রাফির মাধ্যমে একটি দড়ি দিয়ে উপরে একটি ট্রলারের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। নদীতে তীব্র স্রোতের কারনে উদ্ধার অভিযান চালানো যাচ্ছে না। ¯্রােত কমলে উদ্ধার অভিযান চালানো হবে। তখন বলা যাবে নিখোঁজ শ্রমিকরা ড্রেজারের ভিতর আছে কি না।
অপর দিকে ইলিশা নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিদ্যুৎ কুমার বড়–য়া সাংবাদিকদের জানান, নিখোঁজদের সন্ধানে নৌ-পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের টিম সকাল থেকেই ঘটনা স্থলে রয়েছে। নদীতে তীব্র স্রোতের কারনে উদ্ধার কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। নদীর স্রোত  কিছুটা স্বাভাবিক হলে উদ্বার কার্যক্রম শুরু হবে। এর আগে ড্রেজার সনাক্ত হয়েছে কি না সেটি বলা যাচ্ছে না। এছাড়াও ড্রেজার উদ্ধারের ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।