অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বুধবার, ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


ভোলায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে ১১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকার ক্ষতি


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩রা জুন ২০২৪ সন্ধ্যা ০৬:৪৮

remove_red_eye

২৩৬

              বিভিন্ন গ্রামে এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়নি

মোঃ ইসমাইল : ভোলায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও ট্রন্সফরমারসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টাকার অংকে ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ক্ষতির পরিমান ১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা ও ভোলা ওয়েষ্ট পাওয়ার জোনের ৯ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা। সব মিলিয়ে বিদ্যুতের ক্ষতির পরিমান ১১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা।  এদিকে ঘুর্ণিঝড়ের পর থেকে গেলো এক সাপ্তাহ পার হলেও অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাকি হলেও এখনো বিভিন্ন গ্রামে এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়নি। এতে করে মানুষ তীব্র গরমে চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে।
রোববার (২ জুন) বিকেলে ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামপুর গ্রামের গৃহবধূ নাজমা বেগম, সাজনুর  বাংলার কন্ঠকে জানান, ৮ দিন হইছে তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। এতে তারা যেমন গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে তেমনি তাদের ফ্রিজে রাখা মাছ, মাংস ও সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। বাচ্চারা বিদ্যুৎ না থাকায় পড়াশোনা করতে পাড়ছেন না।
একাই এলাকার বাসিন্দা আবু মাঝি জানান, বিদ্যুৎ না থালায় আমার ছেলের একমাত্র আয়ের উৎস অটোরিকশায় চার্জ দিতে পারছে না। এজন্য আমাদের আয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন ঠিক মতো বাজার ও করতে পারছে না।
তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আগের দিন বাতাসের সময় তাদের এলাকার বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়। আজ ৮ দিন হলেও বিদ্যুৎ দেয়নি। বিদ্যুৎ অফিসের লোক এসে দেখে গেছে কিন্তু এখনও লাইন দেয় না। আমরা চাই শিগগিরই আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ দেওয়া হোক।
শ্যামপুর তুলাতুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী মো. আকতার হোসেন জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় তাদের পড়াশোনা  করতে খুব কষ্ট হয়ে। রাতে তো তারা পড়তেই পাড়ছেন না।

স্থানীয়রা জানান, ভোলার লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের লেস ছকিনা এলাকার আজিম উদ্দিন বাড়ি, দফাদার বাড়ি, ডাকাত বাড়ি, সলিমুদ্দিন বাড়ি,বদরপুর ইউনিয়নের হাজিরা বাজারের পূর্ব পাশে ও মুসলিমবাজারের পাশে এখনো বিদ্যুৎ চালু হয়নি। লালমোহন পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের খালের পশ্চিম পাড় এলাকায়  এখনো বিদ্যুৎ নেই। গজারিয়া বাজারের পশ্চিমে কচুয়াখালী ও চর কচুয়াখালীতে এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়নি।  

 ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১০২টি বিদ্যুতের পুল ভেঙ্গে গেছে, ১১০টি বিদ্যুতের খুটি উপড়ে যায়। হেলে যায় ১৪০টি খুটি। ইন্সুলেট ভেঙ্গে যায় ২৮৮টি। ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে ৪৭টি।৭৮০টি স্পটে তার ছিড়ে যায়। ভোলা পল্লী বিদ্যুতের সিনিয়র ডিজিএম মিজানুর রহমান জানান, তাদের বিদ্যুৎ সঞ্চলন লাইনের ক্ষতিগ্রস্থ  প্রায় সব কাজ মেরারত করে সচল করা হয়েছে। তাদেও ৪ লক্ষ ৩০ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৮০০ জন গ্রহকের বিদ্যুৎ শনিবার পর্যন্ত বিচ্ছন্ন রয়েছে। টাকার অংকে ক্ষতির পরিমান ১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা।
লালমোহর উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের এজিএম মো: শোয়েব বাশার জানান, আমাদের অধিকাংশ বিদ্যুতের লাইন সচল হয়েছে। আলাদা আলাদা কিছু লাইনের ত্রুটি আজ কালের মধ্যে ঠিক করা হবে।
অপর দিকে ভোলা ওয়েষ্ট পাওয়ার জোনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঝড়ে তাদের ৬১টি,৫২কিঃমিঃ তার, ৩টি টান্সফরমার ,খুঁটি ৬১টি ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে। ভোলা ওয়েষ্ট পাওয়ার জোনের সকল এলাকায় বর্তমানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।