অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বুধবার, ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৭ই পৌষ ১৪৩২


নাব্য সংকট ও ডুবোচরের কারনে ভোলা - লক্ষীপুর নৌরুটে ফেরী চলাচলে ব্যাহত


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৭ই এপ্রিল ২০২৪ বিকাল ০৩:৫৬

remove_red_eye

২০০

বিপাকে যানবাহনের চালক ও তরমুজ ব্যবসায়ীরা
 
মলয় দে : নাব্য সংকট ও ডুবোচরের কারনে ভোলা-লক্ষীপুর নৌ রুটে ফেরী চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ভোগান্তিতে পরেছে পণ্যবাহী যান চালক ও তরমুজ ব্যবসায়ীরা।দ্বীপ জেলা ভোলায় ভোলা- লক্ষীপুর নৌরুট টি  সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে বিবেচনা করা হয়।এই রুটে দিয়ে প্রতিদিন শতশত যানবাহন যাতায়াত করে।ভোলার মেঘনা নদীতে বিশাল ডুবো চর জেগে ওঠায় ফেরী পারাপারে দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি। ডুবো চরের কারনে ২০  কিলোমিটারের এই নৌ পথ ৩৫ কিলোমিটারে ঘুরে আসতে হচ্ছে ভোলার  ইলিশা - লক্ষীপুর মজু চৌধুরীর ঘাটের ফেরীগুলোকে।আবার মেঘনা নদী থেকে মজু চৌধুরীর ঘাটে ঢুকতে চর রমনীর প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে তীব্র নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে।সেই চ্যানেলে  ফেরী একবার আটকে গেলে জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৩ থেকে ৪ ঘন্টা।এতে সময় বেশী লাগায় ইলিশা ও মজু চৌধুরীর ঘাটে যানবাহনের লম্বা লাইনের সৃষ্টি হয়। ভারী যানবাহনগুলোকে ফেরী পারাপারে অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়।এমন সমস্যার কারনে ট্রাক বোঝাই কাঁচা মাল ও তরমুজের ব্যপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছেন ট্রাকের চালক ও ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে ট্রাক ড্রাইভার শাহ আলম বলেন,ভোলা থেকে তরমুজ নিয়ে ভৈরবের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিন। কিন্তু ইলিশা ফেরীঘাটে যানবাহনের এতো চাপ ট্রাকে বোঝাই করা তরমুজগুলো নিয়ে কবে যেতে পারবে তা নিয়ে খুব চিন্তিত।অন্যদিকে এ কাঁচা মাল বেশীদিন থাকলে পচনধরার ভয় তো আছেই।
তিনি আরো বলেন, এ তরমুজগুলো যদি সময়মতো যথাস্থানে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে হয়তো ট্রাকের ভাড়াও পাওয়া যাবে না। 
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার এক তরমুজ ব্যবসায়ীর মোঃ ফারুখের সাথে। তরমুজ নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবেন বিক্রি করতে।তিনি জানান,এ ঘাটে গতকাল রাতে এসেছি।ফেরীতে উঠার দীর্ঘ লাইনের কারনে অপেক্ষা করছি।অন্যদিকে ট্রাকে থাকা তরমুজ থেকে পানি বের হচ্ছে।এখন যদি দ্রুত এ মালামালগুলো নিয়ে যেতে না পারি তাহলে লোকসান ছাড়া আর কিছুই হবে না।
কথা হয় আরেক তরমুজ ব্যবসায়ী মোঃ ঝিলনের সাথে তিনি জানান,এ ফেরী পারাপারে তাদের খুব কষ্ট হয়।দীর্ঘ সময় অপেক্ষা তো করতে হয়ই।তার উপর এখানে থাকা খাওয়ায় নিয়েও অনেক ঝামেলা হয়।এখানে নেই কোনো  টয়লেট, গোসলখানার ব্যবস্থা।সব মিলিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটছে বলে জানান তিনি।
ট্রাক ড্রাইভার আকবর জানান,ইলিশা ঘাট থেকে ফেরী ছেড়ে যাওয়ার ৭-৮ ঘন্টা পর লক্ষীপুর মজু চৌধুরীর ঘাট থেকে ফেরী এ ঘাটে আসে।মেঘনা নদীতে ডুবোচরে আটকে গেলে এর সময় আরো বেড়ে যায়।এর কারনে এখানে শতশত যানবাহন জমে আছে।গাড়িতে তরমুজ ও পচন ধরতে শুরু করেছে।কিভাবে পারাপার হবো এ নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।
এদিকে এমন সমস্যার কারনে ইলিশা ফেরীঘাটে ২-৩ দিন অপেক্ষা করতে হয় যানবাহনের চালক ও অন্যান্য স্টাফদের। গাড়ি পার্কিংয়ের নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় প্রধান সড়কের পাশে গাড়ি পার্কিং করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এছাড়াও টয়লেটের ব্যবস্থা না থাকায় চরম বিপাকে পড়তে হয় তাদের।এ সমস্যা গুলো সমাধানের জোর দাবি জানান এ রুটে চলাচলকারী চালকরা।
অন্যদিকে বিআইডব্লিউটিসির মেরিন অফিসার মোঃ আলআমিন জানান,মেঘনার ডুবোচরের কারনে ২০ কিলোমিটারের পথ এখন ৩৫ কিলোমিটার হয়েছে।তাই এ ঘাটে তীব্র যানযটের সৃষ্টি হয়েছে।ইদের আগে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে জানান তিনি।
ভোলা-লক্ষীপুর এই রুটে ৫টি ফেরীতে প্রায় ২০০ যানবাহন চলাচল করতো।বর্তমানে  ৬টি ফেরী চলাচল করলেও ডুবোচর ও নাব্য সংকটের কারনে  প্রতিদিন যানবাহন চলাচলের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে।