অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


লালমোহনে রাতের আঁধারে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষ, দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট


লালমোহন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৫শে মে ২০২৪ রাত ০৯:৩১

remove_red_eye

২০৯

       নির্বাচনী সহিংসতা

লালমোহন প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহন উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নে দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার মধ্যরাতে লালমোহন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল হাসান রিমন (চশমা প্রতীক) ও  মো. জাকির হোসেনের (তালা প্রতীক) সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত। দফায় দফায় রাত ২টা পর্যন্ত চলে এ সংঘর্ষ।
এ সময় ওই ইউনিয়নের দুটি বাজারের ২৫টি দোকান, ২টি রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে হামলাকারীরা। দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাটের কারণে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শনিবার সকালেও সড়কজুড়ে ছড়িয়ে-ছিঁটিয়ে রয়েছে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া মালামালের ছাই। দোকানগুলোতে রয়েছে কুপিয়ে তছনছ করা ও লুটের চিহ্ন। এ ঘটনায় হতবাক ব্যবসায়ীরা। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পাহারা দিচ্ছেন দোকানগুলো।
এ সময় লডহার্ডিঞ্জের মাদরাসা বাজারে মুদি ব্যবসায়ী মোছলেহ উদ্দিনের ২টি, আসিফ মেডিকেল, কাশেম মুদি, রাসেলে কীটনাশক, আল-আমিন মেডিকেল, রাসেল গার্মেন্টস, রেস্টুরেন্ট ও সেলুনসহ ১৭টি দোকান এবং আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ও ইউপি সদস্যের ব্যক্তিগত অফিস কুপিয়ে তছনছ করে হামলাকারীরা।
রাসেল এবং মিজানসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, গভীর রাতে আবুল হাসান রিমন ও জাকির হোসেনের সমর্থকরা পাল্টাপাল্টি হামলা ও লুটপাট চালায়। একটি দোকান ও ৩টি ভ্যান এবং একটি সাইকেলের দোকানের মালামালে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তখন দোকানপাট সব বন্ধ ছিল। এ সুযোগে হামলাকারীরা লুটপাটও চালায়। একই সময় পার্শ্ববর্তী কাশ্মীর বাজারেও ৮টি দোকান ও দুটি নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর করা হয়।
সানাউল্যাহ নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, তিনি মার্কেটের ৮টি দোকান ভাড়া দেন। হামলাকারীরা ওইসব দোকানে ভাঙচুর চালিয়েছে। একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় ও ২টি মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেয়।
ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল হাসান রিমন (চশমা প্রতীক) জানান, এই ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার থেকে। তালা প্রতীকের আমার প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থী জাকির হোসেন তার নির্ধারিত স্থানে না গিয়ে মাদরাসা বাজারে মিছিল করে। এ সময় ওই মিছিল থেকে আমার নির্বাচনী অফিসে অবস্থান করা লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয়। নিক্ষেপ করা হয় বোমাও। এতে আহত হয় আমার দুই কর্মী। এরপর শুক্রবার রাতে লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ২০-২৫ জন হেলমেট পরা বাহিনী আমার কর্মীদের ওপর হামলা চালায় এবং মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এরপর মধ্যরাতে আবারো কাশ্মীর বাজার এবং মাদরাসা বাজারে আমার নির্বাচনী কার্যালয়ে অগ্নি সংযোগ করে তালা প্রতীকের লোকজন।  
অভিযোগ অস্বীকার করে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জাকির হোসেন (তালা প্রতীক) বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে আমার ওপর বোমা নিক্ষেপ করা হয়। কর্মীদের ওপরও হামলা চালানো হয়। শুক্রবার রাতেও চশমা প্রতীকের লোকজন আমার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে। হামলা চালিয়েছে আমার কর্মীদের ওপরও।
এ বিষয়ে লালমোহন থানার ওসি এসএম মাহবুব উল আলম জানান, এই ঘটনায় থানায় দ্রæত বিচার আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার দায়ে এক ইউপি সদস্যসহ মোট দুইজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।